ঢাকা, শনিবার   ২৭ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১৪ ১৪৩১

মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলে আশ্রয়ণ : ভাবিনি, এমন ঘরে থাকতে পারব

নিউজ ডেস্ক

প্রকাশিত: ১৫:২২, ৪ আগস্ট ২০২৩  

মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলে আশ্রয়ণ : ভাবিনি, এমন ঘরে থাকতে পারব

মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলে আশ্রয়ণ : ভাবিনি, এমন ঘরে থাকতে পারব

ক্ষুদ্র নৃ-জাতিগোষ্ঠীর সঞ্চিতা দেববর্মা। বিয়ের বছর তিনেক পরই স্বামী মারা যান। সংসার গুছিয়ে ওঠার আগেই তাকে হতে হয় কঠিন বাস্তবতার মুখোমুখি। ফলে লেবুবাগানে শ্রমিকের কাজ নেন। ওই বাগানেই একটি খুপরি ঘরে মাকে নিয়ে অনেক কষ্টে থাকতেন। ঝড়বৃষ্টি হলে সেখানে কষ্ট আরও বেড়ে যেত। সঞ্চিতা দেববর্মা বলেন, ‘কষ্টের মধ্যেও কত কিছুর স্বপ্ন দেখতাম। স্বপ্ন দেখতাম একটি পাকা ঘরের, একটু সুখের। প্রধানমন্ত্রীর আশ্রয়ণ প্রকল্প সেই স্বপ্ন পূরণ করেছে।’ মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গল উপজেলার জাম্বুরাছড়া আশ্রয়ণে তিনি পেয়েছেন ২ শতাংশ জমিসহ একটি পাকা ঘর। সেই ঘরে মাকে নিয়ে এখন সুখে আছেন। সঞ্চিতা দেববর্মার মতো ৭৯৮টি পরিবারের ঠাঁই হয়েছে শ্রীমঙ্গলের আটটি আশ্রয়ণ প্রকল্পে। এসব পরিবারে এখন বইছে সুখের হাওয়া।

জাম্বুরাছড়া আশ্রয়ণের আরেক বাসিন্দা উপেন্দ্র দেববর্মা বলেন, ‘আগে মাটির ঘরে খুব কষ্টে থাকতাম। বৃষ্টি হলে টিনের ছিদ্র দিয়ে ঘরে পানি পড়ত। ছিল না বিদ্যুৎ। এখন প্রধানমন্ত্রী নতুন পাকা ঘর দিয়েছেন। ঘরে বাথরুম, বিদ্যুৎ, পানি সাপ্লাই সবই আছে। আমি কোনো দিন ভাবিনি, এমন ঘরে থাকতে পারব।’

উপজেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, এ উপজেলায় ৯৬০টি গৃহহীন-ভূমিহীন পরিবার বাছাই করা হয়। এর মধ্যে প্রথম ধাপে ৩০০, দ্বিতীয় ধাপে ৩০০, তৃতীয় ধাপে ৫০ ও চতুর্থ ধাপে ১৪৮ পরিবারকে জমিসহ ঘর দেওয়া হয়েছে। পঞ্চম ধাপে আরও ১৬২টি ঘর নির্মাণের কাজ চলমান। এসব ঘর চলতি মাসেই বুঝিয়ে দেওয়া হবে। সরেজমিনে মহাজিরাবাদ, মাইজদিহি, রাধানগর, বিষামণি, ডলুছড়া, বেগুনবাড়ী, ভবানপুর ও উত্তরসুর আশ্রয়ণ-২ প্রকল্প ঘুরে দেখা যায়, প্রতিটি প্রকল্পে গভীর নলকূপ বসিয়ে এখানকার বাসিন্দাদের পানীয় জলের ব্যবস্থা করে দেওয়া হয়েছে। ঘরে ঘরে রয়েছে বিদ্যুৎ সংযোগ। রয়েছে যাতায়াতের পাকা রাস্তা। মাইজদিহি আশ্রয়ণে ৩০০ পরিবারের জন্য নির্মাণ করে দেওয়া হয়েছে মসজিদ। এখানে স্কুল ও মন্দির নির্মাণ করা হবে। বাচ্চাদের জন্য খেলাধুলার জায়গাও রয়েছে। রোপণ করা হয়েছে বিভিন্ন ফলের গাছ। আশ্রয়ণে মাথা গোঁজার ঠাঁই পাওয়া এসব পরিবার এখন কেউ সবজি চাষ করছে। কেউ পালন করছে গবাদি পশু। কেউ সেলাই মেশিনে কাপড় সেলাই করছে। কেউ কাপড় বুনছে তাঁতে। কেউ করছে বাঁশ-বেতের কাজ। মাইজদিহি আশ্রয়ণ প্রকল্পের সমীর আলী বলেন, ‘আগে সরকারি খাসজমিতে ঘর বানিয়ে থাকতাম। এখন নিজের জমিতে নিজের ঘরে থাকি। এখানে গরু পালন করে সংসার চালাই।’ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আলী রাজিব মাহমুদ মিঠুন বলেন, ‘আমরা আমাদের সবটুকু দিয়ে উপকারভোগীদের ভালো রাখতে চাই। প্রধানমন্ত্রী তাদের জমিসহ ঘর দিয়েছেন, আমরা তাদের বিভিন্ন প্রশিক্ষণ দিয়ে একটু একটু করে স্বাবলম্বী করে তুলছি।’

সারাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত
সর্বশেষ
জনপ্রিয়