ঢাকা, শনিবার   ২০ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৬ ১৪৩১

রাঙামাটির বাজারে হানিকুইন আনারসের সয়লাব

নিউজ ডেস্ক

প্রকাশিত: ১২:৫০, ১২ মে ২০২২  

সংগৃহীত

সংগৃহীত

পার্বত্য জেলা রাঙামাটির হানিকুইন আনারস পুরো দেশ জুড়ে বিখ্যাত। মৌসুমী রসালো মিষ্টি ফলটি বর্তমানে জেলার পুরো বাজার দখল করে আছে।

বিক্রেতাদের হাঁক-ডাক এবং ক্রেতা সমাগমে হাটগুলো বেজায় ব্যস্ত।  

চলতি বছর জেলায় আবহাওয়া ভালো থাকায় অন্যান্য বছরের তুলনায় ফলনও বেশ ভালো হয়েছে। স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে রসালো ফলটি জেলার বাইরে চট্টগ্রাম ও ঢাকার বাজারে যাচ্ছে।

পাহাড়ের মাটি আনারস চাষের উপযোগী হওয়ায় আবাদ বাড়ছে দিনদিন। পাহাড়ে উৎপাদিত ক্যামিক্যালমুক্ত রসালো ফলটির স্থানীয় বাজারের পাশাপাশি জেলার বাইরে চাহিদা রয়েছে বেশ। পাহাড়ের ভাঁজে ভাঁজে কৃষকরা চাষ করে ফলটি। কৃষকরা ইঞ্জিন চালিত নৌকায় করে রাঙামাটি শহরের সমতাঘাট, তবলছড়ি, পৌর ট্রাক টার্মিনাল এবং রির্জাভ বাজারে নিচ্ছেন এবং সেখান থেকে পাইকারি ব্যবসায়ীরা আনারস কিনে ট্রাকে করে জেলার বাইরে নিয়ে যাচ্ছেন।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর রাঙামাটি কার্যালয় সূত্র জানায়, হানিকুইন জাতের এ আনারস জেলায় চলতি মৌসুমে দুই হাজার একশ’ হেক্টর জমিতে চাষ করা হয়েছে। বর্তমানে আনারসের ব্যাপক চাহিদা। সেই সঙ্গে উৎপাদন ভালো হওয়ায় কৃষকদের আনারস চাষে উদ্বুদ্ধ করা হচ্ছে।

এদিকে রাঙামাটির বনরূপা, কলেজগেট, তবলছড়ি এবং রিজার্ভবাজার হাটগুলো ঘুরে দেখা গেছে, বড় প্রতি জোড়া আনারস ৬০ টাকা, মাঝারি ৪০ এবং ছোটগুলো ২০ টাকায় বিক্রি করা হচ্ছে। ফলন ভালো হওয়ায় এবং দাম হাতের নাগালে থাকায় বেজায় খুশি ক্রেতারা। রসালো ফলটি খেয়ে তৃপ্তির ঢেঁকুর তুলছেন তারা।

নানিয়ারচর উপজেলার আনারস চাষি দীপ্তিময় চাকমা বলেন, এ বছর ১০ একর পাহাড়ি জমিতে আনারস চাষ করেছি। উৎপাদনও হয়েছে বেশ। তবে উৎপাদন বেশি হওয়ায় বাজারে আনারসের দাম পূর্বের তুলনায় কিছুটা কম।  

জেলার আনারস ব্যবসায়ী রহমত মিয়া বলেন, কখনো লাভ বেশি আবার কখনো লোকসান গুণতে হয়। এ বছর উৎপাদন ভালো হওয়ায় আনারসের দাম অন্যান্য বছরের তুলনায় কিছুট কম।  

রাঙামাটিতে আনারস কিনতে আসা চট্টগ্রামের ব্যবসায়ী আসাদ সওদাগর বলেন, প্রতি বছর লাখ পিস আনারস কিনি রাঙামাটি থেকে। এ অঞ্চলের আনারস অত্যন্ত সুস্বাদু এবং ক্রেতাদের চাহিদা ব্যাপক রয়েছে। তাই প্রতি মৌসুমে এখান থেকে আনারস কিনে চট্টগ্রামে নিয়ে যাই।

আনারস কিনতে আসা আবুল ফজল বলেন, আমাদের অঞ্চলের মতো এত সুস্বাদু আনারস আমি এখনো খাইনি। দাম বেশি থাকুক বা না থাকুক, প্রতি বছর পরিবারের জন্য আনারস কিনে থাকি।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর রাঙামাটি কার্যালয়ের উপ-পরিচালক তপন কুমার পাল বলেন, চলতি মৌসুমে জেলায় হানিকুইন জাতের আনারসের ফলন ভালো হয়েছে। প্রতি বছর আনারসের চাহিদা বাড়ায় জেলায় আনারসের ফলন বাড়ছে। যে কারণে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর চাষিদের আনারস চাষে সব ধরনের সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিচ্ছে। কৃষকরাও লাভের মুখ দেখছেন।

কৃষক এবং ব্যবসায়ীদের অনেক বছরের দাবি, রাঙামাটিতে একটি হিমাগার দরকার। হিমাগার না থাকায় প্রতি বছর হাজার টন আনারসসহ অন্যান্য ফসল পচে যায়। যে কারণে উৎপাদিত ফল সংরক্ষণের জন্য একটি হিমাগার খুবই গুরত্বপূর্ণ। তাই জেলায় একটি হিমাগার তৈরির জন্য সরকারের কাছে জোর দাবি জানান ব্যবসায়ী এবং কৃষকরা।

সারাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত
সর্বশেষ
জনপ্রিয়