ঢাকা, সোমবার   ২৯ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১৬ ১৪৩১

বিনা টিকিটে ‘মেট্রোরেলে’ চড়ে পূজা মণ্ডপ পরিদর্শনে দর্শনার্থীরা

নিউজ ডেস্ক

প্রকাশিত: ১৩:১৯, ২২ অক্টোবর ২০২৩  

বিনা টিকিটে ‘মেট্রোরেলে’ চড়ে পূজা মণ্ডপ পরিদর্শনে দর্শনার্থীরা

বিনা টিকিটে ‘মেট্রোরেলে’ চড়ে পূজা মণ্ডপ পরিদর্শনে দর্শনার্থীরা

বিনা টিকিটে পদ্মা সেতুর ওপর তৈরি মেট্রোরেলে চড়ে পার হয়ে প্রবেশ করতে হবে পূজা মণ্ডপে। প্রথমে বিষয়টি শুনতে আশ্চর্য মনে হলেও ব্যতিক্রমী এই আয়োজন করেছে, সাতক্ষীরার আশাশুনি উপজেলার মহেশ্বরকাটি পূজা মণ্ডপ কমিটি। ব্যতিক্রমী এমন আয়োজনে জেলার বিভিন্ন স্থান থেকে দর্শনার্থীরা আসছেন এই পূজা মণ্ডপ প্রদর্শনে। দর্শনার্থীরা এমন মনোমুগ্ধকর আয়োজন দেখে রীতিমতো সন্তুষ্টি প্রকাশ করছেন। সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সর্ববৃহৎ এই উৎসবে সরকারের উন্নয়নচিত্র প্রদর্শন করে রীতিমতো আলোচনায় এসেছেন সংশ্লিষ্টরা।

জানা যায়, টানা দুই মাস ৫০ জন শ্রমিক একনাগাড়ে পরিশ্রম করে হিমখালী নদীর ওপর তৈরি করেছেন মেট্রোরেলের আদলে এই প্রতিকৃতি। সরকারের উন্নয়নের এমন প্রতিকৃতি দেখে প্রশংসা করছেন দর্শনার্থীসহ স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা।

এদিকে, শুক্রবার (২০ অক্টোবর) থেকে শুরু হয়েছে দূর্গাপূজার আনুষ্ঠানিকতা। বুধবার (২৫ অক্টোবর) প্রতিমা বিসর্জনের মধ্য দিয়ে শেষ হবে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের বৃহৎ এ ধর্মীয় উৎসব।মহেশ্বরকাটি পূজা উদযাপন পরিষদের সদস্য সুমিত সরকার বলেন, সরকারের উন্নয়ন কর্মকাণ্ড তুলে ধরতে প্রতিবছরই আমাদের ব্যতিক্রম আয়োজন থাকে। গত বছর এখানে পদ্মা সেতু নকশা সম্বলিত সেতু তৈরি করা হয়েছিল। এ বছর হিমখালী নদীর ওপর মেট্রোরেলের নকশা দিয়ে তৈরি করা হয়েছে আকর্ষণীয় রেললাইন।

তিনি বলেন, এটা দেখতে অন্যান্য বছরের তুলনায় বেশি দর্শনার্থীরা ভিড় করছেন। প্রতিবার এখানে সরকারের বিভিন্ন উন্নয়ন কর্মকাণ্ড প্রদর্শনের মাধ্যমে একদিকে যেমন প্রচার করা হয়, একইসঙ্গে সবার নজর কাড়ে এ পূজা মণ্ডপ।

জয়ন্ত শীল নামে এক দর্শনার্থী বলেন, মেট্রোরেল ঢাকাতে রয়েছে, তবে গ্রামগঞ্জে নেই। হিমখালী নদীর ওপর পূজা মণ্ডপ কমিটি হুবহু দেখতে মেট্রোরেলের মত রেলসংযোগ ও মেট্রোরেল তৈরি করেছে। এখানে কোনো প্রকার টিকিট ছাড়াই মেট্রোরেলে প্রবেশ করে সরাসরি পূজা মণ্ডপ পরিদর্শন করার সুযোগ রয়েছে। বিষয়টি সত্যি আকর্ষণীয় ও মনোমুগ্ধকর। তাই পরিবারকে সঙ্গে নিয়ে এখানে ঘুরতে এসেছি।

মহেশ্বরকাটি পূজা উদযাপন পরিষদের ক্যাশিয়ার পুলিন মন্ডল বলেন, আমাদের দর্শনার্থীদের প্রতি বছর আমরা নতুন কিছু দেওয়ার চেষ্টা করি। এরই ধারাবাহিকতায় এবার পদ্মা সেতুর ওপরে মেট্রোরেলের সেতু তৈরি করা হয়েছে। পূজা শুরু হওয়ার আগেই বিভিন্ন জেলা থেকে এই সেতু দেখতে বিভিন্ন দর্শনার্থী আসছে। আর দর্শনার্থীদের আগমন দেখে আমাদের কষ্ট সার্থক হয়েছে বলে মনে করছি।

মহেশ্বরকাঠী পূজা উদযাপন কমিটির সভাপতি অনাঙ্গ মন্ডল বলেন, প্রতি বছর আমরা এখানে ভিন্নধর্মী আয়োজন করে থাকি। সরকার দেশের জন্য নানাবিধ উন্নয়ন কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছে। মেট্রোরেল হলো দেশের উন্নয়নের অন্যতম একটি চিত্র, আর সেই চিত্রকে জনগণের কাছে আরও সুন্দরভাবে প্রতিস্থাপন করার জন্যই আমাদের এবারের আয়োজন।

এর আগে, সাতক্ষীরা জেলা পূজা উদযাপন কমিটির সাধারণ সম্পাদক বিশ্বনাথ ঘোষ বলেন, চলতি বছর সাতক্ষীরা জেলায় সাতটি উপজেলায় ৬০৬টি পূজা মণ্ডপে দুর্গাপূজা উদযাপনের আয়োজন করা হয়েছে। গত বছর পূজা মণ্ডপের সংখ্যা ছিল ৫৯৯টি। গত বছরের তুলনায় এ বছর ৭টি পূজা মণ্ডপের সংখ্যা বেড়েছে।

তিনি বলেন, প্রতিবছর জেলাতে বাঁশ, বেত ও পাটকাঠিসহ নানা জিনিস দিয়ে আকর্ষণীয় প্রতিমা তৈরি করা হয়। তবে এবার আশাশুনিতে মেট্রোরেলের আদলে তৈরি হয়েছে রেল লাইন ও ট্রেন। আর কলারোয়ার মুরারিকাটি পাল পাড়ায় তৈরি হয়েছে ১০০ কেজি চিনিগুড়া ধান দিয়ে প্রতিমা। প্রতিবছর জেলাতে কয়েক জায়গায় এমন আকর্ষণীয় পূজা মণ্ডপ তৈরি করা হয়।

সাতক্ষীরা পুলিশ সুপার কাজী মনিরুজ্জামান বলেন, জেলার সবগুলো পূজা মণ্ডপ সিসি ক্যামেরার আওতাভুক্ত করা হয়েছে। একইসঙ্গে সেখানে স্বেচ্ছাসেবী ও আনসার ব্যাটালিয়ন দায়িত্বে রয়েছে। পূজা মণ্ডপে প্রতিটা স্বেচ্ছাসেবীর জন্য রেজিস্টার্ড সংযুক্ত করা হয়েছে। দুর্গা উৎসব শেষ না হওয়া  পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টা সেখানে প্রশাসনের নজরে থাকবে জেলার সব মণ্ডপগুলোতে। সার্বক্ষণিকভাবে সেখানে আনসার ও গ্রাম পুলিশসহ পুলিশের একাধিক দলের টহল অব্যাহত রয়েছে।

আরও পড়ুন
সারাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত
সর্বশেষ
জনপ্রিয়