রোহিঙ্গারা বাংলাদেশের জন্য বহুমুখী সঙ্কটের কারণ
অনলাইন ডেস্ক
ফাইল ছবি
বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্তবর্তী অঞ্চলে জান্তা বাহিনী ও সশস্ত্র আরাকান আর্মির যুদ্ধ চলছে। সীমান্ত এলাকায় আরাকান আর্মির ঘাঁটি। সেখানেই জান্তা বাহিনী মর্টারশেল ও গোলা নিক্ষেপ করছে। আশঙ্কার বিষয়, তাদের ছোঁড়া মর্টারশেল ও গোলা এসে পড়ছে বাংলাদেশের অভ্যন্তরে। বাংলাদেশের আকাশসীমায় প্রবেশ করছে মিয়ানমারের হেলিকপ্টার। সম্প্রতি মিয়ানমার থেকে আসা গোলা সীমান্তের শূন্যরেখায় অবস্থিত রোহিঙ্গা ক্যাম্পে বিস্ফোরিত হলে একজন নিহত ও পাঁচজন আহত হওয়ার অনাকাক্সিক্ষত ঘটনা ঘটে। একই দিনে সীমান্তে মাইন বিস্ফোরণে এক বাংলাদেশী যুবকের পা উড়ে যায়।
বাংলাদেশের অভ্যন্তরে গোলা-মর্টারশেল নিক্ষেপ ও বাংলাদেশের আকাশসীমায় অনুপ্রবেশের ঘটনা প্রমাণ করে যে, মিয়ানমারের জান্তা সরকার কতটা দুর্বিনীত ও বেপরোয়া। এমন অযাচিত, অপ্রতিবেশীসুলভ ও উস্কানিমূলক আচরণ বাংলাদেশ-মিয়ানমার দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে এক নতুন ক্ষত। এই ধরনের আচরণ আন্তর্জাতিক আইনের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন ও জাতিসংঘ সনদের চরম অবমাননা।
মিয়ানমার বাংলাদেশের প্রতিবেশী রাষ্ট্র। প্রতিবেশী দেশের সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রাখাই কূটনীতির অংশ হওয়া উচিত। আমাদের পররাষ্ট্রনীতির মূল মন্ত্রই হচ্ছে ‘সবার সঙ্গে বন্ধুত্ব, কারও সঙ্গে বৈরিতা নয়’। বঙ্গবন্ধুর এই পররাষ্ট্রনীতি অনুসরণ করে বাংলাদেশ আন্তঃরাষ্ট্রীয় সুসম্পর্ক বজায় রেখে এগিয়ে যাচ্ছে। মিয়ানমারের অভ্যন্তরীণ সংঘাতের প্রভাব নিজ অঞ্চলে পড়ার পরও বাংলাদেশ সর্বোচ্চ সংযম দেখাচ্ছে বলে তাৎপর্যবহ মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। শান্তিপ্রিয় জাতি হিসেবে আমরা কোন দেশের সঙ্গে সংঘাত-সংঘর্ষ চাই না। যুদ্ধ কিংবা বৈরিতা নয়, শান্তিপূর্ণভাবেই মিয়ানমার সমস্যার সমাধান চায় বাংলাদেশ। মিয়ানমারকেও প্রতিবেশী রাষ্ট্র বাংলাদেশের সার্বভৌমত্বের প্রতি শ্রদ্ধাশীল থাকা উচিত।
বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার ঘুমধুম সীমান্তের ওপারে আশ্রয়শিবিরে মর্টারশেল ও গোলা নিক্ষেপের ঘটনা পরিকল্পিত হতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন অনেকে। কারণ, মিয়ানমারের জান্তা বাহিনী বহু আগে থেকেই আশ্রয়শিবিরের রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশে সরিয়ে দেয়ার পরিকল্পনা এটেছে! কিন্তু আশ্রয়শিবিরের পেছনে রাখাইন রাজ্যেই রোহিঙ্গাদের বাড়ি হওয়ায় এ স্থান ছেড়ে অন্যত্র যেতে রাজি নয় তারা। এমনিতেই মিয়ানমারে সংঘাতের জেরে ১১ লাখের বেশি রোহিঙ্গা শরণার্থীর বোঝা বাংলাদেশকে টানতে হচ্ছে। যা আমাদের অর্থনীতি ও পরিবেশের ওপর মারাত্মক চাপ সৃষ্টি করেছে। বাংলাদেশ রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিয়েছিল মানবিক বিবেচনায়।
রোহিঙ্গারা এখন বাংলাদেশের জন্য বহুমুখী সঙ্কটের কারণ হয়ে দাঁড়াচ্ছে। টেকনাফ ও উখিয়া উপজেলায় অবস্থিত রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবিরগুলোয় ক্রমবর্ধমান অপরাধ বাংলাদেশের জন্য সমস্যা হয়ে দেখা দিয়েছে। মাদক পাচারের অন্যতম উৎস হয়ে দাঁড়িয়েছে শিবিরগুলো। সশস্ত্র অপরাধী দলগুলো নিয়মিত সংঘাতে লিপ্ত হয়, খুন-খারাবি-মাদক পাচার সেখানে নৈমিত্তিক ঘটনা। তাদের এসব কার্যকলাপ পরোক্ষভাবে মিয়ানমার জান্তার পক্ষে যাচ্ছে, যা কাম্য নয়। মিয়ানমার তাদের নাগরিকদের ফেরত না নিয়ে উল্টো বাংলাদেশ সীমান্তে মর্টারশেল নিক্ষেপ করছে। মিয়ানমারের এই উস্কানি অব্যাহত থাকলে দুই দেশের মধ্যকার কূটনৈতিক সম্পর্ক জটিল আকার ধারণ করবে। আমরা আশা করব, ভবিষ্যতে মিয়ানমার বাংলাদেশের সঙ্গে সৎ প্রতিবেশীসুলভ আচরণ করবে। তাদের ছোড়া মর্টারশেল বা গোলা আর যাতে বাংলাদেশ সীমান্তে এসে না পড়ে, সে বিষয়ে সতর্ক দৃষ্টি রাখবে।
বাংলাদেশ প্রতিবেশী দেশগুলোর সঙ্গে সম্প্রীতি ও সৌহার্দ্যমূলক সম্পর্ক বজায় রাখার ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ গুরুত্বারোপ করে আসছে।
- পদ্মা সেতুতে স্বয়ংক্রিয়ভাবে টোল আদায় হবে মাত্র তিন সেকেন্ডে
- Turkey donates sea ambulance for Rohingyas in Bhasanchar
- পদ্মা সেতুর তেলেসমাতি: শরীয়তপুরের জমি এখন স্বর্ণ
- স্মার্ট বাংলাদেশ: পথচলা ও রূপরেখা
- স্বপ্ন পূরণের দ্বারপ্রান্তে বঙ্গবন্ধু টানেল
- কালনা সেতু: দেশের প্রথম ৬ লেনের সেতু
- ১৫ লাখ কৃষককে বিনা মূল্যে সার-বীজ
- পদ্মাসেতুর কারণে কমছে দুরত্ব, ভোগান্তি ও ভাড়া
- মাত্র ৭ থেকে ৮ মিনিটেই পদ্মার এপার ওপার
- পদ্মাসেতুর টোলসহ ১৩ রুটের বাস ভাড়া নির্ধারণ করেছে বিআরটিএ