যশোরে প্রতিবিঘায় সবজি উৎপাদন ২৪,০০০ কেজি

যশোরের শার্শা উপজেলার কলেজছাত্র মন্জুরুল আহসান বিদেশি সবজি স্কোয়াস চাষ করে ব্যাপক সফলতা পেয়েছেন। কৃষি বিভাগের সহযোগিতায় শীতকালীন সবজির পাশাপাশি ২০ শতক জমিতে স্কোয়াস চাষ করে তিনি বেশ লাভবান । মন্জুরুল জানান, ১ বিঘা (৩৩ শতাংশ) জমি থেকে এক মৌসুমে ২২০০ টি সামার স্কোয়াশ গাছ লাগানো যায়। স্কোয়াসের একটি গাছে গড়ে ১২-১৫ কেজি ফলন হয়। এক বিঘা জমিতে প্রায় ২৪,০০০ কেজি ফলন পাওয়া যায়।

মন্জুরুল শার্শা উপজেলার শিকারপুর গ্রামের বাসিন্দা। সরকারি বীরশ্রেষ্ঠ নূর মোহাম্মদ ডিগ্রি কলেজের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র। মন্জুরুল কয়েক বছর ধরে আম, বরই, টমেটো, শসা, বাঁধা ও ফুলকপিসহ বিভিন্ন ধরনের সবজি ও ফল চাষ করে আসছিলেন। ইউটিউবে ভিডিও দেখে শার্শা উপজেলার কৃষি বিভাগের পরামর্শে স্কোয়াসের বীজ সংগ্রহ করেন। বাড়িতে বীজ বপন করেন মিষ্টিকুমড়া বা লাউয়ের মতো। পরে চারা গজানোর পর মালচিং পদ্ধতি ব্যবহার করে জমিতে রোপণ করা হয়।

প্রায় দেড় মাস পর ফল আসতে শুরু করে। বিদেশি স্কোয়াস গাছ একদম মিষ্টি কুমড়ার মতো। পাতা, ডগা, কাণ্ড দেখে বোঝার উপাই নেই যে, এটি মিষ্টি কুমড়া নাকি স্কোয়াস গাছ। বীজ রোপণের অল্প দিনের মধ্যেই গাছ বেড়ে ওঠে এবং রোপণের ৩৫ দিনের মধ্যেই গাছে ফুল আসে। পরাগায়নের ১০-১৫ দিনের মধ্যে ফল সংগ্রহ করতে হয়। বীজ লাগানো থেকে ফল তুলতে সময় লাগে দুই মাস। ফুল ও ফল দেখতে অনেকটা মিষ্টি কুমড়ার মতো। ৫৫-৬০ দিনের ভেতর স্কোয়াশ সবজির বাজারজাত করা যায়। হেক্টর প্রতি স্কোয়াশের গড় ফলন ৪৫-৫০ টন। জাত ভেদে সময় কম ও বেশি হতে পারে।

মন্জুরুল জানান, প্রতি বিঘা জমিতে স্কোয়াশ উৎপাদনের জন্য খরচ হয় ৯-১০ হাজার টাকা। ১ বিঘা জমি থেকে লাভ হয় ৬০-৭০ হাজার টাকা। খরচ একটু বেশি হলেও একটি স্কোয়াস বাজারে ৪৫ থেকে ৬০ টাকায় বিক্রি হওয়ায় বেশ লাভ হয়েছে এবার। স্বল্প খরচে অধিক লাভ হওয়ায় আগামীতে আরও বেশি পরিমাণ জমিতে বিদেশি সবজি স্কোয়াস চাষ করবেন। শার্শা উপজেলা উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা পলাশ কিশোর ঘোষ বলেন, প্রথমবারের মতো শার্শার মাটিতে বিদেশি সবজি স্কোয়াস চাষ হয়েছে।

শার্শা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা দিপক সাহা বলেন, বাজারে ব্যাপক চাহিদা থাকায় কম খরচে অধিক লাভ হচ্ছে স্কোয়াস চাষে। স্কোয়াস সবজিতে অনেক পুষ্টিগুণ রয়েছে। অধিক লাভের আশায় আগামীতে এই এলাকায় অনেকেই স্কোয়াস চাষ করবে বলে আমরা আশবাদী।