ঢাকা, শনিবার   ২৭ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১৪ ১৪৩১

উপন্যাসঃ শোকার্ত শোভাযাত্রা

মোহাম্মদ আসাদুল্লাহ

প্রকাশিত: ১৪:৪৯, ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২২  

ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

শোভাযাত্রার গরুর গাড়িগুলো ক্ষুদ্রাকৃতির। সেগুলোতে পরিচারিকাদের বসার জন্য কোনো আসন নেই। কাজেই তারা পায়ে হেঁটে হেঁটে গাড়িগুলোকে অনুসরণ করছে। আঠারোটি এতিম বালিকা। সবাই উজ্জ্বল পোশাক পরে বাক্স-প্যাটরা বহন করছে।

কয়েকশ’ ব্রিটিশ সৈনিক গরুর গাড়িগুলো ও বালিকাদের পাশ দিয়ে হাঁটছে। সবাই সশস্ত্র। যেকোনো ধরনের বিপদকে মোকাবিলা করার জন্য তারা সদাপ্রস্তুত।

মান্দালয়ের রাজা ও রাণীকে নির্বাসনে নেয়া হচ্ছে। এই সময়ে মান্দালয়ের জনগণ নিশ্চল নিশ্চুপ হয়ে বসে থাকবে, এটা তারা কখনই কামনা করে না। পরিকল্পিত দাঙ্গা ও বিক্ষোভের কথা বলাবলি হচ্ছে। এমনকি রাজা ও রাণীকে মুক্ত করার জন্যে বেপরোয়া আক্রমণ হতে পারে বলেও শোনা যাচ্ছে।

ব্রিটিশ হাইকমান্ড এই সময়টিকেই তাদের অপারেশনের জন্যে সবচেয়ে বিপদজনক বলে চিহ্নিত করেছে। কারণ, এই শোভাযাত্রায় অংশগ্রহণকারী সৈনিকদের অনেকেই ভারতের সেনাবাহিনীতে কর্মরত।

উল্লেখ্য, সাম্প্রতিক অতীতে সংঘটিত অন্য একটি ঘটনা তাদের মন থেকে এখনো মুছে যায়নি।

১৮৫৭ সাল। সিপাহি বিপ্লবের চূড়ান্ত দিনগুলোর একটি। বিদ্রোহীরা পরাস্ত হয়েছে। মেজর হাডসন নামে এক ব্রিটিশ অফিসার মুঘলদের শেষ সম্রাট বাহাদুর শাহ জাফরকে গ্রেফতার করেছেন। দিল্লির প্রান্তসীমা হতে। অন্ধ ও অসুস্থ সম্রাট পূর্বপুরুষ হুমায়ুনের সমাধিতে আশ্রয় নিয়েছিলেন দুই পুত্রকে সঙ্গে নিয়ে।

গ্রেফতারের পর যখন তাদের শহরের ভেতর ফিরিয়ে আনা হচ্ছিল, তখন রাস্তার পাশে প্রচুর শোকার্ত জনগণ ভিড় করে দাঁড়িয়ে ছিল। তারা ক্রমশ বিশৃঙ্খল ও আক্রমণাত্মক রূপ ধারণ করছিল। এক পর্যায়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাওয়ার উপক্রম হলে দাঙ্গাকারী জনগণকে নিয়ন্ত্রণে আনার জন্য মেজর রাজপুত্রদ্বয়কে হত্যা করার আদেশ দিলেন। তাদের ভিড়ের সামনে টেনে আনা হলো। এরপর পূর্ণ জনসমক্ষে তাদের মাথার মগজ উড়িয়ে দেওয়া হলো।

সর্বশেষ
জনপ্রিয়