যুক্তরাষ্ট্র থেকে এলএনজি, ভারত থেকে ডাল কিনবে সরকার
নিউজ ডেস্ক
যুক্তরাষ্ট্র থেকে এলএনজি, ভারত থেকে ডাল কিনবে সরকার
যুক্তরাষ্ট্র থেকে এক কার্গো তরলিকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) এবং ভারত থেকে ৮ হাজার মেট্রিক টন মসুর ডাল কেনার দুটি প্রস্তাবসহ সাতটি ক্রয় প্রস্তাবের অনুমোদন দিয়েছে সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি। এতে মোট ব্যয় হবে ১ হাজার ২৯৬ কোটি ৭৫ লাখ ৮৩ হাজার ৭৬০ টাকা। মোট অর্থায়নের মধ্যে জিওবি থেকে ব্যয় হবে ৭১১ কোটি ২০ লাখ ৩৮ হাজার ২৫৮ টাকা এবং দেশীয় ব্যাংক, এডিবি ও বিশ্বব্যাংক ঋণ ৫৮৫ কোটি ৫৫ লাখ ৪৫ হাজার ৫০২ টাকা।
গতকাল বৃহস্পতিবার অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের সভাপতিত্বে অর্থনৈতিক বিষয়ে সপ্তম ও সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির ১১তম সভায় প্রস্তাবগুলোর অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। সভায় কমিটির সদস্য, মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সচিব, সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের সচিব ও ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। সভা শেষে অনুমোদিত প্রস্তাবগুলোর বিভিন্ন দিক তুলে ধরেন মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব সাঈদ মাহবুব খান।
অনুমোদিত প্রস্তাবনাগুলোর মধ্যে রয়েছে সড়ক পরিবহণ ও মহাসড়ক বিভাগের দু'টি, কৃষি মন্ত্রণালয়ের একটি, শিল্প মন্ত্রণালয়ের একটি, অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগের একটি, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ বিভাগের একটি এবং বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের একটি।
সভা শেষে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব সাঈদ মাহবুব খান সাংবাদিকদের জানান, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগের অধীন পেট্রোবাংলার মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রের এক্সিলারেট এনার্জি এলপি থেকে ৩৩ লাখ ৬০ হাজার এমএমবিটিইউ এলএনজি আমদানির অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এতে ব্যয় ধরা হয় ৫৭৮ কোটি ৬৫ লাখ ২৫ হাজার ১২২ টাকা।
এর আগে গত ৯ মার্চ অনুষ্ঠিত সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির সভায় সুইজারল্যান্ডের টোটাল ইঞ্জিনিয়ারিং গ্যাস অ্যান্ড পাওয়ার লিমিটেড থেকে ৩৩ লাখ ৬০ হাজার এমএমবিটিইউ এলএনজি আমদানির অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এতে ব্যয় ধরা হয়েছে ৬১৮ কোটি ২১ লাখ ১৯ হাজার ৪১৯ টাকা। ওই এলএনজিও পেট্রোবাংলার মাধ্যমে আমদানি করা হবে।
অতিরিক্ত সচিব জানান, এর আগে ১৫ ফেব্রম্নয়ারি জাপানের জেরা কোম্পানি থেকে এক কার্গো এলএনজি আমদানির অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। সে সময় ব্যয় ধরা হয় ৬৯০ কোটি ৪২ লাখ ৯ হাজার ৩১২ টাকা। মাস্টার সেল অ্যান্ড পার্চেজ অ্যাগ্রিমেন্ট বা মিলিত বিক্রয়-ক্রয় চুক্তিতে (এমএসপিএ) স্বাক্ষর করা প্রতিষ্ঠান থেকে কোটেশন সংগ্রহ করে ওই এলএনজি আমদানি করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। প্রতি এমএমবিটিইউ এলএনজি আমদানিতে খরচ ধরা হয়েছে ১৬ দশমিক ৫০ ডলার।
তার আগে ২০২১ সালের ২৩ জুন অনুষ্ঠিত সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির সভায় চার প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে মাস্টার সেল অ্যান্ড পার্চেজ অ্যাগ্রিমেন্ট বা মিলিত বিক্রয়-ক্রয় চুক্তির অনুমোদন দেওয়া হয়। পেট্রোবাংলা খোলাবাজার থেকে সর্বশেষ এলএনজি কিনেছিল গত বছরের মে মাসে। তখন প্রতি এমএমবিটিইউ এলএনজির দাম পড়েছিল ২৬ ডলার ৪ সেন্ট। এরপর আর এলএমজি আমদানি করা হয়নি।
জানা গেছে, এলএনজি আমদানির জন্য বেশকিছু দেশের সঙ্গে সরকারের দীর্ঘমেয়াদি চুক্তি রয়েছে। কিন্তু সরকার খুব সংক্ষিপ্ত সময়ে এলএনজি আমদানি করতে চায়। এজন্য ২০১৯ সালে খোলা বাজার থেকে এলএনজি আমদানির লক্ষ্যে এমএসপিএ পরিকল্পনা নেওয়া হয়। তারই অংশ হিসেবে ২০২১ সালে জাপান, সিঙ্গাপুর, যুক্তরাজ্য ও দুবাই এ চার প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে মাস্টার সেল অ্যান্ড পার্চেজ অ্যাগ্রিমেন্ট করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
উল্লেখ্য দেশে দৈনিক প্রায় ৪০০ কোটি ঘনফুট গ্যাস চাহিদার বিপরীতে বর্তমানে কম-বেশি ২৭০ কোটি ঘনফুট গ্যাস সরবরাহ করা হচ্ছে। এর মধ্যে ৪০-৪২ কোটি ঘনফুট এলএনজি থেকে রূপান্তরিত গ্যাস। তবে দেশে দৈনিক ১০০ কোটি ঘনফুট এলএনজি রূপান্তরের সক্ষমতা রয়েছে। ২০২০ সালের সেপ্টেম্বর থেকে এখন পর্যন্ত স্পট মার্কেট থেকে দেশে ২৯ কার্গো এলএনজি আমদানি করা হয়েছে।
এদিকে সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) জন্য ভারত থেকে ৭২ কোটি ৯১ লাখ ২০ হাজার টাকা দিয়ে ৮ হাজার মেট্রিক টন মসুর ডাল কিনবে সরকার। এতে প্রতি কেজি মসুর ডালের দাম পড়বে ৯১ টাকা ১৪ পয়সা।
এ বিষয়ে অতিরিক্ত সচিব সাঈদ মাহবুব খান জানান, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অধীন টিসিবির জন্য ভারতীয় কোম্পানি উমা এক্সপো প্রাইভেট লিমিটেডের (স্থানীয় এজেন্ট: ফিউচার ইনফ্রাস্ট্রাকচার অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট প্রাইভেট লিমিটেড, ঢাকা) কাছ থেকে ৮ হাজার মেট্রিক টন মসুর ডাল ৭২ কোটি ৯১ লাখ ২০ হাজার টাকায় ক্রয়ের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।
এর আগে ১৫ ফেব্রম্নয়ারির সভায় তুরস্কের আরবিল বাকলিয়াত হুবুবাত সান্তিক কোম্পানি থেকে আন্তর্জাতিক উন্মুক্ত দরপত্রের মাধ্যমে ৭৩ কোটি ৪৪ লাখ ৪৮ হাজার টাকা ৮ হাজার মেট্রিক টন মসুর ডাল কেনার অনুমোদন দেওয়া হয়েছিল। তার আগে, ৮ ফেব্রম্নয়ারি একটি প্রতিষ্ঠান থেকে ৭৩ কোটি ২৮ লাখ টাকার ৮ হাজার টন মসুর ডাল কেনার অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এছাড়া গত বছরের ২৯ ডিসেম্বর উন্মুক্ত দরপত্র পদ্ধতিতে তুরস্কের আরবিল বাকলিয়াত হুবুবাত সান্তিক এএস থেকে ৮১ কোটি ৫৭ লাখ ৬৮ হাজার টাকার ৮ হাজার মেট্রিক টন মসুর ডাল কেনার অনুমোদন দেওয়া হয়েছিল।
অতিরিক্ত সচিব জানান, ১১তম এ সভায় কৃষি ও শিল্প মন্ত্রণালয়ের আওতায় ৭০ হাজার টন সার কেনার প্রস্তাব অনুমোদন দিয়েছে কমিটি। এর মধ্যে ৪০ হাজার মেট্রিক টন ডিএপি ও ৩০ হাজার মেট্রিক টন ইউরিয়া সার রয়েছে। এতে মোট ব্যয় হবে ৩৬৭ কোটি ৫৬ লাখ ২২ হাজার ১২ টাকা।
অতিরিক্ত সচিব বলেন, 'কৃষি মন্ত্রণালয়ের বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশন (বিএডিসি) কর্তৃক রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে চুক্তির আওতায় মরক্কোর ওসিপি, এসএ থেকে প্রথম লটে ২৬২ কোটি ১২ লাখ ৯২ হাজার টাকায় ৪০ হাজার মেট্রিক টন ডিএপি সার আমদানির অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।'
তিনি বলেন, শিল্প মন্ত্রণালয়ের অধীন বাংলাদেশ কেমিকেল ইন্ডাস্ট্রিজ করপোরেশনের (বিসিআইসি) মাধ্যমে কর্ণফুলী ফার্টিলাইজার কোম্পানি লিমিটেডের (কাফকো) কাছ থেকে ১৪তম লটে ১০৫ কোটি ৪৩ লাখ ৩০ হাজার ১২ টাকায় ৩০ হাজার মেট্রিক টন ব্যাগড গ্র্যানুলার ইউরিয়া সার ক্রয়ের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।
মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব সাঈদ মাহবুব খান আরও বলেন, 'বৈঠকে অর্থনৈতিক বিষয়সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির অনুমোদনের জন্য একটি ও ক্রয় কমিটির অনুমোদনের জন্য সাতটি প্রস্তাব উপস্থাপন করা হয়। ক্রয়ের প্রস্তাবনাগুলোর মধ্যে সড়ক পরিবহণ ও মহাসড়ক বিভাগের দুটি, কৃষি ও শিল্প মন্ত্রণালয়ের একটি করে, অভ্যন্তরীণ সম্পদ-জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগের একটি করে এবং বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের একটি প্রস্তাবনা ছিল। ক্রয় কমিটির অনুমোদিত সাতটি প্রস্তাবে মোট অর্থের পরিমাণ ১ হাজার ২৯৬ কোটি ৭৫ লাখ ৮৩ হাজার ৭৬০ টাকা। মোট অর্থায়নের মধ্যে জিওবি থেকে ব্যয় হবে ৭১১ কোটি ২০ লাখ ৩৮ হাজার ২৫৮ টাকা এবং দেশীয় ব্যাংক, এডিবি ও বিশ্বব্যাংক ঋণ ৫৮৫ কোটি ৫৫ লাখ ৪৫ হাজার ৫০২ টাকা।'
- টানা দ্বিতীয়বার আন্তর্জাতিক সুপার ব্র্যান্ড অ্যাওয়ার্ড পেল ওয়ালটন
- জাতীয় সঞ্চয়পত্রে বিনিয়োগের সীমা কমলো
- গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডস এর স্বীকৃতি পেলেন ব্যাংকার দিলিপ দাশগুপ্ত
- মিনিস্টার হাই-টেক পার্ক পরিদর্শনে কর্নেল তোফায়েল মোস্তফা সরোয়ার
- দেশ সেরা ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান ইভ্যালিতে যুক্ত হলো পারটেক্স বেভারেজ
- এবার ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যে গেল ৫ টন সবজি
- বাংলাদেশ ব্যাংকের সাথে ব্র্যাক ব্যাংকের চুক্তি স্বাক্ষর
- ৭১.৬ শতাংশ জাপানি কোম্পানি বাংলাদেশে ব্যবসা বাড়াতে চায়
- এক ধাক্কায় ২৫ টাকা কমেছে পেঁয়াজের দাম!
- ২০৩০ সালে ১০০ বিলিয়ন ডলারের পোশাক রপ্তানির লক্ষ্যমাত্রা