খুলনায় প্রধানমন্ত্রীর জনসভা, উদ্বোধন করবেন ২২ প্রকল্প

আজ খুলনায় যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ওইদিন দুপুরে খুলনা সার্কিট হাউজ মাঠে আওয়ামী লীগের জনসভায় প্রধান অতিথির ভাষণ দেবেন তিনি। উদ্বোধন করবেন ২২টি উন্নয়ন প্রকল্প। সভাস্থল থেকে তিনি প্রকল্পগুলো উদ্বোধন করবেন। এছাড়া দুটি প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করবেন তিনি।

খুলনা জেলা প্রশাসন সূত্র জানায়, প্রধানমন্ত্রীর দফতরের পাঠানো প্রকল্পের তালিকায় ২২টি প্রকল্প রয়েছে। গণপূর্ত বিভাগের আটটি প্রকল্পের মধ্যে রয়েছে- নগরীর সাউথ সেন্ট্রাল রোডে ১৯৭১ : গণহত্যা-নির্যাতন আর্কাইভ ও জাদুঘরের ভবন, শামসুর রহমান রোডে সিভিল সার্জনের অফিস ভবন ও বাসভবন, পাইকগাছা উপজেলায় কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র, শিক্ষানবিশ প্রশিক্ষণ দপ্তর সংস্কার ও আধুনিকায়ন, বিএসটিআইর ১০ তলা আঞ্চলিক অফিসভবন, বিটাকের ১০ তলাবিশিষ্ট নারী হোস্টেল ভবন, পাইকগাছা উপজেলা সাব-রেজিস্ট্রি অফিস ভবনের (সিভিল, স্যানিটারি ও বৈদ্যুতিক) কাজ, দৌলতপুরে কৃষি প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটের চারতলা ছাত্র হোস্টেল।

সুন্দরবন পশ্চিম বন বিভাগের প্রকল্পের মধ্যে রয়েছে- সুন্দরবনে পরিবেশবান্ধব পর্যটন (ইকোট্যুরিজম) সুবিধা সম্প্রসারণ ও উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় নির্মিত শেখেরটেক ইকোট্যুরিজম কেন্দ্র।

শিক্ষা প্রকৌশল অধিদফতরের ১০টি প্রকল্প রয়েছে। এগুলো হলো- ডুমুরিয়া টেকনিক্যাল স্কুল অ্যান্ড কলেজের পঞ্চমতলা একাডেমিক কাম চারতলা প্রশাসনিক ও ওয়ার্কসপ ভবন, বয়রা মাধ্যমিক বিদ্যালয়, খুলনা কলেজিয়েট স্কুল, সরকারি এল বি কে ডিগ্রি মহিলা কলেজ, সরকারি বঙ্গবন্ধু কলেজ, চালনা বাজার সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, তালিমুল মিল্লাত রহমাতিয়া ফাজিল মাদরাসা, নজরুলনগর মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয় এবং আরআরএফ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রতিটিতে ছয়তলা একাডেমিক ভবন, আড়ংঘাটা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের চারতলা একাডেমিক ভবন।

স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতরের (এলজিইডি) প্রকল্পের মধ্যে রয়েছে- ডুমুরিয়া উপজেলার চরচরিয়া শিবনগর সড়কে ভদ্রা নদীর ওপর ৩১৫ দশমিক ৩০ মিটার দীর্ঘ পিসি গার্ডার সেতু।

খুলনা সিটি করপোরেশনের গুরুত্বপূর্ণ ও ক্ষতিগ্রস্ত রাস্তা উন্নয়ন ও পুনর্বাসন প্রকল্প এবং খুলনা শহরে জলাবদ্ধতা দূরীকরণে ড্রেনেজ ব্যবস্থার উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় খালিশপুর বিআইডিসি রোডে ড্রেন, ফুটপাত নির্মাণসহ রাস্তা প্রশস্তকরণ ও পুননির্মাণ কাজ।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের প্রকল্পের তালিকায় রয়েছে- নগরীর দৌলতপুরে অতিরিক্ত পরিচালকের ছয়তলা বিশিষ্ট নবনির্মিত অফিস ভবন। এ ছাড়া ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনযোগ্য প্রকল্পের তালিকায় দুটি রয়েছে। এগুলো হলো- খুলনা সিটি করপোরেশনের বর্জ্য ব্যবস্থাপনার উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় মাথাভাঙ্গা এলাকায় স্যানিটারি ল্যান্ডফিল নির্মাণ কাজ। শিক্ষা প্রকৌশল অধিদফতরের আওতাধীন দিঘলিয়া টেকনিক্যাল স্কুল অ্যান্ড কলেজের পাঁচতলা একাডেমিক কাম চারতলা প্রশাসনিক ও ওয়ার্কসপ ভবন নির্মাণকাজ।

এদিকে, সার্কিট হাউজ মাঠে পদ্মাসেতু ও নৌকার আদলে সভামঞ্চ তৈরির কাজ সম্পন্ন হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর আগমনকে কেন্দ্র করে সাজ সাজ রব উঠেছে খুলনা মহানগরীর প্রতিটি এলাকায়। নগরীর প্রতিটি সড়কে নির্মাণ করা হয়েছে দুই শতাধিক তোরণ। মোড়ে মোড়ে শোভা পাচ্ছে রং বেরঙের ব্যানার ফেস্টুন। প্রধানমন্ত্রী আগমন ঘিরে উচ্ছ্বসিত আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীসহ সাধারণ মানুষ।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জনসভা সফল করতে ব্যাপক প্রস্তুতি নিয়েছে প্রশাসন এবং স্থানীয় আওয়ামী লীগ। বর্তমান সরকারের উন্নয়ন কর্মকান্ড তুলে ধরে চলছে মাইকিং, পোস্টারিং, প্ল্যাকার্ড, বিলবোর্ড, তোরণ নির্মাণ, আলোকসজ্জা, প্রচার মিছিল। প্রধানমন্ত্রীর জনসভাকে কেন্দ্র করে গোটা খুলনা নগরী নিরাপত্তার চাদরে ঢেকে দেওয়ার প্রস্তুতি নিয়েছে খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশ (কেএমপি)।

মহানগর যুবলীগের সভাপতি সফিকুর রহমান পলাশ বলেন, প্রত্যাশার চেয়ে বেশি প্রধানমন্ত্রী খুলনায় উন্নয়ন করেছেন। বদলে যাওয়া খুলনার কারিগর বঙ্গবন্ধুকন্যাকে বরণ করতে প্রস্তুত আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী ও সাধারণ মানুষ। প্রধানমন্ত্রীর আগমণ ঘিরে সমগ্র খুলনাজুড়ে বিরাজ করছে উৎসবের আমেজ।

মহানগর আওয়ামী লীগ সভাপতি ও সিটি মেয়র তালুকদার আব্দুল খালেক বলেন, সমাবেশের দিন সার্কিট হাউজ মাঠে থাকবেন নারী কর্মীরা। পুরুষ নেতাকর্মীরা থাকবেন মাঠের চারপাশের সড়কগুলোতে। মাঠ ছাড়াও নগরীর কাস্টমস ঘাট থেকে শিববাড়ি মোড়, জেলখানা ঘাট, সদর থানার মোড়, হাদিস পার্ক ও হাজী মুহসীন রোডে মাইক দেওয়া হবে। শিববাড়ি মোড়সহ বেশ কয়েকটি স্থানে এলইডি মনিটরে দেখানো হবে প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ।

খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশ (কেএমপি) কমিশনার মোজাম্মেল হক বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার খুলনায় আগমন উপলক্ষে তৈরি করা হয়েছে কয়েক স্তরের নিরাপত্তা বলয়। জনসভাস্থলে পোশাকে এবং সাদা পোশাকে পুলিশ দায়িত্ব পালন করবে। সার্কিট হাউজ মাঠ ও আশপাশে সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপন করা হয়েছে।