ঢাকা, শুক্রবার   ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১৩ ১৪৩১

যুক্তরাজ্যে নতুন স্কিমে বাংলাদেশের রফতানি বৃদ্ধির হাতছানি

নিউজ ডেস্ক

প্রকাশিত: ১৪:২৭, ১৯ মার্চ ২০২৩  

যুক্তরাজ্যে নতুন স্কিমে বাংলাদেশের রফতানি বৃদ্ধির হাতছানি

যুক্তরাজ্যে নতুন স্কিমে বাংলাদেশের রফতানি বৃদ্ধির হাতছানি

বাংলাদেশের জন্য একটি বড় বাকবদল আনতে পারে যুক্তরাজ্যের ডেভেলপিং কান্ট্রিজ ট্রেডিং স্কিমে (ডিসিটিএস) জেনারেলাইজড সিস্টেম অব প্রেফারেন্স (জিএসপি) প্রতিস্থাপন। বিশেষ করে পোশাক খাতের বাইরে অন্য খাতকে সঠিকভাবে পরিচালিত করতে পারলে এর সুফল পাওয়া যেতে পারে।

নতুন স্কিমের আওতায়, ২০২৬ সালে বাংলাদেশ এলডিসি ক্যাটাগরি থেকে উত্তীর্ণের পরও স্বল্পোন্নত দেশ হিসেবে মুক্ত বাজারে প্রবেশাধিকার উপভোগ করবে বাংলাদেশ। ২০২৯ সালের ২৩ নভেম্বর পর্যন্ত যুক্তরাজ্যের বাজারে এ সুবিধা পাবে বাংলাদেশ।

গত বৃহস্পতিবার ঢাকায় অনুষ্ঠিত ‘যুক্তরাজ্যের বাজারে রফতানি সম্প্রসারণ ও বৈচিত্র্যকরণ’ শীর্ষক সেমিনারে বিশেষজ্ঞরা এসব কথা বলেন। সেমিনারটি যুক্তরাজ্যের ফরেন, কমনওয়েলথ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট অফিস (এফসিডিও) এর সহায়তায় রিসার্চ অ্যান্ড পলিসি ইন্টিগ্রেশন ফর ডেভেলপমেন্ট (র‍্যাপিড) আয়োজন করে।

সেমিনারে র‌্যাপিড-এর চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আবদুর রাজ্জাক বলেন, ২০৩০ সালের মধ্যে যুক্তরাজ্যে পোশাক রফতানির মূল্য ৪.৫ বিলিয়ন ডলার। এরমধ্যে পোশাক খাতের বাইরে অন্য পণ্যের রফতানি ০.৭ বিলিয়ন থেকে ১.৩ বিলিয়ন ডলার বাড়বে। যুক্তরাজ্যে পোশাক খাতের বাইরে অন্য পণ্যের রফতানিও বৃদ্ধির সম্ভাবনা রয়েছে।

বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব তপন কান্তি ঘোষ বলেন, আমাদের রফতানিকারকরা ইইউ জিএসপি সম্পর্কে ভালভাবে অবগত। কিন্তু যুক্তরাজ্যের ডিসিটিএস সম্পর্কে তাদের সীমিত তথ্য রয়েছে। তারা সঠিক তথ্য দিয়ে এর বেশিরভাগই নিতে পারে। বাংলাদেশ আমদানি শুল্ক রাজস্বের উপর নির্ভর করে, যা শিক্ষা, স্বাস্থ্য এবং সামাজিক সুরক্ষার মতো সরকারী ব্যয় মেটাতে গুরুত্বপূর্ণ। এইভাবে, ট্যারিফ যৌক্তিককরণ এই ব্যয়গুলি নিশ্চিত করার জন্য একটি চ্যালেঞ্জ তৈরি করবে। এছাড়া, কখনো কখনো আমাদের উদ্যোক্তারা স্থানীয় বাজারে বিদেশি পণ্য আসা থেকে সুরক্ষা চান, যা আমরা অস্বীকার করতে পারি না। তবে, ২০২৬ সালের পর, বাংলাদেশের শুল্কের হার কমাতে হবে। তাই আমাদের রফতানিকারকদের ক্রমবর্ধমান প্রতিযোগিতার বিষয়ে সচেতন হতে হবে।

সঙ্কুচিত বাজার সম্পর্কে বাণিজ্য সচিব বলেন, আমরা অনুকূল বাজারে প্রবেশাধিকার নিশ্চিত করার জন্য দেশগুলোর সঙ্গে আলোচনা করছি। আমরা খোলা অ্যাকাউন্টের অর্থ দেওয়ার সমস্যা সম্পর্কে অবগত ছিলাম না। সমস্যাটি সমাধানের জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকের সাথে কাজ করব।

ডিসিটিএস সম্পর্কে র‍্যাপিড জানায়, ট্রেডিং স্কিম ইউকে রুলস অফ অরিজিনের জন্য বাংলাদেশকে সহায়তা দেবে। এলডিসি পণ্যের জন্য ২৫% জিএসপি দেবে।

প্রতিযোগিতামূলক সুবিধা পেতে বাংলাদেশে বর্তমান উৎপাদন ও রফতানি কাঠামোতে রয়েছে, চামড়াজাত পণ্য ও জুতা (১০% বৃদ্ধি পাবে), বাইসাইকেল (৭%) ও কৃষি পণ্য। খাদ্য এবং কৃষি প্রক্রিয়াজাত পণ্যের মধ্যে মাছ এবং চিংড়ি সবচেয়ে বেশি রফতানি হবে। এই সেক্টরগুলোকে সঠিক নীতি সহায়তার মাধ্যমে তাদের রপ্তানি সম্ভাবনা উন্মোচন করতে দেওয়া উচিত।

অন্যদিকে, যুক্তরাজ্য ২০২১ সালে ৫.৩ বিলিয়ন ডলার মূল্যের চামড়াজাত পণ্য আমদানি করেছে। এর মধ্যে বাংলাদেশের বাজারের শেয়ার ছিল মাত্র ০.৭%। এফসিডিও’র ডেপুটি ডেভেলপমেন্ট ডিরেক্টর ডানকান ওভারফিল্ড বলেন, বাংলাদেশকে অবশ্যই ইউকে ডিসিটিএস-এর সর্বোত্তম ব্যবহার নিশ্চিত করতে প্রয়োজনীয় নীতির বিকল্প ও সমর্থন অনুসন্ধান করতে হবে। এরই মধ্যে চিহ্নিত চারটি ছাড়াও অন্যান্য খাত আছে কি না, যেমন ফার্মাসিউটিক্যাল সেক্টর, যেখানে ভারত দৃঢ়ভাবে কাজ করছে।

রফতানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) ভাইস চেয়ারম্যান ও সিইও এএইচএম আহসান বলেন, আমরা যে অগ্রাধিকারের ক্ষেত্রে কাজ করছি তার মধ্যে রফতানি বহুমুখীকরণ অন্যতম। তবে আমাদের অনেক দূর যেতে হবে।

বাংলাদেশ বাণিজ্য ও ট্যারিফ কমিশনের চেয়ারম্যান মো. ফয়জুল ইসলাম বলেন, রফতানি বহুমুখীকরণ নিশ্চিত করতে সরকারি ও বেসরকারি উভয় সংস্থাকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে। উচ্চ আমদানি শুল্ক ভোক্তাদের পাশাপাশি উৎপাদকদের জন্য বিরক্তিকর হিসাবে কাজ করে। সরকার ট্যারিফ যৌক্তিককরণের জন্য কাজ করছে।

ব্যবসা বাণিজ্য বিভাগের সর্বাধিক পঠিত
সর্বশেষ
জনপ্রিয়