ঢাকা, শনিবার   ০৪ মে ২০২৪ ||  বৈশাখ ২০ ১৪৩১

আগামী বাজেটে দেশীয় শিল্প বিকাশে থাকছে বিশেষ নজর

নিউজ ডেস্ক

প্রকাশিত: ১১:৩১, ২১ এপ্রিল ২০২৪  

আগামী বাজেটে দেশীয় শিল্প বিকাশে থাকছে বিশেষ নজর

আগামী বাজেটে দেশীয় শিল্প বিকাশে থাকছে বিশেষ নজর

মূল্যস্ফীতির চাপ, ডলার সংকট, শেয়ারবাজারে নিম্নগতি, বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ হ্রাস, খেলাপি ঋণ বৃদ্ধি এবং রপ্তানি আয় ও রাজস্ব আহরণে ভাটাসহ অর্থনীতির বিভিন্ন সূচকে দেশের অবস্থান সন্তোষজনক নয়। ২০২০ সালে করোনার হানা এবং পরবর্তী সময়ে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাব অর্থনীতির এসব সূচক দুর্বল থেকে দুর্বলতর করেছে। নতুন করে দেশের অর্থনীতির জন্য দুশ্চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে ইরান-ইসরায়েল যুদ্ধের আভাস। এর সঙ্গে দেশি-বিদেশি ঋণ ও সুদ পরিশোধে বড় ধরনের চাপের মুখে পড়েছে অর্থনীতি। এর মধ্যে চলছে আগামী ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেট তৈরির কাজ। জাতীয় রাজস্ব বোর্ড সূত্র জানিয়েছে, আগামী অর্থবছরের বাজেটে দেশীয় শিল্প বিকাশে থাকছে বিশেষ নজর। এমন উদ্যোগের ফলে ডলার সাশ্রয়, কর্মসংস্থান তৈরি এবং রপ্তানি করে ডলার আয়ে বড় ভূমিকা রাখবে বলে মনে করে এনবিআর। জানা গেছে, দেশে

বৃহৎ শিল্পের বিকাশ এবং আমদানি বিকল্প শিল্প উৎপাদন বিনির্মাণে ‘মেইড ইন বাংলাদেশ’ ব্র্যান্ড প্রতিষ্ঠায় সরকার বদ্ধপরিকর। আগামী ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেটে আমদানিকৃত বিলাসবহুল পণ্যের দাম আরও বাড়ানোর উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। তবে এসব পণ্যের দেশীয় উদ্যোক্তাদের জন্য সুখবর দিতে যাচ্ছে সরকার।

সূত্র জানায়, ‘মেইড ইন বাংলাদেশ’ পরিকল্পনার ওপর জোর দিয়ে সরকার উৎপাদনের সঙ্গে জড়িত থাকা কোম্পানির করপোরেট করের হার ২ দশমিক ৫০ শতাংশ কমিয়ে আনা হতে পারে। জানা গেছে, সরকার পোল্ট্রি ও মৎস্যশিল্পের করছাড় প্রত্যাহারের উদ্যোগ নিয়েও কাজ করছে। করছাড়ের উদ্দেশ্য হলো, দেশীয় শিল্পকে আরও প্রতিযোগিতামূলক হয়ে উঠতে সহায়তা করা।

এনবিআর সূত্রে জানা গেছে, বিলাসবহুল পণ্যের আলাদাভাবে কোনো সংজ্ঞা নেই। আগে একটা সময়ে এসি, ফ্রিজ ও গাড়ি বিলাসবহুল পণ্যের কাতারে থাকলেও বর্তমান প্রেক্ষিতে পণ্যটিকে মানুষজন নিত্যপ্রয়োজনীয় হিসেবেই দেখছে। তারপরও বিদেশি এসি আমদানিতে শুল্কহার আগের চেয়েও বাড়ানো হতে পারে। এতে দেশীয় উৎপাদকরা সুবিধা পাবেন।

বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিসংখ্যান বিশ্লেষণে দেখা যায়, ২০২৪ সালের ২০ মার্চ দেশের রিজার্ভ ছিল ২৫ দশমিক ২৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। এর এক বছর আগে এই রিজার্ভের পরিমাণ ছিল ৩১ দশমিক ২৫ বিলিয়ন ডলার। বিশ্বব্যাপী করোনা ভাইরাস মহামারীর পর রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের জেরে ডলারের বাজার ঊর্ধ্বমুখী। তাই বেশ অনেক দিন ধরেই আমদানিতে লাগাম টানার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল সরকার। এবারের বাজেটে এই কার্যক্রম আরও গতিশীল হবে বলে জানা গেছে। একই সঙ্গে এই উদ্যোগে ‘মেইড ইন বাংলাদেশ’ এজেন্ডা আরও উৎসাহিত হবে।

বেসরকারি গবেষণা সংস্থা পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের (পিআরআই) নির্বাহী পরিচালক আহসান এইচ মনসুর বলেন, দেশীয় শিল্পে এসব সুযোগ-সুবিধা দেওয়া হলেও তা কতটা ভোক্তাপর্যায়ে পাওয়া যাবে তা দেখা দরকার। দেশে এ ধরনের সুবিধা শিল্পোদ্যোক্তারা পেলেও ভোক্তারা পান না। ভোক্তারা যাতে এ সুবিধা ভোগ করতে পারেন, সেদিকে নজর দিতে হবে।

এদিকে অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্র জানিয়েছে, আগামী বাজেটে অগ্রাধিকার দেওয়া হচ্ছে ১০টি খাতকে। এর মধ্যে রয়েছে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ। ‘সবার জন্য খাদ্য’, পণ্য সরবরাহ ব্যবস্থার উন্নয়ন, প্রবৃদ্ধি অর্জন, সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির আওতা বৃদ্ধি, প্রতিটি গ্রামকে আধুনিকায়ন করা, জিডিটাল স্বাস্থ্য ও শিক্ষাব্যবস্থা নিশ্চিতকরণ, ফাস্ট ট্র্যাক অবকাঠামো প্রকল্পে গুরুত্ব দেওয়া, জলবায়ু অভিঘাত মোকাবিলা এবং বৈশ্বিক সংকট মোকাবিলায় পদক্ষেপ গ্রহণ।

ব্যবসা বাণিজ্য বিভাগের সর্বাধিক পঠিত
সর্বশেষ
জনপ্রিয়