ঢাকা, শনিবার   ২৭ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১৪ ১৪৩১

কেয়ামতের দিন রোজা ও কোরআন যাদের জন্য সুপারিশ করবে

নিউজ ডেস্ক

প্রকাশিত: ১৭:৩০, ১৪ মার্চ ২০২৪  

কেয়ামতের দিন রোজা ও কোরআন যাদের জন্য সুপারিশ করবে

কেয়ামতের দিন রোজা ও কোরআন যাদের জন্য সুপারিশ করবে

পবিত্র কোরআনুল কারিম নাজিলের কারণেই রমজানের ও শবে কদরের ফজিলত। যে মানুষ যত কোরআনের ধারক-বাহক হবে, তার সম্মানও তত বেশি হবে। মহান রাব্বুল আলামিন আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেছেন,شَہۡرُ رَمَضَانَ الَّذِیۡۤ اُنۡزِلَ فِیۡہِ الۡقُرۡاٰنُ ہُدًی لِّلنَّاسِ وَ بَیِّنٰتٍ مِّنَ الۡہُدٰی وَ الۡفُرۡقَانِ  فَمَنۡ شَہِدَ مِنۡکُمُ الشَّہۡرَ فَلۡیَصُمۡہُ ؕ وَ مَنۡ کَانَ مَرِیۡضًا اَوۡ عَلٰی سَفَرٍ فَعِدَّۃٌ مِّنۡ اَیَّامٍ اُخَرَ ؕ یُرِیۡدُ اللّٰہُ بِکُمُ الۡیُسۡرَ وَ لَا یُرِیۡدُ بِکُمُ الۡعُسۡرَ ۫ وَ لِتُکۡمِلُوا الۡعِدَّۃَ وَ لِتُکَبِّرُوا اللّٰہَ عَلٰی مَا ہَدٰىکُمۡ وَ لَعَلَّکُمۡ تَشۡکُرُوۡنَ

উচ্চারণ: ‘শাহরু রামাদা-নাল্লাযীউনঝিলা ফীহিল কুরআ-নু হুদাল লিন্না-সি ওয়া বাইয়িনা-তিম মিনাল হুদা-ওয়াল ফুরকা-নি ফামান শাহিদা মিনকুমুশশাহরা ফালইয়াসুমহু ওয়া মান কা-না মারীদান আও ‘আলা-সাফারিন ফা‘ইদ্দাতুম মিন আইয়া-মিন উখারা-ইউরীদুল্লা-হু বিকুমুল ইউছরা ওয়ালা-ইউরীদুবিকুমুল ‘উসরা ওয়ালিতুকমিলুল ‘ইদ্দাতা ওয়া লিতুকাব্বিরুল্লা-হা ‘আলা-মা-হাদা-কুম ওয়া লা‘আল্লাকুম তাশকরূন’।

অর্থ: ‘রমজান মাস, যে মাসে বিশ্বমানবের জন্য পথ প্রদর্শন এবং সু-পথের উজ্জ্বল নিদর্শন এবং হক ও বাতিলের প্রভেদকারী কোরআন অবতীর্ণ হয়েছে। অতএব তোমাদের মধ্যে যে ব্যক্তি এ মাসে (নিজ আবাসে) উপস্থিত থাকে সে যেন সিয়াম পালন করে এবং যে ব্যক্তি পীড়িত অথবা প্রবাসী, তার জন্য অপর কোনো দিন হতে গণনা করবে; তোমাদের পক্ষে যা সহজসাধ্য আল্লাহ তা-ই ইচ্ছা করেন ও তোমাদের পক্ষে যা দুঃসাধ্য তা ইচ্ছা করেন না এবং যেন তোমরা নির্ধারিত সংখ্যা পূরণ করে নিতে পার এবং তোমাদেরকে যে সুপথ দেখিয়েছেন তজ্জন্য তোমরা আল্লাহকে মহিমান্বিত কর এবং যেন তোমরা কৃতজ্ঞতা প্রকাশ কর’।  (সূরা: বাকারা, আয়াত:১৮৫) তাই রমজার তথা কোরআন নাজিলের মাসে কোরআন তেলাওয়াতের গুরুত্ব ও ফজিলত অপরিসীম।

আবদুল্লাহ ইবনে মাসুদ (রা.) বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, যে আল্লাাহর কিতাব থেকে একটি অক্ষর তেলওয়াত করে, তার বিনিময়ে সে একটি নেকি পাবে। আর একটি নেকির বিনিময় হবে ১০ গুণ। এ কথা বলছি না যে, আলিফ লাম মিম একটি অক্ষর, বরং আলিফ একটি অক্ষর, লাম একটি অক্ষর, মিম একটি অক্ষর। বস্তুত, কোরআন তেলাওয়াত মর্যাদাপূর্ণ একটি আমল। এটিকে লোকসানমুক্ত ব্যবসা হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। এর প্রতিদান কখনো বিনষ্ট হয় না।

ইরশাদ হয়েছে, যারা আল্লাহকে স্মরণ করে আল্লাহর কিতাব তেলওয়াত করে, নামাজ প্রতিষ্ঠা করে এবং আমি তাদের যে রিজিক দিয়েছি, তা থেকে গোপনে ও প্রকাশ্যে ব্যয় করে, তারাই আশা করে এমন ব্যবসার, যার কোনো ক্ষয় নেই। এজন্য যে, আল্লাহ তাদের পূর্ণ প্রতিদান দেবেন এবং তিনি নিজ অনুগ্রহে তাদের আরো বেশি দেবেন; তিনি সর্বোত্তম ক্ষমাশীল ও গুণগ্রাহী।

আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) বলেন, রমজান মাসের প্রতি রাতে জিবরাইল (আ.) রাসূলুল্লাহ (সা.) এর কাছে উপস্থিত হন এবং তারা উভয়েই পবিত্র কোরআন তেলওয়াত করেন একে অপরকে শোনাতে (বুখারি শরিফ; হাদিস-০৬)

কেয়ামতের দিন রোজা ও কোরআন যাদের জন্য সুপারিশ করবে

যেসব ব্যক্তি যথাযথভাবে রোজা রাখবে এবং পবিত্র কোরআন তেলাওয়াত করবে, কেয়ামতের দিন কোরআন ও রোজা তাদের জন্য সুপারিশ করবে। ইবনে ওমর (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেছেন, রোজা ও কোরআন সব মোমিন মুসলমান বান্দার জন্য সুপারিশ করবে। রোজা বলবে যে, হে আমার রব, আমি তাকে খাবার ও দিবসে প্রবৃত্তি থেকে বিরত রেখেছি। অতএব আল্লাহকে বলবে, আপনি আমার সুপারিশ গ্রহণ করুন। আর কোরআন বলবে, আমি বান্দাদের রাতের বেলায় ঘুম থেকে বিরত রেখেছি। অতএব, বান্দাদের, অর্থাৎ মোমিন মুসলমানদের ব্যাপারে সুপারিশ গ্রহণ করুন। তখন তাদের উভয়ের আমল কবুল করা হবে। (মুসনাদে আহমাদ)

কোরআনের আয়াত নিয়ে চিন্তা ও গবেষণা করা কর্তব্য। আল কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, এটা কল্যাণময় কিতাব, যা আমি আপনার ওপর অবতীর্ণ করেছি, যাতে মানুষ এর আয়াতগুলো অনুধাবন করে এবং বুদ্ধিমান ব্যক্তিরা উপদেশ গ্রহণ করে। কোরআন তেলওয়াতের সময় কান্না করা সুন্নত। কোরআনে তাদের প্রশংসা করা হয়েছে। ইরশাদ হয়েছে, তাদের কাছে দয়াময়ের আয়াত তেলওয়াত করা হলে কান্না করতে করতে তারা সিজদায় লুটে পড়ত।

আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা.) থেকে বর্ণিত, নবী করিম (সা.) আমাকে বলেছেন, আমাকে তুমি কোরআন তেলওয়াত করে শোনাও। বললাম, আমি আপনাকে তেলওয়াত শোনাব, অথচ আপনার ওপরই এটি অবতীর্ণ হয়েছে। তিনি বললেন, আমি অন্যের তেলওয়াত শুনতে পছন্দ করি। অতঃপর আমি তাকে সূরা নিসা (৪১ নম্বর আয়াত) পড়ে শোনাতে লাগলাম। তখন তিনি বললেন, থামো, যথেষ্ট হয়েছে। দেখা গেল, তখনই তার চোখ থেকে অঝোরধারায় অশ্রু প্রবাহিত হচ্ছে (বুখারি শরিফ-৫০৫০)

সর্বশেষ
জনপ্রিয়