ঢাকা, সোমবার   ২৯ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১৫ ১৪৩১

ইসরায়েল-গাজা যুদ্ধ : গুলি, বোমা ও ক্ষুধায় মরছে শিশুরা

নিউজ ডেস্ক

প্রকাশিত: ১৫:৩৮, ৩ মার্চ ২০২৪  

ইসরায়েল-গাজা যুদ্ধ : গুলি, বোমা ও ক্ষুধায় মরছে শিশুরা

ইসরায়েল-গাজা যুদ্ধ : গুলি, বোমা ও ক্ষুধায় মরছে শিশুরা

চার মাসের বেশি সময় ধরে চলমান ইসরায়েলি হামলায় এ পর্যন্ত গাজায় নিহত হয়েছে ৩০ হাজারের বেশি মানুষ। আহতের সংখ্যা ছাড়িয়েছে ৭০ হাজার।অবরুদ্ধ এই উপত্যকায় ইসরায়েলি বাহিনীর নির্বিচার হামলার বড় শিকার শিশুরা। গুলি-বোমার পাশাপাশি সেখানে শিশুরা মারা যাচ্ছে ক্ষুধা ও অপুষ্টিতেও। ত্রাণ বিতরণে ইসরায়েলের বাধার কারণে ক্ষুধা ও অপুষ্টিতে গত কয়েক দিনে ১০ শিশুর মৃত্যু হয়েছে বলে গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে। এছাড়া এই যুদ্ধে গাজায় নিহত ৩০ হাজার ফিলিস্তিনির এক-তৃতীয়াংশের বেশি শিশু।

গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় গত বৃহস্পতিবার রাতে জানায়, পানিস্বল্পতা ও ক্ষুধায় উত্তর গাজার কামাল আদওয়ান হাসপাতালে আরও চার শিশু মারা গেছে। এ নিয়ে কয়েক দিনে ক্ষুধা ও অপুষ্টিতে মারা যাওয়া শিশুর সংখ্যা ১০–এ গিয়ে ঠেকেছে।

এর আগে উত্তর গাজার আল-শিফা হাসপাতালে দুই শিশুর মৃত্যু হয় বলে গত বুধবার জানিয়েছিল গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। এর আগে একই কারণে কামাল আদওয়ান হাসপাতালে আরও চার শিশুর মৃত্যু হয়েছিল।

গত চার মাসের বেশি সময় ধরে চলমান ইসরায়েলি হামলায় এ পর্যন্ত গাজায় নিহত হয়েছে ৩০ হাজারের বেশি মানুষ। আহতের সংখ্যা ছাড়িয়েছে ৭০ হাজার।

অবরুদ্ধ এই উপত্যকায় ইসরায়েলি বাহিনীর নির্বিচার হামলার বড় শিকার শিশুরা। গুলি-বোমার পাশাপাশি সেখানে শিশুরা মারা যাচ্ছে ক্ষুধা ও অপুষ্টিতেও। ত্রাণ বিতরণে ইসরায়েলের বাধার কারণে ক্ষুধা ও অপুষ্টিতে গত কয়েক দিনে ১০ শিশুর মৃত্যু হয়েছে বলে গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে। এছাড়া এই যুদ্ধে গাজায় নিহত ৩০ হাজার ফিলিস্তিনির এক-তৃতীয়াংশের বেশি শিশু।

গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় গত বৃহস্পতিবার রাতে জানায়, পানিস্বল্পতা ও ক্ষুধায় উত্তর গাজার কামাল আদওয়ান হাসপাতালে আরও চার শিশু মারা গেছে। এ নিয়ে কয়েক দিনে ক্ষুধা ও অপুষ্টিতে মারা যাওয়া শিশুর সংখ্যা ১০–এ গিয়ে ঠেকেছে।

এর আগে উত্তর গাজার আল-শিফা হাসপাতালে দুই শিশুর মৃত্যু হয় বলে গত বুধবার জানিয়েছিল গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। এর আগে একই কারণে কামাল আদওয়ান হাসপাতালে আরও চার শিশুর মৃত্যু হয়েছিল।

গত সপ্তাহে ফিলিস্তিনি কর্মকর্তারা সতর্ক করে বলেছেন, গাজার সব এলাকায় পর্যাপ্ত ত্রাণসহায়তা না পৌঁছানো গেলে আসছে দিনগুলোয় দুর্ভিক্ষের কারণে হাজারো মানুষ মারা যেতে পারে।

বিবিসি রেডিও ফোর-কে ডক্টরস উইদাউট বর্ডারস, যুক্তরাজ্যের নির্বাহী পরিচালক নাটালি রবার্টস বলেছেন, গত কয়েক সপ্তাহে উত্তর গাজায় খুবই নগণ্যসংখ্যক ত্রাণবহর গেছে বলে আমরা জানতে পেরেছি। সেখানকার বাসিন্দারা খাওয়ার জন্য কিছু পাচ্ছেন না।

সপ্তাহে ফিলিস্তিনি কর্মকর্তারা সতর্ক করে বলেছেন, গাজার সব এলাকায় পর্যাপ্ত ত্রাণসহায়তা না পৌঁছানো গেলে আসছে দিনগুলোয় দুর্ভিক্ষের কারণে হাজারো মানুষ মারা যেতে পারে।

বিবিসি রেডিও ফোর-কে ডক্টরস উইদাউট বর্ডারস, যুক্তরাজ্যের নির্বাহী পরিচালক নাটালি রবার্টস বলেছেন, গত কয়েক সপ্তাহে উত্তর গাজায় খুবই নগণ্যসংখ্যক ত্রাণবহর গেছে বলে আমরা জানতে পেরেছি। সেখানকার বাসিন্দারা খাওয়ার জন্য কিছু পাচ্ছেন না।

ত্রাণ সরবরাহে বাধা

গাজায় হামলার শুরু থেকেই ত্রাণ প্রবেশে বাধা দিয়ে আসছে ইসরায়েল। গাজার ভেতরে ত্রাণ বিতরণের সময়ও কয়েক দফা হামলা চালিয়েছে ইসরায়েলি বাহিনী। সর্বশেষ গত বৃহস্পতিবার ভোরে গাজা নগরীর দক্ষিণে ত্রাণের জন্য অপেক্ষমাণ মানুষের ওপর ইসরায়েলের বিমান ও গোলা হামলায় ১১৫ জন নিহত হন। আহত হয়েছেন ৭৫০ জনের বেশি।

এমন সময় এ হামলা চালানো হলো, যখন উত্তর গাজায় দুর্ভিক্ষ আসন্ন বলে সতর্ক করেছে জাতিসংঘ। বৈশ্বিক সংস্থাটি বলেছে, সেখানকার প্রায় তিন লাখ বাসিন্দা খাবার ও সুপেয় পানি পাচ্ছেন না বললেই চলে। তবে মানবিক ত্রাণসহায়তা প্রদানে বাধা দেওয়ার বিষয়টি অস্বীকার করেছে দেশটি।

ফিলিস্তিনে জাতিসংঘের ত্রাণ ও কর্মসংস্থানবিষয়ক সংস্থা ইউএনআরডব্লিউএর প্রধান ফিলিপ্পে লাজ্জারিনি জেরুজালেমে সাংবাদিকদের বলেন, জানুয়ারি থেকে গাজায় সার্বিকভাবে ত্রাণ সরবরাহের পরিমাণ অর্ধেকে নেমে এসেছে।

শান্তি প্রতিষ্ঠায় যুক্তরাষ্ট্রের সন্দেহজনক ভূমিকা

ইসরায়েল ও ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের মধ্যে শান্তি আলোচনায় অগ্রণী ভূমিকা পালনকারী যুক্তরাষ্ট্র বরাবরই সন্দেহজনক ভূমিকা পালন করে চলেছে। যুক্তরাষ্ট্র ইসরায়েলের প্রধান সমর্থক ও অর্থদাতা, যা দেশে ও বিদেশে ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা জোরদার করে। যদিও যুক্তরাষ্ট্র সৎ দালালের ভূমিকায় থাকার চেষ্টা করেছে, কিন্তু ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের ওপর লৌহকঠিন নিয়ন্ত্রণ বজায় রাখতে ইসরায়েলকে বাধা দেয়নি। 

পশ্চিম তীর ও গাজার ওপর পূর্ণ সার্বভৌমত্ব থাকবে এমন ফিলিস্তিনকে ইসরায়েল কখনোই মেনে নেবে না, আর তার সমর্থন যুক্তরাষ্ট্র দিতে বাধ্য থাকবে যত দিন যুক্তরাষ্ট্রের কংগ্রেস ইসরায়েলের পেছনে আছে। 

ইসরায়েলের পাশে নিজস্ব সেনাবাহিনী ও পররাষ্ট্রনীতি নিয়ে একটি সার্বভৌম রাষ্ট্র যুক্তরাষ্ট্র সমর্থন করবে না। কারণ, এটি ওই অঞ্চলে একটি সমান্তরাল রাষ্ট্র তৈরি করবে, যা ইসরায়েলকে দুর্বল করতে পারে। কোনো মার্কিন প্রেসিডেন্ট দুর্বল ইসরায়েলকে সমর্থন করবেন না। কোনো মার্কিন কংগ্রেস এটা সমর্থন করবে না, অন্তত আগামী দুই দশকের মধ্যে তো নয়ই।

আমি আগামী দুই দশকের কথা বলছি। কারণ, ইসরায়েল পছন্দ করুক বা না করুক এবং আমেরিকার কংগ্রেস বা প্রেসিডেন্ট সত্যিকারের সার্বভৌম ফিলিস্তিনি রাষ্ট্রের বিষয়ে যে মনোভাব পরিবর্তন করুক বা না করুক, ঔপনিবেশিক শক্তির দ্বারা সৃষ্ট এই পঁচাত্তর বছরের সংকটের বিবর্তনীয় সমাধানের জন্য পরিবর্তনের বাতাস ইতিমধ্যে জড়ো হচ্ছে। আরও এক প্রজন্ম লেগে যেতে পারে, কিন্তু এটা ঘটবে। 

যুক্তরাষ্ট্রের নতুন প্রজন্মের একটি বড় অংশে মধ্যপ্রাচ্য সংকট নিয়ে ভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গি ও চিন্তাভাবনা রয়েছে এবং কয়েক দশক ধরে ইসরায়েল তার ফিলিস্তিনি/আরব জনগণের সঙ্গে ভয়াবহ আচরণ তারা দেখে আসছে। গাজা এবং পশ্চিম তীরের মানবেতর পরিস্থিতি সম্পর্কে আরও বেশিসংখ্যক লোক জানে এবং প্রতিদিন সেখানকার নৃশংসতা দেখছে, তারা আরও বেশি করে শান্তির আহ্বান জানাচ্ছে, যা এ অঞ্চলের মানুষের জন্য ন্যায়সংগত। ওই এলাকার আরব দেশগুলো ইসরায়েলের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপনে আগ্রহ দেখালেও নিজ নিজ দেশের জনগণ তাদের শাসকদের চেয়ে ফিলিস্তিনিদের পক্ষেই বেশি সম্পৃক্ত।

ত্রাণবহরে হামলায় নিন্দার ঝড়

এদিকে বৃহস্পতিবার ত্রাণ নিতে জড়ো হওয়া ক্ষুধার্ত মানুষের ওপর ইসরায়েলি বাহিনীর হামলার ঘটনায় বিশ্বজুড়ে নিন্দার ঝড় উঠেছে। এ ঘটনায় যুক্তরাষ্ট্র, চীন, ফ্রান্স, তুরস্ক, ইতালি, কলম্বিয়া, সৌদি আরবসহ বিভিন্ন দেশ ও জাতিসংঘ নিন্দা জানিয়েছে।

এ ঘটনায় জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনি গুতেরেস নিন্দা জানিয়েছেন। ইউরোপীয় ইউনিয়নের পররাষ্ট্রবিষয়ক প্রধান জোসেফ বোরেল এ ঘটনাকে ‘একেবারে অগ্রহণযোগ্য’ বলে মন্তব্য করেছেন।

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেছেন, এ ঘটনা হামাস ও ইসরায়েলের মধ্যকার যুদ্ধবিরতির আলোচনা জটিল করে তুলবে। এ হত্যাকাণ্ডের তীব্র নিন্দা জানিয়েছে চীন। গাজায় অবিলম্বে যুদ্ধ বন্ধের দাবি জানিয়েছেন ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল মাখোঁ। এ হামলার প্রতিবাদে ইসরায়েল থেকে অস্ত্র না কেনার ঘোষণা দিয়েছেন কলম্বিয়ার প্রেসিডেন্ট গুস্তাভো পেত্র।

তুরস্ক বলছে, এ ঘটনার মধ্য দিয়ে ইসরায়েল আরেকটি মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করেছে। গাজায় অবিলম্বে যুদ্ধবিরতি কার্যকর করার ওপর আবারও জোর দিয়েছে সৌদি আরব।

সর্বশেষ
জনপ্রিয়