ঢাকা, শুক্রবার   ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১২ ১৪৩১

অজুতে ব্যবহৃত পানি কি নাপাক?

শায়েখ উমায়ের কোব্বাদী

প্রকাশিত: ১৪:৫৮, ১৪ নভেম্বর ২০২২  

ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

পৃথিবীতে মানুষ আল্লাহ তায়ালার যতগুলো নেয়ামত উপভোগ করে তার অন্যতম ও প্রধান একটি হলো পানি। পানি ছাড়া মানুষের স্বাভাবিক জীবনযাপন কল্পনা করা সম্ভব নয়। কেননা পৃথিবীর সকল প্রাণের উৎস পানি এবং সবাই পানির উপর নির্ভরশীল।

আল্লাহ তায়ালা পানিকে শুধুমাত্র মানুষের পান করার চাহিদা মিটানোর জন্যই তৈরি করেননি। পানিকে করেছেন সৃষ্টির বিভিন্ন কাজের গুরুত্বপূর্ণ উপকরণ।

আল্লাহ বলেন, ‘যে পবিত্রসত্তা তোমাদের জন্য ভূমিকে বিছানা এবং আকাশকে ছাদ স্বরূপ স্থাপন করে দিয়েছেন, আর আকাশ থেকে পানি বর্ষণ করে তোমাদের জন্য ফল-ফসল উৎপাদন করেছেন তোমাদের খাদ্য হিসাবে। অতএব, আল্লাহর সাথে তোমরা অন্য কাকেও সমকক্ষ করো না। বস্তুতঃ এসব তোমরা জান।’ (সুরা বাক্বারা : আয়াত ২২)

পানি স্বভাবত পবিত্র। বিভিন্ন কাজ ও পবিত্রতা অর্জনের কাজেও পানি ব্যবহার করা হয়। মানুষ পেশাব-পায়খানা এবং শারিরীকভাবে অপবিত্র হলে পানির মাধ্যমেই পবিত্র হয়ে থাকে। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘তিনিই স্বীয় রহমতের প্রাক্কালে বাতাসকে সুসংবাদবাহীরূপে প্রেরণ করেন। এবং আমি আকাশ থেকে পবিত্রতা অর্জনের জন্যে পানি বর্ষণ করি।’ -(সুরা ফুরকান : আয়াত ৪৮)

বিভিন্ন কাজের মতো অজুর করার জন্যও মানুষ পানি ব্যবহার করে। অজুতে ব্যবহারের পর এই পানি পবিত্র থাকে নাকি অপবিত্র হয়ে যায়- এমন প্রশ্ন করেন অনেকে।

এ বিষয়ে ইসলামী আইন ও ফেকাহ শাস্ত্রবিদদের মতামত হলো, অজুর ব্যবহৃত পানি নাপাক নয়। আলেমদের মতে, এই পানি দ্বারা নাপাক কাপড় বা নাপাক বস্তু ধোয়া এবং পবিত্র করা জায়েজ। তবে এই পানি দিয়ে অজু করা কিংবা ফরজ গোসল করা যাবে না; করলে পবিত্রতা অর্জন হবে না। হাদিস শরিফে এসেছে, আবু হুরায়রা রা. থেকে বর্ণিত,

أُقِيمَتْ الصَّلَاةُ فَقُمْنَا فَعَدَّلْنَا الصُّفُوفَ قَبْلَ أَنْ يَخْرُجَ إِلَيْنَا رَسُولُ اللَّهِ ﷺ ، فَأَتَى رَسُولُ اللَّهِ ﷺ حَتَّى إِذَا قَامَ فِي مُصَلَّاهُ قَبْلَ أَنْ يُكَبِّرَ ، ذَكَرَ فَانْصَرَفَ ، وَقَالَ لَنَا : مَكَانَكُمْ ، فَلَمْ نَزَلْ قِيَامًا نَنْتَظِرُهُ حَتَّى خَرَجَ إِلَيْنَا وَقَدْ اغْتَسَلَ ، يَنْطُفُ رَأْسُهُ مَاءً، فَكَبَّرَ فَصَلَّى بِنَا

একবার নামাজের জন্য ইকামাত দেয়া হল এবং রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এসে পৌছার আগেই আমরা দাঁড়িয়ে কাতার সোজা করে নিলাম। এরপর রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এসে নামাজের স্থানে দাঁড়ালেন। তখনও তাকবীর বলা হয়নি। ইতোমধ্যে তার কিছু স্মরণ হলে তিনি আমাদেরকে বললেন, তোমরা নিজ-নিজ স্থানে অপেক্ষা করতে থাক। এ কথা বলে তিনি ফিরে গেলেন। আমরা তার পুনরায় না আসা পর্যন্ত দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করতে থাকলাম। ইতোমধ্যে তিনি গোসল করে আসলেন। তখনও তার মাথা থেকে পানি ফোঁটা ফোঁটা ঝরে পড়ছিল। এবার তিনি তাকবীরে তাহরীমা বলে আমাদের নামাজ আদায় করালেন। (মুসলিম ৬০৫, -ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/৪১; আদ্দুররুল মুখতার ১/২০১; মারাকিল ফালাহ ৮৭)

সর্বশেষ
জনপ্রিয়