উদ্বোধনের অপেক্ষায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টানেল
অনলাইন ডেস্ক
![ছবি: সংগৃহীত ছবি: সংগৃহীত](https://www.sherpurnews.com/media/imgAll/2020Aprila/অপেক্ষায়-বঙ্গবন্ধু-শেখ-মুজিবুর-রহমান-টানেল-2309172322.jpg)
ছবি: সংগৃহীত
চট্টগ্রামে কর্ণফুলী নদীর তলদেশে নির্মিত দেশের প্রথম টানেল বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টানেলটি উদ্বোধনের দিন গুনছে। কাজের অগ্রগতি সাড়ে ৯৮ শতাংশ। এরই মধ্যে টানেলের পূর্তকাজ শেষ হয়েছে। উদ্বোধন হবে ২৮ অক্টোবর। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২৮ অক্টোবর টানেল উদ্বোধন করার পর আনোয়ারা প্রান্তে সুধী সমাবেশে বক্তব্য দেবেন। টানেলের ভেতরে যান চলাচল উন্মুক্ত করে দেওয়া হবে পরদিন। চট্টগ্রাম সার্কিট হাউসে টানেল উদ্বোধন উপলক্ষে আয়োজিত এক প্রস্তুতি সভায় এ তথ্য নিশ্চিত করেন সেতু সচিব মো. মনজুর হোসেন।
প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা জানান, এই টানেলের নামকরণ করা হয়েছে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নামে। চীনের সাংহাই নগরীর আদলে বন্দরনগরী চট্টগ্রামকে ‘ওয়ান সিটি, টু টাউন’ মডেলে গড়ে তুলতে নগরীর পতেঙ্গা ও দক্ষিণ চট্টগ্রামের আনোয়ারার মধ্যে সংযোগ স্থাপনে কর্ণফুলী নদীর তলদেশে টানেল নির্মাণের উদ্যোগ নেয় সরকার। ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক থেকে সিটি আউটার রিং রোড দিয়ে পতেঙ্গা প্রান্তে টানেলে প্রবেশ করে আনোয়ারা প্রান্তে পটিয়া-আনোয়ারা-বাঁশখালী সড়কের চাতুরী চৌমুহনী পয়েন্টে ওঠা যাবে। ফলে ঢাকা-চট্টগ্রাম ও কক্সবাজারের মধ্যে আধুনিক যোগাযোগ ব্যবস্থা গড়ে উঠবে এবং এশিয়ান হাইওয়ের সঙ্গে সংযোগ স্থাপিত হবে। যোগাযোগ ব্যবস্থার ব্যাপক উন্নয়ন সাধিত হবে। এতে ভ্রমণ সময় ও খরচ হ্রাস পাবে এবং পূর্বপ্রান্তের শিল্প-কারখানার কাঁচামাল, প্রস্তুতকৃত মালামাল, চট্টগ্রাম বন্দর, বিমানবন্দর ও দেশের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে পরিবহন প্রক্রিয়া সহজ হবে। কর্ণফুলী নদীর পূর্ব প্রান্তের সঙ্গে সহজ যোগাযোগ ব্যবস্থা স্থাপনের ফলে পূর্ব প্রান্তে পর্যটনশিল্প বিকশিত হবে।
প্রকল্প সূত্রে জানা গেছে, ২০১৯ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বঙ্গবন্ধু টানেলের নির্মাণকাজ উদ্বোধন করেন। এছাড়াও পতেঙ্গা ও আনোয়ারা প্রান্তে ৫ দশমিক ৩৫ কিলোমিটার সংযোগ সড়ক এবং আনোয়ারা প্রান্তে ৭২৭ মিটার একটি ওভারব্রিজ নির্মাণ করা হচ্ছে। টানেলের কাজের অগ্রগতি সাড়ে ৯৮ শতাংশেরও বেশি। বর্তমানে যান্ত্রিক ও বৈদ্যুতিক (ইলেকট্রো মেকানিক্যাল) কাজ চলছে। ৩ দশমিক ৪ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যরে মূল টানেল ছাড়াও বন্দর নগরী চট্টগ্রামের পতেঙ্গা ও আনোয়ারা উপজেলা প্রান্তে ৫ দশমিক ৩৫ কিলোমিটার দীর্ঘ সংযোগ সড়কের কাজও শেষ হয়েছে। সব মিলিয়ে টানেল নির্মাণে ব্যয় হচ্ছে প্রায় ১০ হাজার ৬৮৯ কোটি টাকা।
বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষ এই প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে। চীনের চায়না কমিউনিকেশনস, কনস্ট্রাকশনস কোম্পানি (সিসিসিসিএল) লিমিটেড এই টানেলের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। দুই টিউবের এই টানেল নির্মাণকাজ শেষ হলে ৪ লেন দিয়ে ঘণ্টায় ৮০ কিলোমিটার গতিতে গাড়ি চলাচল করতে পারবে। কর্ণফুলী নদীর পূর্ব প্রান্তে প্রস্তাবিত শিল্প এলাকার উন্নয়ন ত্বরান্বিত হবে এবং পশ্চিম প্রান্তে অবস্থিত চট্টগ্রাম নগরী, চট্টগ্রাম বন্দর ও বিমানবন্দরের সঙ্গে উন্নত ও সহজ যোগাযোগ ব্যবস্থা স্থাপিত হবে।
এদিকে চট্টগ্রাম সার্কিট হাউজে টানেল উদ্বোধনের প্রস্তুতি সভায় চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার মো. তোফায়েল ইসলাম বলেন, টানেল নিয়ে নেতিবাচক প্রচারণা হতে পারে। এ বিষয়ে সবাইকে সচেতন থাকতে হবে। নেতিবাচক প্রচারণা চালালে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ব্যবস্থা নেবে।
সভায় সেতু সচিব মো. মনজুর হোসেন বলেন, টানেলের মধ্যে জনসাধারণের জন্য নির্দেশনা ব্যবস্থা থাকবে এবং সেখানে ৮টি রেডিও চ্যানেলে স্বয়ংক্রিয়ভাবে নির্দেশনাগুলো চলতে থাকবে। টানেলের ভেতর যে ফ্রিকোয়েন্সিই থাকুক না কেন, গাড়ি যতক্ষণ টানেলে থাকবে ততক্ষণ স্বয়ংক্রিয়ভাবে এ দিক-নির্দেশনা চলবে। তিনি বলেছেন, ‘টানেলে কোন গাড়ি চলতে পারবে এবং কোনটি চলতে পারবে না- সে বিষয়ে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। টোল হার নির্ধারণ হয়েছে। পুলিশের পক্ষ থেকে বেশ কিছু সুপারিশ এসেছে, যা আমরা বিবেচনা করছি।’
- পদ্মা সেতুতে স্বয়ংক্রিয়ভাবে টোল আদায় হবে মাত্র তিন সেকেন্ডে
- Turkey donates sea ambulance for Rohingyas in Bhasanchar
- পদ্মা সেতুর তেলেসমাতি: শরীয়তপুরের জমি এখন স্বর্ণ
- স্মার্ট বাংলাদেশ: পথচলা ও রূপরেখা
- স্বপ্ন পূরণের দ্বারপ্রান্তে বঙ্গবন্ধু টানেল
- কালনা সেতু: দেশের প্রথম ৬ লেনের সেতু
- ১৫ লাখ কৃষককে বিনা মূল্যে সার-বীজ
- পদ্মাসেতুর কারণে কমছে দুরত্ব, ভোগান্তি ও ভাড়া
- মাত্র ৭ থেকে ৮ মিনিটেই পদ্মার এপার ওপার
- পদ্মাসেতুর টোলসহ ১৩ রুটের বাস ভাড়া নির্ধারণ করেছে বিআরটিএ