ঢাকা, সোমবার   ২০ মে ২০২৪ ||  জ্যৈষ্ঠ ৫ ১৪৩১

ঋণের তৃতীয় কিস্তি প্রদানে সম্মত হল আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল

নিউজ ডেস্ক

প্রকাশিত: ১০:৩০, ৮ মে ২০২৪  

ঋণের তৃতীয় কিস্তি প্রদানে সম্মত হল আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল

ঋণের তৃতীয় কিস্তি প্রদানে সম্মত হল আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল

আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) ঋণের তৃতীয় কিস্তি (প্রায় ৭০ কোটি ডলার) প্রদানে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে। চলতি মাসের শেষ নাগাদ অথবা জুনের শুরুতে এই অর্থ ছাড়ের বিষয়টি নিশ্চিত করেছে আইএমএফ। এ লক্ষ্যে আগামী জুনভিত্তিক লক্ষ্যমাত্রা পুনর্নির্ধারণ এবং সংশোধিত শর্তগুলো (রিভাইজড টার্মস অ্যান্ড কন্ডিশন) সংযুক্ত করে  সমঝোতা স্মারকে স্বাক্ষর করেছে অর্থমন্ত্রণালয় ও আইএমএফ।

আজ সংস্থার প্রতিনিধি দল ওয়াশিংটনে ফিরে যাওয়ার আগে অর্থনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে তাদের নিজস্ব মতামত তুলে ধরবে। একই সঙ্গে আগামী বাজেট সামনে রেখে সরকারি ব্যয় কমিয়ে আয় বাড়াতে বেশকিছু পরামর্শ দেবে আইএমএফ। বিশেষ করে কর জিডিপি বাড়ানো, বাস্তবায়নযোগ্য বাজেট প্রণয়ন, মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ করে জনমনে স্বস্তি ফিরিয়ে আনা, কর্মসংস্থান সৃষ্টি, কর ও ভ্যাট আদায়ে জোর এবং বৈদেশিক মুদ্রা ডলারের রিজার্ভ বাড়ানোর বিষয়ে তাগিদ দিবে সংস্থাটি। অর্থ মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। 
এদিকে, গত ২৪ এপ্রিল ঢাকায় সফরে আসা আইএমএফের ডেভেলপমেন্ট মাইক্রোইকোনোমিক্স ডিভিশনের প্রধান ক্রিস পাপাগেওর্জিউর নেতৃত্বে প্রতিনিধি দল সুনির্দিষ্ট বিষয়ে অর্থ মন্ত্রণালয়, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি বিভাগ, বাংলাদেশ ব্যাংক এবং জাতীয় রাজস্ব বোর্ডসহ (এনবিআর) সরকারের বিভিন্ন দপ্তরের সঙ্গে কয়েক দফা বৈঠক করে।

এসব  বৈঠকের তথ্যের ভিত্তিতে মিশন মঙ্গলবার অর্থ বিভাগ ও বাংলাদেশ ব্যাংকের সঙ্গে সার্বিকভবে পর্যালোচনামূলক  বৈঠকে তৃতীয় কিস্তি ছাড়ের আশ্বাসের পাশাপাশি ঐক্যমত্যের ভিত্তিতে আগামী জুনভিত্তিক লক্ষ্যমাত্রা পুনর্নির্ধারণ এবং সংশোধিত শর্তগুলো (রিভাইজড টার্মস এন্ড কন্ডিশন) সংযুক্ত করে চূড়ান্ত করা সমঝোতা স্মারকে স্বাক্ষর করে। 
ফিরে যাওয়ার আগে প্রতিনিধি দলটি আজ অর্থ প্রতিমন্ত্রী ওয়াসিকা আয়েশা খানের সঙ্গে সৌজন্য স্বাক্ষাৎ করবে। একই দিন সন্ধ্যায় অর্থ মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে সংবাদ সম্মেলন করে ঢাকা ছাড়বে প্রতিনিধি দলটি। মিশনটির চূড়ান্ত করা সমঝোতা স্মারকের ভিত্তিতে চলতি মাসের শেষ নাগাদ ওয়াশিংটনে আইএমএফের প্রধান কার্যালয়ে অনুষ্ঠিতব্য পরিচালনা পর্ষদের বোর্ড সভায় তৃতীয় কিস্তি ছাড়ের চূড়ান্ত অনুমোদন হওয়ার কথা রয়েছে।  
গত ডিসেম্বর নাগাদ শর্ত পরিপালনের ভিত্তিতে ঋণের তৃতীয় কিস্তি পেতে যাচ্ছে বাংলাদেশ। এ সময়ে নির্ধারিত পরিমাণগত ও কাঠামোগত ১০টি শর্তের মধ্যে রিজার্ভ ছাড়া নয়টি লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হয়েছে। প্রাথমিকভাবে আইএমএফের তৃতীয় কিস্তি ছাড়ের জন্য গত ডিসেম্বর পর্যন্ত সময়ে নিট বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ২৬ দশমিক ৮১ বিলিয়ন ডলারে উন্নীত করার লক্ষ্যমাত্রা দেওয়া হয়েছিল।

কিন্তু পরবর্তীতে বৈশ্বিক অর্থনৈতিক পরিস্থিতিতে রিজার্ভ বড় ধরনের উন্নয়নের উন্নতি না হওয়ায় বাংলাদেশের অনুরোধের পরিপ্রেক্ষিতে লক্ষ্যমাত্রা কমিয়ে ১৭ দশমিক ৭৮ বিলিয়ন ডলারে নামিয়ে আনা হয়। তার পরও বাংলাদেশ এ লক্ষ্য েেথকে ৫৮ মিলিয়ন ডলার পিছিয়ে ছিল। এ শর্ত পূরণ না হওয়ায় আনুষ্ঠানিকভাবে অব্যাহতি চাইতে হলেও তৃতীয় কিস্তি ছাড়ের জন্য তা বাধা হচ্ছে না।  

উল্লেখ্য, বৈদেশিক মুদ্রা রিজার্ভ কমতে থাকার মধ্যে গত বছরের জানুয়ারিতে আইএমএফের সঙ্গে ৪৭০ কোটি ডলারের ঋণচুক্তি করে বাংলাদেশ। ২০২৬ সাল পর্যন্ত মোট সাতটি কিস্তিতে ঋণের পুরো অর্থ ছাড় করার কথা রয়েছে। ইতোমধ্যে দুই কিস্তিতে ১১৫ কোটি ৮২ লাখ ডলার ছাড় করেছে। সবকিছু ঠিক থাকলে তৃতীয় কিস্তির ৬৮ কোটি ২০ লাখ ডলার ছাড় হবে চলতি মাসের শেষ নাগাদ।

ব্যবসা বাণিজ্য বিভাগের সর্বাধিক পঠিত
সর্বশেষ
জনপ্রিয়