আট লাখ কোটি টাকার বাজেট উত্থাপনের প্রস্তুতি চলছে
নিউজ ডেস্ক
![আট লাখ কোটি টাকার বাজেট উত্থাপনের প্রস্তুতি চলছে আট লাখ কোটি টাকার বাজেট উত্থাপনের প্রস্তুতি চলছে](https://www.sherpurnews.com/media/imgAll/2020Aprila/New-Project-32-2405150358.jpg)
আট লাখ কোটি টাকার বাজেট উত্থাপনের প্রস্তুতি চলছে
উচ্চ মূল্যস্ফীতির এই সময়ে আওয়ামী লীগ সরকারের চতুর্থ মেয়াদের প্রথম বাজেট জাতীয় সংসদে উত্থাপন করা হবে আগামী ৬ জুন বৃহস্পতিবার। নতুন অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলীরও এটি প্রথম বাজেট। ইতোমধ্যে ২০২৪-২০২৫ অর্থবছরের জন্য প্রায় আট লাখ কোটি টাকার বাজেট উত্থাপনের প্রস্তুতি চলছে।
অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্র জানিয়েছে, এবারের বাজেট তৈরি হচ্ছে অত্যন্ত সুকৌশলে। প্রতি বছর বাজেটের প্রবৃদ্ধি সংকোচনমূলক ধরেই এবারের হিসাব প্রাক্কলন করা হয়েছে। বাজেট হবে ব্যয় সংকোচনমূলক। ফলে বাজেটের আকার এবার খুব বেশি বাড়ছে না।
জানা গেছে, নতুন অর্থবছরের বাজেটের আকার হতে পারে ৭ লাখ ৯৬ হাজার ৯০০ কোটি টাকার কমবেশি। তবে তা ৮ লাখ কোটি অতিক্রম করবে না। এটি বর্তমান ২০২৩-২৪ অর্থবছরের চলমান বাজেটের তুলনায় চার দশমিক ৬০ শতাংশ বেশি। টাকার অঙ্কে নতুন অর্থবছরের বাজেট বাড়ছে ৩৫ হাজার ১১৫ কেটি টাকা, যা মোট জিডিপির ১৩ শতাংশ। সম্প্রতি মন্ত্রণালয় ও বিভাগগুলোর সঙ্গে অনুষ্ঠিত বৈঠকের মাধ্যমে এই আকার নির্ধারণ করা হচ্ছে। যদিও বিষয়টি এখনও চূড়ান্ত হয়নি।এদিকে, সোমবার গণভবনে অনুষ্ঠিত এক বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেটকে ব্যয় সংকোচনমুখী করার পরামর্শ দিয়েছেন। আগামী বাজেটে বিলাসপণ্য আমদানিকে নিরুৎসাহিত করার পক্ষে মত দিয়েছেন তিনি। প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণই হবে আগামী বাজেটের সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার।
বৈঠক সূত্রে জানা গেছে,মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ, সরাসরি বৈদেশিক বিনিয়োগ (এফডিআই) বৃদ্ধি, যথাযথভাবে আমদানি নিয়ন্ত্রণ, সতর্কতার সঙ্গে উন্নয়ন প্রকল্প হাতে নেওয়া, রাজস্ব সংগ্রহ বৃদ্ধি ও এ জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া, বৈধ পথে প্রবাসী আয় বৃদ্ধি, সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির আওতায় ভাতাভোগীর সংখ্যা বৃদ্ধি ইত্যাদি বিষয়ে জোর দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।
টার্গেট কোন কোন খাত
এবার রাজস্ব আয় বাড়ানোর বিপরীতে অপ্রয়োজনীয় ব্যয় কমানোর লক্ষ্য স্থির করেছে সরকারের আর্থিক মুদ্রা ও মুদ্রা বিনিময় হার সংক্রান্ত কো-অর্ডিনেশন কাউন্সিল এবং বাজেট ব্যবস্থাপনা ও সম্পদ কমিটি। এ কমিটি মনে করে, আগামী বাজেটের মূল টার্গেট মূল্যস্ফীতি কমানো। আর এই টার্গেট ফুলফিল করতে মূলত বাজেট তৈরি করা হবে ৫টি পিলারের ওপর দাঁড় করিয়ে। এগুলো হচ্ছে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে ব্যাংক ঋণের সুদের হার বাড়ানো হতে পারে, অপ্রয়োজনীয় আমদানি নিরুৎসাহিত বা কমানো হতে পারে, অযৌক্তিক ব্যয় কমানোর দিকনির্দেশনা থাকতে পারে, কিছু খাতে অর্থ সরবরাহ কমিয়ে আনা হতে পারে, কমানো হতে পারে বিভিন্ন খাতে ভর্তুকির পরিমাণ।
করের জাল বাড়বে
অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, আগামী বাজেটে বড় অঙ্কের রাজস্ব আহরণের জন্য ঢাকা ও চট্টগ্রামে মূল্য সংযোজন কর বা ভ্যাট জাল সম্প্রসারণ করা হবে। বিশেষ করে ইএফডি মেশিন স্থাপনের জন্য বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে চুক্তি করা হয়েছে। এছাড়া শনাক্ত করা হবে নতুন করদাতাও। নতুন করদাতাদের করজালে আনতে বিআরটিএ, সিটি করপোরেশন, ডিপিডিসির সঙ্গে সমন্বয় করে কাজ করার পরিকল্পনা নিয়েছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। এছাড়া ২০ লাখ টাকা বা তার ঊর্ধ্বে মূসক পরিশোধে ই-চালান বাধ্যতামূলক করা হচ্ছে। আগে সেটি ৫০ লাখ টাকার ক্ষেত্রে বাধ্যতামূলক ছিল। এছাড়া আয়কর আইন-২০২৩ প্রয়োগের মাধ্যমে রাজস্ব ব্যবস্থাপনার দক্ষতা বাড়ানো, আদায় বৃদ্ধি ও সেবার মান উন্নয়ন করা করার পরিকল্পনা করছে সরকার।
আসন্ন বাজেটে রাজস্ব আহরণের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হচ্ছে পাঁচ লাখ ৩১ হাজার ৯০০ কোটি টাকা। এটি মোট জিডিপির ৯ দশমিক ৪ শতাংশ। আগামী বাজেটে রাজস্ব আহরণের লক্ষ্যমাত্রা বাড়ছে প্রায় ৩২ হাজার কোটি টাকা। এত সামগ্রিক ঘাটতি (অনুদান ছাড়া) হতে পারে ২ লাখ ৬৫ হাজার কোটি টাকা।
সংশোধিত এডিপিতে কাটছাঁট
চলতি ২০২৩-২৪ অর্থবছরের এডিপিতে বৈদেশিক সহায়তার বরাদ্দ ধরা হয়েছিল ৯৪ হাজার কোটি টাকা। কিন্তু গত ১২ মার্চ অনুষ্ঠিত জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের (এনইসি) বৈঠকে অনুমোদন পাওয়া সংশোধিত এডিপিতে প্রায় সাড়ে ৯ হাজার কোটি টাকা কাটছাঁট করে বরাদ্দ নির্ধারণ করা হয় ৮৩ হাজার ৫০০ কোটি টাকা। গত অর্থবছরের এডিপিতে বৈদেশিক অংশের বরাদ্দ ছিল ৯২ হাজার ২০ কোটি টাকা, সংশোধিত এডিপিতে কমিয়ে এনে বরাদ্দ ধরা হয়েছিল ৭৪ হাজার ৫০০ কোটি টাকা। তবে অর্থবছর শেষে খরচ হয়েছিল আরও কম, অর্থাৎ ৬৭ হাজার ৩৪৪ কোটি টাকা।
একই চিত্র অন্য বছরগুলোতেও। ২০২১-২২ অর্থবছরে মূল এডিপিতে বরাদ্দ ছিল ৮৮ হাজার ২৪ কোটি টাকা, সংশোধিত এডিপিতে কমিয়ে ধরা হয় ৭২ হাজার ৬৭৭ কোটি টাকা। অর্থবছর শেষে খরচ হয়েছিল ৬৭ হাজার ৩৩৯ কোটি টাকা।
২০২০-২১ অর্থবছরের এডিপিতে বৈদেশিক অংশে বরাদ্দ ছিল ৭০ হাজার ৫০২ কোটি টাকা, কিন্তু সংশোধিত এডিপিতে বরাদ্দ কমিয়ে ধরা হয় ৬৩ হাজার ১ কোটি টাকা। শেষ পর্যন্ত খরচ হয়েছিল ৫২ হাজার ৫১৬ কোটি টাকা। একইভাবে ২০১৯-২০ অর্থবছরের এডিপিতে বরাদ্দ ছিল ৭১ হাজার ৮০০ কোটি, সংশোধিত এডিপিতে কমিয়ে ধরা হয় ৬২ হাজার কোটি টাকা। অর্থবছর শেষে খরচ হয়েছিল ৪৭ হাজার ৪৪ কোটি টাকা।
বৈদেশিক সহায়তা বাড়বে
এবারের বাজেটে বৈদেশিক সহায়তার পরিমাণ বাড়তে পারে দুই হাজার কোটি টাকা। নতুন অর্থবছরে বৈদেশিক অংশের বরাদ্দ ধরা হতে পারে ৯৬ হাজার কোটি টাকা, যা চলতি অর্থবছরে ছিল ৯৪ হাজার কোটি টাকা। এই অঙ্ক মূল এডিপির তুলনায় ২ হাজার কোটি টাকা বেশি এবং সংশোধিত এডিপির তুলনায় বেশি ১২ হাজার ৫০০ কোটি টাকা।
চার দিনের বৈঠক
অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ (ইআরডি) সূত্র জানায়, ২০২৪-২৫ অর্থবছরের এডিপিতে বিভিন্ন মন্ত্রণালয়, বিভাগ বা সংস্থার বৈদেশিক সহায়তাপুষ্ট প্রকল্পের বরাদ্দ নির্ধারণের জন্য চার দিনের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। এর আগে প্রকল্প সংশ্লিষ্টদের কাছে বরাদ্দের ধারণা চাওয়া হয়। বৈঠকগুলোয় বিস্তারিত আলোচনার পরই প্রকল্পভিত্তিক বরাদ্দের প্রাথমিক খসড়া তৈরি করা হয়।
এ প্রক্রিয়ায় গত ফেব্রুয়ারিতে প্রথম বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন ইআরডি সচিব শাহরিয়ার কাদের সিদ্দিকী। এদিন বৈঠকে বিদু্যৎ বিভাগসহ ১০ মন্ত্রণালয় ও বিভাগের কর্মকর্তারা অংশ নেন।
এরপর ২৯ ফেব্রম্নয়ারি দ্বিতীয় দিনের বৈঠকে স্থানীয় সরকার বিভাগসহ ৯টি মন্ত্রণালয় ও বিভাগ অংশ নেয়। ৩ মার্চ অনুষ্ঠিত তৃতীয় দিনের বৈঠকে অংশ নেন সড়ক পরিবহণ ও মহাসড়ক বিভাগসহ ১৩টি মন্ত্রণালয় ও বিভাগের কর্মকর্তারা। শেষ দিন ৪ মার্চ অংশ নেন ১৮টি মন্ত্রণালয় ও বিভাগের কর্মকর্তারা।
অগ্রাধিকার পাচ্ছে ১০ খাত
আসন্ন বাজেটে অগ্রাধিকার দেওয়া হচ্ছে ১০টি খাতকে। এর মধ্যে রয়েছে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ, ডিজিটাল স্বাস্থ্য ও শিক্ষাব্যবস্থা নিশ্চিতকরণ, ফাস্ট ট্র্যাক অবকাঠামো প্রকল্প গুরুত্ব দেওয়া, সবার জন্য খাদ্য, সরবরাহ ব্যবস্থা উন্নয়ন, প্রবৃদ্ধি অর্জন, জলবায়ু অভিঘাত মোকাবিলা এবং বৈশ্বিক সংকট মোকাবিলায় পদক্ষেপ গ্রহণ, সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির আওতা বৃদ্ধি এবং প্রতিটি গ্রামকে আধুনিকায়ন করা।
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী জানিয়েছেন, বাজেট তৈরির কাজ চলছে। অংশীজনদের সঙ্গে পরামর্শ করা হচ্ছে। বর্তমান সরকার সাধারণ মানুষের সরকার। কাজেই বাজেট হবে জনবান্ধব, এটা নিশ্চিত করে বলা যায়।
- টানা দ্বিতীয়বার আন্তর্জাতিক সুপার ব্র্যান্ড অ্যাওয়ার্ড পেল ওয়ালটন
- জাতীয় সঞ্চয়পত্রে বিনিয়োগের সীমা কমলো
- গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডস এর স্বীকৃতি পেলেন ব্যাংকার দিলিপ দাশগুপ্ত
- মিনিস্টার হাই-টেক পার্ক পরিদর্শনে কর্নেল তোফায়েল মোস্তফা সরোয়ার
- দেশ সেরা ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান ইভ্যালিতে যুক্ত হলো পারটেক্স বেভারেজ
- এবার ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যে গেল ৫ টন সবজি
- বাংলাদেশ ব্যাংকের সাথে ব্র্যাক ব্যাংকের চুক্তি স্বাক্ষর
- ৭১.৬ শতাংশ জাপানি কোম্পানি বাংলাদেশে ব্যবসা বাড়াতে চায়
- এক ধাক্কায় ২৫ টাকা কমেছে পেঁয়াজের দাম!
- ২০৩০ সালে ১০০ বিলিয়ন ডলারের পোশাক রপ্তানির লক্ষ্যমাত্রা