ঢাকা, সোমবার   ০৬ মে ২০২৪ ||  বৈশাখ ২৩ ১৪৩১

কিশোরগঞ্জ জেলার ভৈরবে বর্ষবরণ উদযাপিত

নিউজ ডেস্ক

প্রকাশিত: ১১:১০, ১৫ এপ্রিল ২০২৪  

কিশোরগঞ্জ জেলার ভৈরবে বর্ষবরণ উদযাপিত

কিশোরগঞ্জ জেলার ভৈরবে বর্ষবরণ উদযাপিত

উৎসব মুখর পরিবেশে নতুন বাংলা বর্ষের প্রথম দিনের ভোরের আলো রাঙিয়ে প্রত্যাশা আর সম্ভাবনাকে সামনে রেখে ভৈরব পালিত হয়েছে বর্ষবরণ। শহর জুড়ে ছিল বর্ষবরণের নানা আয়োজন বাংলা বর্ষপঞ্জিতে যুক্ত হয়েছে নতুন বাংলা বর্ষ ১৪৩১।

গতকাল রোববার (১৪ এপ্রিল) আনন্দঘন পরিবেশে ভৈরব উপজেলা পরিষদ কড়ই তলায় অনুভবে অনুক্ষণে চত্বরে এক র‍্যালির মাধ্যমে দিনটির শুভ সূচনা করা হয়। এসময় উপস্থিত ছিলেন, উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) রেদওয়ান আহমেদ রাফি, পৌর মেয়র আলহাজ্ব ইফতেখার হোসেন বেনু, ভৈরব থানা পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) সাহিদুল ইসলাম, উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান আলহাজ্ব আল মামুন, মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান মনোয়ারা বেগম, উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সাবেক ডেপুটি কমান্ডার ফরহাদ আহমেদ, ভৈরব রিপোর্টার্স ক্লাব ও ইউনিটির সভাপতি মো. তাজুল ইসলাম তাজ ভৈরবী, সাধারণ সম্পাদক ও দৈনিক পূর্বকন্ঠের নির্বাহী সম্পাদক মো. আলাল উদিন প্রমুখ।
র‍্যালি শেষে অতিথিবৃন্দ উপজেলা পরিষদ কনফারেন্স রুমে ইলিশ পান্তা খেয়ে পান্তা উৎসব উদযাপন করেন। পরে উপজেলা পরিষদ কড়ই তলায় অনুভবে অনুক্ষণে চত্বরে একটি সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে যোগ দেন অতিথিরা। এসময় পহেলা বৈশাখ উপলক্ষে আয়োজিত বিভিন্ন প্রতিযোগিতার বিজয়ীদের মাঝে পুরস্কার বিতরণ করেন অতিথিবৃন্দ। সকাল ১০টায় উপজেলা পরিষদ চত্বর কড়ইতলা অনুভবে অনুক্ষণ মঞ্চে বর্ষবরণ অনুষ্ঠানে ভৈরব শিল্পকলা পরিষদ ও উপজেলা শিল্পকলা একাডেমি যৌথভাবে সংগীত পরিবেশন করেন।
এছাড়া ওস্তাদ ইসরাইল খান সংগীত নিকেতনের বর্ষবরণ অনুষ্ঠান। উদ্বোধন করেন ভৈরবের কৃতিসন্তান প্রধান বিচারপতি পদকে ভূষিত ঢাকা জেলার সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ মো. হেলাল উদ্দিন।
এদিকে ভৈরব বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র সংসদের আয়োজনে নব আনন্দে বরণ করে নেয় নতুন বছরকে। কল্যাণ ও নতুন জীবনের প্রতীক হলো নববর্ষ। অতীতের ভুলত্রুটি ও ব্যর্থতার গ্লানি ভুলে নতুন করে সুখ-শান্তি ও সমৃদ্ধি কামনায় ব্যপক আয়োজনে উদযাপন করে এবারের নববর্ষ। দীর্ঘ পাচঁ বছর পর বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র সংসদ ভৈরব মেঘনার পাড় ত্রিবেণী সেতু এলাকাতে আয়োজন করে বৈশাখী মেলা। দিবসটি উপলক্ষে সকাল ৮টায় বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র সংসদ ভৈরব এর কার্যালয় নিউ-মার্কেট এলাকা থেকে একটি বর্ণাঢ্য র‌্যালি বের করে মেঘনা নদীর পাড় মেলা মঞ্চে গিয়ে শেষ করে। এসময় উপস্থিত ছিলেন বাংলদেশ সুপ্রিমকোর্টের হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি জাহাঙ্গীর হোসেন,  পৌর মেয়র আলহাজ্ব ইফতেখার হোসেন বেনু, জেলা পরিষদ প্যানেল চেয়ারম্যান জাকির হোসেন কাজল, বিশ্ব বিদ্যালয় ছাত্র সংসদ সভাপতি আহনাফ তাহমীদ দীপ্র ও সাধারণ সম্পাদক আফরা জামান প্রপা প্রমুখ।
এদিকে পহেলা বৈশাখ উপলক্ষে প্রতি বছরের ন্যায় এবারও লাখো মানুষের ঢল জমেছে ভৈরবের মেঘনা নদীর ত্রিবেণী সেতু এলাকায়। বাংলা নববর্ষ বরণের আনন্দকে ভাগাভাগি করে নিতে নরসিংদী, ব্রাহ্মনবাড়িয়া, কিশোরগঞ্জসহ দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা শিশু-কিশোরসহ সব বয়সী নারী-পুরুষের পদচারণায় মুখরিত হয়ে উঠে ভৈরবের একমাত্র বিনোদন কেন্দ্র মেঘনার পাড় এলাকাটি। মেলা মঞ্চে সকাল নয়টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত সংগীত, আবৃত্তি, নাচ, বাউল গান ও পুতুল নাচ প্রদর্শিত হয়। শিশুদের বিনোদনের জন্য ছিল চরকি, ঘোড়া গাড়ি, মিনি ট্রেন ও নাগরদোলা, ওয়াটার-রাইডসহ নানান রকম ব্যবস্থা। এই দিনে বাড়তি রোজগারের আশায় মাটির তৈরি পুতুল, পাতিল, কড়াই, চুল্লি, হাতি, ঘোড়া, গরু, হাঁস, মুরগিসহ বিভিন্ন সামগ্রীর পসরা সাজিয়ে বসবে বিক্রেতারা। এ ছাড়া বিভিন্ন ধানের খৈ, মিঠাই খৈ, মণ্ডামিঠাই ও নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যসামগ্রী এবং বাচ্চাদের আকর্ষণীয় খেলনার প্রায় কয়েক শতাধিক স্টল নিয়ে দোকানিরা। আর এসব দোকানে উপচেপড়া ভিড় জমে মেলায় আগত দর্শনার্থীদের।
সকাল থেকে বিকাল পাঁচটা পর্যন্ত চলমান এই মেলায় দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা দর্শনার্থীদের নিরাপত্তা রক্ষার্থে বিপুল সংখ্যক র‌্যাব-পুলিশের পাশাপাশি সাদা পোশাকে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীরা নিয়োজিত ছিলেন।

সারাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত
সর্বশেষ
জনপ্রিয়