ঢাকা, শনিবার   ২৭ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১৩ ১৪৩১

প্রেগন্যান্সির সময়ে কী ধরনের ব্যায়াম করবেন

লাইফস্টাইল ডেস্ক

প্রকাশিত: ০৯:৫৪, ১১ মার্চ ২০২৩  

ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

চিকিৎসকের প্রেসক্রিপশন ছাড়া গর্ভবতী মায়েদের এক্সারসাই‌‌জ় নির্ধারণ করা উচিত নয় বলে জানালেন ফিটনেস বিশেষজ্ঞ। তার কথায়, ‘গর্ভাবস্থায় কিছু এক্সারসাইজ় করা উচিত। আবার কিছু নয়। চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া প্রেগন্যান্সিতে কোনো রকম শারীরচর্চা করা উচিত নয়।’ কিন্তু তা বলে এই অবস্থায় যে হবু মায়েদের শুয়ে-বসেই কাটাতে হবে, এমনো নয়।  চিকিৎসকরা বলেন, কেন এই সময়ে এক্সারসাইজ় জরুরি। কারণগুলো জেনে নিন।

>> কার্ডিয়োভাসকুলার এক্সারসাইজ় গর্ভাবস্থায় সহায়ক। তা ওজন নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করবে। শরীরে রক্ত চলাচল বাড়বে, রক্তচাপও নিয়ন্ত্রণে থাকবে।

>> এনার্জি বাড়াতে, ঘুমের সাইকেল ঠিক রাখতে, স্ট্রেস-অ্যাংজ়াইটি-ডিপ্রেশন কমাতে জরুরি। হরমোনের ভারসাম্যও ঠিক রাখবে।

>> শরীর মজবুত করতে, ফ্লেক্সিবিলিটি বাড়াতেও ব্যায়াম করা দরকার। এ সময়ে যেহেতু ওজন বাড়ে, তাই ব্যালান্সিংয়ের সমস্যা হয়, এটাও শারীরচর্চায় ঠিক হয়ে যায়।

>> পেলভিক মাসলের জোর বাড়ানোটাও এ সময়ে জরুরি।

যে এক্সারসাইজ করবেন?

>>এই সময়ে হাঁটা হচ্ছে সব থেকে ভালো ব্যায়াম। নিজের শারীরিক ক্ষমতা বুঝে গতি-সময় নির্ধারণ করে রোজ হাঁটুন, তবে সমতলে হাঁটবেন। বাড়িতে এক্সারসাইজ় বাইক থাকলে তাতে প্যাডল করতে পারেন বা ক্রস ট্রেনারও করা যায়।

>>সুইমিংয়েও উপকার হয়। বাড়ির কাছাকাছি অ্যাকোয়া অ্যারোবিক ক্লাস থাকলে, সেখানে যেতে পারেন। হালকা ওজন নিয়ে প্রশিক্ষকের কাছে কোর এক্সারসাইজ করতে পারেন।

>>প্রেগন্যান্সি পিরিয়ডে কিছু বিশেষ ধরনের যোগব্যায়াম এবং পিলাটিস করলে ভালো উপকার পাওয়া যায়। তবে পেট যখন ক্রমশ বড় হতে থাকবে তখন যোগাভ্যাসের ক্ষেত্রে বাড়তি নজর দিতে হবে। সব ধরনের যোগব্যায়াম করা যাবে না।

>> পেলভিক মাসলের জোর বাড়ানোর এক্সারসাইজ় করাও উচিত। সন্তান জন্মানোর পরে পেটের নিচের অংশ থলথলে হয়ে যায়। আগে থেকে এ সংক্রান্ত ব্যায়ামগুলো করলে ভালো। নর্মাল ডেলিভারিতেও তা উপকারী। অনেকের গর্ভাবস্থায় টয়লেট চেপে রাখতে সমস্যা হয়। পেলভিক মাসলের এক্সারসাইজ় এই সমস্যাগুলোর সমাধান করে দেয়।

এই সময়ের জন্য চারটি বিশেষ ব্যায়ামের কথা উল্লেখ করেন বিশেষজ্ঞরা-প্লাঙ্ক, সাইড প্লাঙ্ক, ব্রিজ এবং বার্ড ডগ এক্সারসাইজ়। প্লাঙ্ক ও সাইড প্লাঙ্কের সময়ে শরীরের ভারসাম্যের দিকে খেয়াল রাখবেন। প্রথমটি ১০-২০ সেকেন্ড করে দুইবার। দ্বিতীয়টি চার-পাঁচ বার করতে পারেন। ব্রিজের সময়ে মেঝেতে সোজা হয়ে শুয়ে, পা মুড়ে পেটের দিকে টেনে কোমর উঁচুতে তুলে ধরুন। ২০ সেকেন্ড ধরে রেখে, নামিয়ে নিন। এভাবে চার বার করুন। পেলভিক মাসলের জোর বাড়ানোর জন্য ব্রিজ ভালো ব্যায়াম। বার্ড ডগ এক্সারসাইজ় করার সময়ে হামাগুড়ি পজিশন নিন। ডান হাত সামনের দিকে আর বাম পা পেছন দিকে সোজা করে দিন। এটা অল্টারনেট করে মোট দশ বার করুন।

যে এক্সারসাইজগুলো করবেন না

>> প্রেগন্যান্সি পিরিয়ডে শীর্ষাসন করা উচিত নয়। 

নিয়মিত হাঁটা আর পেলভিক মাসলের ব্যায়ামগুলোই যথেষ্ট। দৌড়নো, জগিং, লাফানো, সাইক্লিং, স্টেপ এরোবিক্স, ভারী ওজন তুলে ব্যায়াম করায় নিষেধাজ্ঞা আছে।

ব্যায়ামের সময়ে শরীর খারাপ লাগলে, করবেন না। নিঃশ্বাসের কষ্ট, বুকে ব্যথা, পেশিতে টান বা পেটের কোনো অংশে যন্ত্রণা হচ্ছে কিনা খেয়াল রাখুন। গর্ভাবস্থায় সনা বা স্টিম বাথ না নেয়ার পরামর্শ দেন চিকিৎসকেরা। একনাগাড়ে ৩০ মিনিটের বেশি ব্যায়াম করবেন না। সপ্তাহে পাঁচদিন ব্যায়ামই যথেষ্ট। চিৎ হয়ে ১০ মিনিটের বেশি শুয়ে থাকবেন না। এক্সারসাইজের মাঝে অল্প পানি খাবেন। কার্বোহাইড্রেট খাওয়ার অন্তত ৩০ মিনিট পরে ব্যায়াম করবেন।

চিকিৎসকের পরামর্শ এবং নিজের শারীরিক অবস্থা বুঝেই সবটা করবেন। যারা আগে একেবারেই শারীরচর্চা করতেন না, তারা ধীরে ধীরে ব্যায়ামের সময় বাড়াবেন।

সর্বশেষ
জনপ্রিয়