ঢাকা, সোমবার   ২৯ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১৬ ১৪৩১

অনাবাদি জমিতে ফলছে ধান

নিউজ ডেস্ক

প্রকাশিত: ১৫:৪৬, ১৫ জানুয়ারি ২০২৪  

অনাবাদি জমিতে ফলছে ধান

অনাবাদি জমিতে ফলছে ধান

জেলার ষাটগম্বুজ ইউনিয়নের ৭ হাজার একর আয়তনের শসীখালী বিলে এখন বাম্পার ফলন হচ্ছে। লবণ পানির কারণে বছরের কিছু সময় বাগদা চাষ হলেও এ বিলের অধিকাংশ জমি এক সময় অনাবাদি থাকত। কিন্তু স্থানীয় জমির মালিক, বর্গা চাষি, জনপ্রতিনিধি ও কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের সম্মিলিত উদ্যোগে লবণপানি প্রবেশ বন্ধ করায় ধান চাষের পাশাপাশি তরমুজ, পেঁপে, লাউ, মুলা, কুমড়াসহ বিভিন্ন সবজি ও ফল উৎপাদন করছেন কৃষকরা।  কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের দাবি, চাষের আওতায় আসা ৫ হাজার একর জমিতে প্রায় ৭ হাজার টন ধান উৎপন্ন হবে। পাশাপাশি ঘেরের পাড়ে তরমুজ, শিম, শসা, মুলা, কফিসহ বিভিন্ন সবজির বাম্পার ফলন হয়েছে। ফলে লাভবান হচ্ছেন ৫ শতাধিক কৃষক ও জমির মালিকরা।
স্থানীয় কৃষক মো. সাইদুল মালঙ্গী বলেন, লবণপানির জন্য আমাদের এই শসীখালীর বিলে এক সময় কিছুই করতে পারতাম না। ষাটগম্বুজ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান, স্থানীয় মেম্বার, জমির মালিক ও কৃষকরা মিলে লবণপানি ঢোকার পথে বাঁধ দিয়েছি। এখানে আর লবণপানি প্রবেশ করে না। এখন ধান, পেঁয়াজ, রসুন, তরমুজ সবকিছুর খুব ভালো ফলন হচ্ছে।
বিলে ধান চাষের খরচ ও উৎপাদন বিষয়ে জানতে চাইলে ইব্রাহিম শেখ নামে এক চাষি বলেন, এই বিলে বেশিরভাগ জমিতেই মাছ চাষ হয়। ঘেরের মধ্যে ধান করতে ব্যয় অনেকটা কম। ৫২ শতকের প্রতি বিঘা জমিতে আমন ধান চাষে ৪ থেকে ৮ হাজার টাকা পর্যন্ত ব্যয় হয়। এতে ২৫ থেকে ৩০-৩৫ মণ ধান পাওয়া যায়। সঙ্গে রয়েছে গরুর খাবার। সব মিলিয়ে প্রতি বিঘা জমিতে অন্তত ১০ থেকে ২০ হাজার টাকা লাভ হয় আমাদের। সেইসঙ্গে ঘেরের পাড়ে তরমুজ, পেঁপে, লাউ, মুলা, কুমড়াসহ বিভিন্ন সবজি ও ফল উৎপাদন করে অতিরিক্ত আয় হয়।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের ষাটগম্বুজ ব্লকের উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা জাকির হোসাইন খান বলেন, লবণপানির প্রবেশ বন্ধ করায় এবার শসীখালীর বিলে প্রায় ৫ হাজার একর জমিতে আমন ধান চাষ হয়েছে। এতে প্রায় ৭ হাজার টন ধান উৎপাদন হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। কিছু কিছু চাষি ইতোমধ্যে ধান কাটা শুরু করেছে। ধানের পাশাপাশি সবজিসহ আইল ফসলও চাষ করছেন কৃষকরা। আমরা কৃষকদের পরামর্শও দিয়ে যাচ্ছি।
ষাটগম্বুজ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আক্তারুজ্জামান বাচ্চু বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে উপকূলীয় এলাকায় লবণাক্ততা বৃদ্ধি পেয়েছে। ফলে কৃষিজ উৎপাদন নানাভাবে ব্যাহত হচ্ছে। তবে স্থানীয় কৃষক ও জমির মালিকদের সঙ্গে নিয়ে আমরা চেষ্টা করেছি, যাতে লবণপানির প্রবেশ বন্ধ করা যায়। শসীখালীর বিলে আমরা সেটা করতে সক্ষম হয়েছি। ফলে এবার আমন ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। লবণাক্ততার কারণে যেসব বিল এখনো অনাবাদি রয়েছে সেসব বিলেও এ ধরনের পদ্ধতি অবলম্বন করলে কৃষিজ উৎপাদন বাড়বে বলে মনে করেন এই জনপ্রতিনিধি। 

সারাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত
সর্বশেষ
জনপ্রিয়