ঢাকা, শনিবার   ২০ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৬ ১৪৩১

স্তন ক্যান্সার নিয়ে স্কুল-কলেজে শিক্ষার্থীদের মাঝে সচেতনতা বাড়াতে হবে

হেলথ ডেস্ক

প্রকাশিত: ১৩:১১, ৩ জুলাই ২০২২  

সংগৃহীত

সংগৃহীত

প্রতিবছর নতুন করে অন্তত ১৫ হাজার নারী স্তন ক্যান্সারে আক্রান্ত হচ্ছেন। আক্রান্তদের বেশির ভাগই অল্প বয়সী। সচেতনতার অভাবে তারা আক্রান্ত হচ্ছেন। এজন্য পরিবার থেকেই সচেতনতা তৈরি প্রয়োজন। একইসঙ্গে স্কুল-কলেজ পর্যায় থেকে শিক্ষার্থীদের মাঝে সচেতনতা বাড়াতে হবে। প্রয়োজনে পাঠ্যক্রমে বিষয়টি যুক্ত করতে হবে। 

গতকাল শনিবার (২ জুন) জাতীয় প্রেসক্লাবে বাংলাদেশ স্তন ক্যান্সার সচেতনতা ফোরাম আয়োজিত ‘স্তন ক্যান্সার সচেতনতায় চাই সামাজিক আন্দোলন’ শীর্ষক আলোচনা সভায় এসব কথা বলেন বক্তারা।

ফোরামের প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান সমন্বয়কারী জাতীয় ক্যান্সার গবেষণা ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের অধ্যাপক ডা. মো. হাবিবুল্লাহ তালুকদার রাসকিনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রো-ভিসি অধ্যাপক ডা. ছয়েফ উদ্দিন আহমেদ, জাতীয় প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক ইলিয়াস খান ও জাতীয় ক্যান্সার গবেষণা ইনস্টিটিউটের পরিচালক ডা. স্বপন কুমার বন্দ্যোপাধ্যায়।

সভায় হাবিবুল্লাহ তালুকদার রাসকিন বলেন, সরকারিভাবে স্তন ক্যান্সার সচেতনতা দিবস ঘোষণা করতে হবে। সবার সঙ্গে আলোচনা করে প্রয়োজনে জাতীয় কমিটি গঠন করা হবে। ক্যান্সার চিকিৎসায় সারা দেশের আটটি মেডিকেল কলেজে ব্যবস্থা হয়েছে। প্রান্তিক অঞ্চলের মানুষের মাঝে সচেতনতা বাড়ানোর কাজ চলছে। একইসঙ্গে পাঠ্যক্রমে এটির সচেতনতায় যুক্ত করতে হবে। শুরুতেই সচেতন হলে এ রোগ প্রতিরোধ করা যাবে।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রো-ভিসি অধ্যাপক ডা. ছয়েফ উদ্দিন আহমেদ বলেন, স্তন ক্যান্সারে এক সময়ে ২২ হাজার নারী আক্রান্ত হতো, বিনা চিকিৎসায় মারা যেত ৭০ ভাগ। সচেতনতা বাড়াতে বর্তমানে সেটি কমেছে। স্তন ক্যান্সারের সার্জিক্যাল অপারেশনের জন্য যাতে কাউকে অন্য কোনো দেশে না যেতে হয় সেই চেষ্টা চলছে। তবে আমাদের গ্রামাঞ্চলে সচেতনতা বাড়াতে হবে। গ্রামে-গঞ্জে স্তন ক্যান্সারের রোগী খুঁজে চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে হবে। বিদেশের থেকে আমাদের দেশীয় চিকিৎসা অনেকটা ভালো। সরকারের কাছে আবেদন, ১০ অক্টোবরকে সচেতনতা দিবস ঘোষণা করতে হবে।

অধ্যাপক ডা. স্বপন কুমার বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, দেশের সব জেলা সদর হাসপাতালে স্ক্রিনিংয়ের ব্যবস্থা আছে। তবে ছোটকাল থেকেই যদি ছেলে-মেয়েদের সচেতন করা যায়, তাহলে অনেক বেশি কাজে দেবে। স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীদের সচেতনতায় কাজ করতে হবে। কমিউনিটি ক্লিনিক ও ইউনিয়ন স্বাস্থ্য কর্মীরা যদি বাড়ি বাড়ি গিয়ে খোঁজ নেন, তাহলে ডাটা (উপাত্ত) তুলে আনা সম্ভব। নারীদের স্তন, ওরাল ও সার্ভাইক্যাল ক্যান্সার নিয়ে বিশেষ করে স্তন ক্যান্সার নিয়ে সচেতনতামূলক নাটক তৈরির কাজ চলছে, যাতে দ্রুত সচেতন ও শনাক্ত করা যায়।

সভায় প্যানেল আলোচক হিসেবে বক্তব্য দেন সোসাইটি ফর হেলথ প্রমোশন লিংকসের সভাপতি ডা. হালিদা হানুম আক্তার। তিনি বলেন, নারীর কোনো একটি অঙ্গ তার মৃত্যুর কারণ হতে পারে। স্তন ক্যান্সার এ ক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় সমস্যা। তাই এ নিয়ে সচেতন হতে হবে। পরিবার থেকে প্রতিরোধ শুরু করতে হবে। বিশেষ করে নারীকেই সচেতন হতে হবে। মা জানলে মেয়ে সুস্থ থাকবে। শুধু নারী নয়, পুরুষদেরও এ বিষয়ে সচেতন করতে হবে।

আলোচনা সভায় বক্তব্য দেন, জাতীয় প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক ইলিয়াস খান, ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাধারণ সম্পাদক নুরুল ইসলাম হাসিব ও বাংলাদেশ হেলথ রিপোর্টার্স ফোরামের সাধারণ সম্পাদক মাইনুল হাসান সোহেল।

২০১৩ সালে স্তন ক্যান্সার সচেতনতা ফোরাম গঠন ও এর উদ্যোগে প্রতিবছর ১০ অক্টোবর বাংলাদেশে স্তন ক্যান্সার সচেতনতা দিবস পালিত হয়ে আসছে।  ফোরামের পক্ষ থেকে জাতীয়ভাবে দিবসটি পালনের দাবি জানানো হয়।

সর্বশেষ
জনপ্রিয়