ঢাকা, সোমবার   ০৬ মে ২০২৪ ||  বৈশাখ ২২ ১৪৩১

কিশোরগঞ্জের ৬ আসনে আওয়ামী লীগের এমপি হতে চান ৫৩ জন

নিউজ ডেস্ক

প্রকাশিত: ২১:২৪, ২৪ নভেম্বর ২০২৩  

কিশোরগঞ্জের ৬ আসনে আওয়ামী লীগের এমপি হতে চান ৫৩ জন

কিশোরগঞ্জের ৬ আসনে আওয়ামী লীগের এমপি হতে চান ৫৩ জন

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন আগামী ৭ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত হবে। এরই মধ্যে শুরু হয়েছে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হওয়ার দৌড়ঝাঁপ। কিশোরগঞ্জের ছয়টি আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন ফরম জমা দিয়েছেন ৫৩ জন। আগামীকাল শনিবার (২৫ নভেম্বর) আওয়ামী লীগের মনোনয়ন বোর্ডের সভায় প্রার্থী চূড়ান্ত করা হবে বলে জানা গেছে। 

কিশোরগঞ্জ-১ (সদর ও হোসেনপুর) আসনে মনোনয়ন প্রত্যাশীদের মধ্যে রয়েছেন দেশের প্রথম অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি শহিদ সৈয়দ নজরুল ইসলামের মেয়ে ও বর্তমান এমপি ডা. জাকিয়া নূর লিপি, তার ভাই মেজর জেনারেল (অব.) সাফায়েতুল ইসলাম ও চাচাতো ভাই জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট সৈয়দ আশফাকুল ইসলাম টিটু, প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারী ও কিশোরগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য কৃষিবিদ মশিউর রহমান হুমায়ুন, কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের শিক্ষা ও মানবসম্পদবিষয়ক উপকমিটির সদস্য অধ্যক্ষ শরীফ আহমেদ সাদী, সাবেক রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদের মেজো ছেলে রাসেল আহমেদ তুহিন, বঙ্গবন্ধু প্রজন্মলীগ কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট ফারুক উজ্জামান টিপু, স্বেচ্ছাসেবক লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির পাঠাগারবিষয়ক সম্পাদক এম এ হান্নান।

কিশোরগঞ্জ-২ (কটিয়াদি-পাকুন্দিয়া) আসনে মনোনয়ন প্রত্যাশীদের মধ্যে রয়েছেন বর্তমান সংসদ সদস্য রাষ্ট্রদূত ও সচিব নূর মোহাম্মদ, সাবেক সংসদ সদস্য ও পাকুন্দিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট সোহরাব উদ্দিন, কিশোরগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক স্পেশাল পিপি বীর মুক্তিযোদ্ধা এম এ আফজল, পাকুন্দিয়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম রেনু, বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের এক্সিকিউটিভ কমিটির চেয়ারম্যান ও অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল মোখলেছুর রহমান বাদল, পুলিশের সাবেক অতিরিক্ত ডিআইজি বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুল কাহার আকন্দ, বিশিষ্ট চক্ষু বিশেষজ্ঞ ও স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সাবেক মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. দ্বীন মোহাম্মদ নূরুল হক, রূপালী ব্যাংক লিমিটেডের সাবেক পরিচালক এ কে এম দেলোয়ার হোসেন এফসিএমএ, বাংলাদেশ যুব মহিলা লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক তানিয়া সুলতানা হ্যাপি, বাংলাদেশ বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের সাবেক প্রধান প্রকৌশলী বীর মুক্তিযোদ্ধা ইঞ্জিনিয়ার মো. আসাদুজ্জামান চৌধুরী, মো. মকবুল হোসেন ও মাহবুবুল হক আদিল।

কিশোরগঞ্জ-৩ (করিমগঞ্জ-তাড়াইল) আসনে করিমগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক মো. নাসিরুল ইসলাম খান আওলাদ, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাবেক এডিসি মেজর (অব.) মো. নাসিমুল হক, কিশোরগঞ্জ জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক এমরান আলী ভূঁইয়া, আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ উপ-কমিটির সদস্য এরশাদ উদ্দিন, প্রেসিডেন্ট আবদুল হামিদ মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ ডা. আ ন ম নৌশাদ খান, জেলা আওয়ামী লীগের স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা ডা. মাহাবুব ইকবাল, বেসরকারি শিক্ষক কর্মচারী অবসর সুবিধা বোর্ডের সাবেক সদস্য সচিব বীর মুক্তিযোদ্ধা অধ্যক্ষ আসাদুল হক, কেন্দ্রীয় স্বেচ্ছাসেবক লীগের শ্রম বিষয়ক সম্পাদক ব্যারিস্টার গোলাম কবির ভূঞা, তাড়াইল উপজেলা আ.লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আজিজুল ইসলাম মোতাহার, জেলা স্বেচ্ছাসেবকলীগের সাধারণ সম্পাদক প্রভাষক শামীম আহমেদ, চক্ষু বিশেষজ্ঞ ড. ইনামুর রহমান চৌধুরী, জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট মোজাম্মেল হক মাখন, সর্ব ইউরোপীয় বঙ্গবন্ধু ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা আহ্বায়ক ড. আনিছুর রহমান আনিছ, নিউইয়র্ক মহানগর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মোহাম্মাদ মাহফুজুল হক হায়দার, করিমগঞ্জ উপজেলা যুবলীগের আহ্বায়ক ও করিমগঞ্জ পৌরসভার সাবেক মেয়র হাজী আব্দুল কাইয়ূম, আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় যুব ও ক্রীড়া বিষয়ক উপ-কমিটির সদস্য আমিরুল ইসলাম খান বাবলু, আওয়ামী লীগের শিক্ষা ও মানব সম্পদ বিষয়ক উপ-কমিটির সদস্য ড. শহিদুল ইসলাম, ব্যবসায়ী দিলওয়ার হোসেন মঞ্জু, সাবেক জাতীয় ফুটবলার মাজহারুল ইসলাম হিমেল, তাড়াইল উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক মুহাম্মদ মাসুদ খান ও অস্ট্রেলিয়া প্রবাসী উম্মে ফাতেমা রোজী মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেছেন।

এ আসন আওয়ামী লীগের ঘাঁটি হলেও জাতীয় পার্টির সঙ্গে আসন সমঝোতায় বার বার ছেড়ে দিতে হয়েছে। বিগত ৩টি সংসদীয় সময়ে এ আসনে জাতীয় পার্টির মহাসচিব ও এমপি অ্যাডভোকেট মুজিবুল হক চুন্নু থাকায় আওয়ামী লীগ থেকে কাউকে মনোনয়ন দেয়নি।

আওয়ামী লীগ ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ বিষয়ক উপ-কমিটির সদস্য এরশাদ উদ্দিন বলেন, করিমগঞ্জ-তাড়াইলে আসনে বিগত ২২ বছর যাবত নৌকার এমপি নেই। এ আসনটি আওয়ামী লীগের ঘাঁটি ছিল। আমরা কোনো অবস্থাতে এ আসন ছাড় দিতে চাই না। এ আসনে নৌকার প্রার্থী থেকে বিজয়ী হয়ে আসনটি পুনরুদ্ধার করতে চাই।

কিশোরগঞ্জ-৪ (ইটনা-মিঠামইন-অষ্টগ্রাম) আসনে মনোনয়ন প্রত্যাশীদের মধ্যে রয়েছেন বর্তমান এমপি সদ্যবিদায়ী রাষ্ট্রপতির ছেলে রেজওয়ান আহমেদ তৌফিক। এ ছাড়াও সেখানে তার বাইরে ঢাকায় আইন পেশায় নিয়োজিত আব্দুল হামিদ নামে একজন দলীয় মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেছেন। তিনি ইটনা উপজেলার বাদলা ইউনিয়নের ৬ নং ওয়ার্ডের থানেশ্বর গ্রামের লুৎফর রহমান ভূইয়ার ছেলে।

জানা যায়, ২০১৩ সালে কিশোরগঞ্জ-৪ আসনের আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য আবদুল হামিদ রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হওয়ায় উপনির্বাচনে তার বড় ছেলে রেজওয়ান আহমেদ তৌফিক নৌকা প্রতীকে এমপি নির্বাচিত হওয়ার পর থেকে এ আসনটিও আওয়ামী লীগের হয়ে তার দখলে। এর আগে, শতভাগ হাওর অধ্যুষিত এই আসনে সাত বারের এমপি ছিলেন সাবেক রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ।

এ আসনের নৌকার মনোনয়ন প্রত্যাশী অ্যাডভোকেট আব্দুল হামিদ বলেন, আমি রাজনৈতিক জীবনের শুরু থেকেই আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত। আমি বঙ্গবন্ধু আওয়ামী আইনজীবী পরিষদ ঢাকার বার শাখার কার্যকরী সদস্য। কিশোরগঞ্জ জেলা আওয়ামী সংস্কৃতি ফোরামের সহ-সভাপতি। এ ছাড়া ইটনা উপজেলার বাদলা ইউনিয়নের ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের প্রাথমিক সদস্য। মনোনয়ন পেলে এলাকার উন্নয়নে কাজ করব।

কিশোরগঞ্জ-৫ (বাজিতপুর-নিকলী) আসনে মনোনয়ন প্রত্যাশীদের মধ্যে রয়েছেন বর্তমান সংসদ সদস্য বাজিতপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আফজাল হোসেন, যুবলীগ কেন্দ্রীয় পর্ষদের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সুব্রত পাল, কিশোরগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি মো. আলাউল হক, ছাত্রলীগ কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক সাধারণ সম্পাদক অজয় কর খোকন, জেলা কৃষক লীগের সাবেক সহসভাপতি ফারুক আহমদ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য শেখ রফিকুন্নবী, কেন্দ্রীয় যুবলীগ নির্বাহী কমিটির সাবেক সদস্য ব্যারিস্টার রফিকুল ইসলাম, বাজিতপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি জন্টু কুমার সাহা ও নিকলী উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি ইকবাল হোসেন।

কিশোরগঞ্জ-৬ (ভৈরব-কুলিয়ারচর) আসনে একাই আওয়ামী লীগের মনোনয়নপত্র নিয়েছেন নাজমুল হাসান পাপন। এরই মধ্যে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়নপত্র বিক্রি শেষ হয়েছে। সেই হিসেবে তিনি এই আসন থেকে নৌকার প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনের অনুমতি পেতে যাচ্ছেন।

জেলা নির্বাচন অফিসার মো. আশরাফুল আলম কিশোরগঞ্জ-৬ (ভৈরব-কুলিয়ারচর) বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, আমাদের কাছে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, এই আসন থেকে আওয়ামী লীগের পক্ষে শুধু নাজমুল হাসান পাপনই মনোনয়নপত্র কিনে সেটি পূরণ করে জমা দিয়েছেন। আর কেউ আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন ফরম কিনেন নি।

নাজমুল হাসান পাপন প্রয়াত রাষ্ট্রপতি মো. জিল্লুর রহমানের ছেলে এবং বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) সভাপতি। কিশোরগঞ্জ-৬ (ভৈরব-কুলিয়ারচর) আসন থেকে ছয় বার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন জিল্লুর রহমান। ২০০৯ সালে দেশের ১৯তম রাষ্ট্রপতি হিসেবে নির্বাচিত হওয়ার পর এ আসনে উপ-নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে তার ছেলে নাজমুল হাসান পাপন বিজয়ী হয়ে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।

কিশোর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট জিল্লুর রহমান বলেন, আমাদের কিশোরগঞ্জের ছয়টি আসনে অনেকেই নৌকার মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেছেন। দল যাকে মনোনয়ন দিবে আমরা তার পক্ষেই কাজ করব। আশা করি দলের সিদ্ধান্ত মেনে সকল প্রার্থীরাই নির্বাচন অংশগ্রহণ করবেন। 

নির্বাচন কমিশন ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী, নির্বাচনে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার শেষ তারিখ ৩০ নভেম্বর, বাছাই ১ থেকে ৪ ডিসেম্বর, রিটার্নিং কর্মকর্তার সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আপিল ও শুনানি ৬ থেকে ১৫ ডিসেম্বর এবং ১৭ ডিসেম্বরের মধ্যে মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করা যাবে।

এর মধ্যে কিশোরগঞ্জে মনোয়নপত্র বাছাইয়ের দিন নির্ধারণ করা হয়েছে ৩ ও ৪ ডিসেম্বর। প্রতীক বরাদ্দ দেওয়া হবে ১৮ ডিসেম্বর। নির্বাচনী প্রচারণা চলবে ১৮ ডিসেম্বর থেকে ৫ জানুয়ারি সকাল ৮টা পর্যন্ত। ভোটগ্রহণ হবে ৭ জানুয়ারি সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত।

সারাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত
সর্বশেষ
জনপ্রিয়