ঢাকা, শনিবার   ১৮ মে ২০২৪ ||  জ্যৈষ্ঠ ৪ ১৪৩১

সালামের উত্তর না দিলে বা মাথা নাড়লে গুনাহ হবে কি?

নিউজ ডেস্ক

প্রকাশিত: ১৫:৩৪, ৪ মে ২০২৪  

সালামের উত্তর না দিলে বা মাথা নাড়লে গুনাহ হবে কি?

সালামের উত্তর না দিলে বা মাথা নাড়লে গুনাহ হবে কি?

সালাম দেওয়া ও নেওয়ার এ বিষয়টি ছোট হলেও ইসলামে এটি অনেক গুরুত্বপূর্ণ। হাদিসে এসেছে, পারষ্পরিক সালাম বিনিময়ে পারষ্পরিক ভালোবাসা বৃদ্ধি পায়। (মিশকাত ৪৬৩১)

তবে কোনো ব্যক্তিকে সালাম দিলে যদি উত্তর না দেয়, তাহলে কি গুনাহ হবে? আবার অনেকে উত্তর না দিয়ে মাথা নেড়ে থাকেন কিংবা হাতে ইশারা করেন। এটিও কি গুনাহের কারণ? এ সম্পর্কে ইসলামের দিকনির্দেশনা কী?

সালাম ইসলামের শিআর বা নিদর্শন ও শান্তির প্রতীক। উচ্চ পর্যায়ের একটি আমল। মহান রাব্বুল আলামিন আল্লাহ তাআলা পবিত্র কোরআনুল কারিমেই শিখিয়েছেন; কেউ সালাম দিলে তার চেয়ে উত্তম শব্দে উত্তর দেওয়া উচিত। তারপরও অনেকেই সালামের উত্তর দেওয়ার ক্ষেত্রে অলসতা বা গাফলতি করে থাকে। জবাব দেয় না। আবার সালামের উত্তর দিলেও পূর্ণভাবে দেয় না। আবার অনেকে সালামের উত্তরে মাথা নেড়ে থাকেন। হাতে ইশারা করে জবাব দেন। অথচ সালাম দেওয়া সুন্নত আর উত্তর দেওয়া ওয়াজিব এবং সওয়াবের কাজ। 

কোনো ব্যক্তি যদি বিনা ওজরে সালামের উত্তর না দেয় তাহলে সে ওয়াজিব তরকের অপরাধে গুনাহগার হবে। (রদ্দুল মুহতার- ৬/৪১৩, ফাতাওয়ায়ে হিন্দিয়া- ৫/৩৩৫, কেফায়াতুল ফাতওয়া- ৭২, খুলাসাতুল ফাতাওয়া- ৪/৩৩৩)

আরো গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো- মাথা নেড়ে বা হাতে ইশারা করলে সালামের উত্তর দেওয়া হলে তাতে ওয়াজিব আদায় হবে না। তাতেও ওয়াজিব তরকের অপরাধে গুনাহগার হতে হবে।

সালামের উত্তর- ( وَ عَلَيْكُمُ السَّلَام : ওয়া আলাইকুমুস সালাম) মুখে উচ্চারণ না করে শুধু মাথা নাড়লে কিংবা হাতে ইশারা করলে সালামের উত্তর দেওয়ার ওয়াজিব আদায় হবে না। বরং ন্যূনতম নীরবে কিংবা নিঃশব্দে উচ্চারণ করার মাধ্যমে সালামের উত্তর দিতে হবে। যদি কেউ নীরবে সালামের উত্তর দেয় কিংবা নিঃশব্দে মনে মনে সালামের উত্তর দেয় তবে ওয়াজিব আদায় হয়ে যাবে। মুখে উচ্চারণ ছাড়া মাথা নেড়ে কিংবা হাতে ইশারা করলে সালামের ওয়াজিব আদায় হবে না।

সালাম হলো দোয়া। সালামের অর্থ হলো- আপনার ওপর শান্তি এবং বরকত বর্ষিত হোক। সুতরাং সালামের উত্তরও সুন্দরভাবে সালাম প্রদানকারীকে শুনিয়ে তার জন্য এভাবে দোয়া করা যে, আপনার ওপরও শান্তি ও বরকত বর্ষিত হোক।হাদিসের নির্দেশনা হলো- সম্ভব হলে আরো বেশি বাড়িয়ে দোয়া করা। দোয়া করা সম্পর্কে কোরআনুল কারিমে আল্লাহ তাআলা বলেন, وَإِذَا حُيِّيْتُم بِتَحِيَّةٍ فَحَيُّواْ بِأَحْسَنَ مِنْهَا أَوْ رُدُّوهَا إِنَّ اللّهَ كَانَ عَلَى كُلِّ شَيْءٍ حَسِيبًا
অর্থ: ‘আর যদি কেউ তোমাদের জন্য দোয়া করে (সালাম দেয়), তাহলে তোমরাও তার জন্য দোয়া কর। তার চেয়ে উত্তম দোয়া অথবা তারই মতো ফিরিয়ে বল। নিশ্চয়ই আল্লাহ সব বিষয়ে হিসাব-নিকাশ গ্রহণকারী’। (সূরা: নিসা, আয়াত: ৮৬)

সুতরাং সালামের উত্তর না দিয়ে কিংবা মাথা নেড়ে বা হাতে ইশারার দ্বারা সালামের উত্তর দেওয়ার মতো ওয়াজিব তরকের অপরাধ না করাই সবার উত্তম। এভাবে সালামের উত্তর দিয়ে কার্পণ্য প্রদর্শন করে নিজেকে অযথা গুনাহগার করা মোটেও কাম্য নয়।

আমাদের মনে রাখতে হবে, পারষ্পরিক সালাম বিনিময়ের মাধ্যমে পারষ্পরিক ভালোবাসা ও আন্তরিকতা বৃদ্ধি পায়। আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে আন্তরিকতার সঙ্গে একে অপরকে সালাম বিনিময় করার তাওফিক দান করুন। আমিন।

সর্বশেষ
জনপ্রিয়