ঢাকা, শুক্রবার   ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১২ ১৪৩১

যানজট নিরসনে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে

অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশিত: ১১:০৬, ৮ ডিসেম্বর ২০২২  

ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

ঢাকা-আশুলিয়া এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণ কাজের উদ্বোধন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ঢাকা-আশুলিয়া এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণ প্রকল্পটি ২০২২ সালের জুনের মধ্যে বাস্তবায়নের লক্ষ্য ধরে ২০১৭ সালে অনুমোদন দেয় সরকার।

২০২৬ সালের জুনে বাস্তবায়নের লক্ষ্য ধরা হয়েছে। প্রকল্পের নির্মাণ ব্যয় হবে ১৭ হাজার ৫৩৫ কোটি টাকা। ঢাকা-আশুলিয়া এক্সপ্রেসওয়ে হবে রাজধানীর দ্বিতীয় এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে। প্রথমটি হচ্ছে বিমানবন্দর থেকে যাত্রাবাড়ী পর্যন্ত ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে। নকশা অনুযায়ী বিমানবন্দরে এসে একসঙ্গে মিলবে এ দুটি এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে। এটি চালু হলে দেশের উত্তর ও দক্ষিণাঞ্চলের মধ্যে যাতায়াতকারী যানবাহনগুলোকে ঢাকার যানজটে পড়তে হবে না। দুটি এক্সপ্রেসওয়ে ব্যবহার করে দ্রুতই রাজধানীর এক প্রান্ত থেকে চলে যেতে পারবে অন্য প্রান্তে। চীনের এক্সিম ব্যাংকের ঋণে জি-টু-জি পদ্ধতিতে তৈরি হবে ঢাকা-আশুলিয়া এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে প্রকল্পটি। এ প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে ঢাকা মহানগরীর সঙ্গে বাস্তব অর্থে সাভারের সংযুক্তি ঘটবে। রাজধানীর একপ্রান্ত থেকে অপর প্রান্তে যাতায়াত সহজতর হবে।

সাম্প্রতিক সময়ে যোগাযোগব্যবস্থা বা অবকাঠামোগত যেসব উন্নয়ন হয়েছে, তার ফলে দেশের অর্থনীতিতে নতুন করে প্রাণের সঞ্চার হয়েছে। পদ্মা সেতুর কারণে মোংলা ও পায়রা বন্দরের কার্যক্রম দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে। দক্ষিণাঞ্চলের শিল্পায়নে নতুন সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। পদ্মা সেতু হয়ে যশোর পর্যন্ত রেললাইন স্থাপনের কাজ দ্রুত এগিয়ে চলেছে। এটি সম্পন্ন হলে বেনাপোল স্থলবন্দর থেকে ঢাকায় পণ্য পৌঁছাতে সময় অর্ধেকেরও কম লাগবে। ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক উন্নয়নের ফলে চটগ্রাম বন্দরে পণ্য পৌঁছানোর সময় অনেক কমে গেছে। বাংলাদেশকে উন্নত দেশে উন্নীত করার যে স্বপ্ন আমরা দেখছি, তাকে বাস্তবায়ন করতে হলে যোগাযোগব্যবস্থার উন্নয়নের দিকে আমাদের আরো মনোযোগী হতে হবে।

ইতোমধ্যে ঢাকা থেকে গাজীপুর পর্যন্ত ২০.৫০ কিলোমিটার দীর্ঘ বাস র‌্যাপিড ট্রানজিট (বিআরটি) প্রকল্পের উড়ালপথের টঙ্গী থেকে উত্তরা পর্যন্ত ঢাকামুখী দুটি লেন যান চলাচলের জন্য খুলে দেওয়া হয়েছে। খুলে দেওয়া দুটি লেনে দ্রুত চলে আসতে পারায় যানবাহন চালকদের মুখে ছিল অনেক প্রশংসা। জানা যায়, পুরো প্রকল্পটির উদ্বোধন করা হবে আগামী জুন মাসে। বিজয় দিবসের পরপরই চালু হতে পারে উত্তরা থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত অংশে মেট্রো রেলে যাত্রী পরিবহন। জানুয়ারির প্রথম ভাগে চালু হতে পারে কর্ণফুলী নদীর তলদেশ দিয়ে তৈরি দেশের প্রথম টানেল বা সুড়ঙ্গপথ। আমরা এগোচ্ছি।

উন্নত দেশগুলোর মতো বাংলাদেশের মানুষও মেট্রোরেলে চড়বে। কিছুদিন আগেও এটি ছিল স্বপ্ন। কিন্তু হাসিনা সরকার সেই স্বপ্নকে বাস্তবে পরিণত করতে যাচ্ছে। উত্তরা দিয়াবাড়ী থেকে পল্লবী-রোকেয়া সরণি-ফার্মগেট-শাহবাগ-টিএসসি-দোয়েল চত্বর-তোপখানা রোড-মতিঝিল হয়ে কমলাপুর পর্যন্ত মেট্রোরেল রুট-৬ নির্মাণের কাজ শেষ পর্যায়ে রয়েছে। এ রুটে ১৬টি স্টেশন থাকবে। ইতোমধ্যে পরীক্ষামূলক চলাচল শুরু হয়েছে। ২০২২ সালের ডিসেম্বরে এ রুটে মেট্রোরেল যাত্রী পরিবহন শুরু করবে। মেট্রোরেল রুট-৬ এর পাশাপাশি আরও দুটি রুট নির্মাণের কাজ চলছে। এর মধ্যে মেট্রোরেল রুট-১ এয়ারপোর্ট থেকে বাড্ডা-রামপুরা হয়ে কমলাপুর এবং দ্বিতীয় অংশ খিলক্ষেত হতে পূর্বাচল পর্যন্ত।

এছাড়া ঢাকা মহানগরীর পূর্ব-পশ্চিমে সংযোগ বাড়াতে চূড়ান্ত করা হয়েছে মেট্রোরেল-৫ এর রুট। এ রুটের দুটি অংশ। নর্দার্ন অংশ গাবতলী হতে হেমায়েতপুর হয়ে ভাটারা পর্যন্ত এবং সাউদার্ন অংশ গাবতলী থেকে হাতিরঝিল হয়ে আফতাবনগর বালুরপার পর্যন্ত। এসব মেট্রোরেল নির্মাণকাজ শেষ হলে ঢাকা মহানগরীতে দূর হবে যানজট, যাত্রাপথ হবে নিরাপদ ও স্বাচ্ছন্দ্যময়।

দেশের আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরগুলোর যাত্রী ও কার্গো হ্যান্ডলিং সক্ষমতার মান ও পরিধি বৃদ্ধির অংশ হিসেবে হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে তৃতীয় টার্মিনাল নির্মাণকাজ চলছে। কক্সবাজারের পর্যটন শিল্পকে বিশ্ববাসীর কাছে তুলে ধরতে সমুদ্রছোঁয়া বিশ্বমানের বিমানবন্দর নির্মাণের কাজ শুরু হয়েছে।
আর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশের অবকাঠামোর যে উন্নয়ন সাধিত হচ্ছে, তা সত্যিই অভাবনীয়। এতে দেশের উন্নতিও ত্বরান্বিত হবে। যোগাযোগ খাতের বিস্ময়কর উন্নতি দেশের মানুষের ভাগ্য পরিবর্তনসহ সামগ্রিক অর্থনীতির ভিত্তিকে আরো মজবুত ও অকম্পিত রাখবে।

সর্বশেষ
জনপ্রিয়