ঢাকা, বৃহস্পতিবার   ১৮ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৫ ১৪৩১

মশার মাস্তানি ও ডেঙ্গুর ডঙ্কা

হেলথ ডেস্ক

প্রকাশিত: ১১:০৮, ২৩ নভেম্বর ২০২২  

ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

মশা নাকি কাউকে কাউকে বেশি কামড়ায়। তবে কি মশা বোঝে রক্তের স্বাদ? ২০২০ সালের অক্টোবরে 'নিউরন' জার্নালে প্রকাশিত গবেষণায় দেখা যাচ্ছে, পুরুষ মশা অত্যন্ত নিরীহ; ডালপালা আঁকড়ে অনায়াসে বেঁচে থাকে। স্ত্রী মশা রক্তের খোঁজে ঘুরে বেড়ায় ডিম পাড়ার তাগিদে। স্তন্যপায়ী প্রাণীর রক্ত প্রয়োজন তাদের ডিম তৈরিতে।

স্ত্রী মশা সহজেই বুঝতে পারে ব্লাড ব্যাংকের উপস্থিতি। শুধু তাই নয়, মশাগুলো বেশ লোভীও। নিজের ওজনের তিন গুণ রক্ত খেয়ে প্রায়ই হাঁসফাঁস করতে দেখা যায়।

গবেষকদের আরেক দল মশার নিদ্রা নিয়ে বেশ তৎপর। ২০২২-এ জার্নাল অব এক্সপেরিমেন্টাল বায়োলজিতে প্রকাশ হলো মশার ঘুমের ধরন-ধারণ। মশা টানা ঘুম দিতে পারে। মানুষের রক্তের গন্ধ পেলেও ভাঙে না সেই ঘুম। তিন ধরনের মশা প্রজাতি নিয়ে একটি বহুমাত্রিক পরীক্ষা চালানো হয়েছিল। অ্যানোফিলিস- মূলত রাতে জাগে। কিউলেক্স- সন্ধ্যার সময়ই ছটফট করে। আর এডিস- দিনে জাগে।

গবেষক লেসলি ভোস্যালের মতো কিছু বিজ্ঞানী মশার কামড় থেকে মানব প্রজাতিকে বাঁচাতে গবেষণা করে যাচ্ছেন। মশার কামড় যেহেতু মানুষের রক্তের স্বাদ ও গন্ধের ওপর নির্ভরশীল, তাই এসব গবেষকের কাজ মশার স্বাদগুলোকে বিভ্রান্ত করে মানুষের রক্তের স্বাদ ভুলিয়ে দেওয়া। অর্থাৎ মশার টেস্ট বদলে ফেলতে পারলেই কেল্লা ফতে। মুক্তি মিলবে মশার কামড় থেকে।

দুনিয়া ভরে যখন বিজ্ঞানীরা মশা নিয়ে ভাবছেন, গবেষণা করছেন, তখন বাংলাদেশের মানুষ বছরের একটি নির্দিষ্ট সময়ে এডিস মশার কামড়ে ডেঙ্গু রোগে ভুগছে। আগস্ট-সেপ্টেম্বরে ডেঙ্গুর প্রকোপ বাড়ে- এমন বার্তা বিজ্ঞানীরা আগে থেকেই দিয়ে রাখেন। ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন এবং দেশের অন্যান্য সিটি করপোরেশন সে অনুযায়ী প্রস্তুতি নিয়ে রাখে- এমনটা প্রচারও করে প্রতি বছর। কিন্তু ডেঙ্গু আসে, ডেঙ্গু চলে যায়। আবার পরের বছর নির্দিষ্ট সময়ে ডেঙ্গু ফিরে আসে।

একসময় আমরা ম্যালেরিয়ার দেশ বলে পরিচিত ছিলাম। বছর ঘুরে আসত আর ম্যালেরিয়ায় অনেক মানুষের প্রাণ যেত। নিয়তি বলেই মেনে নিত সবাই। কিন্তু আজ বাংলাদেশ ম্যালেরিয়াশূন্য দেশ হওয়ার গৌরব অর্জনের দাবিদার। ম্যালেরিয়াকে জয় করতে পেরেছে বাংলাদেশ। প্রথম যখন ডেঙ্গু রোগটি আমাদের ছুঁয়ে নিয়েছিল, তখন অনায়াসেই আক্রান্ত মানুষদের মৃত্যু ঘটেছিল। ডেঙ্গু প্রাণ নেওয়ার যন্ত্র ছিল তখন। কালক্রমে চিকিৎসকরা ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীকে কীভাবে বাঁচানো যায় তার গবেষণায় রত হলেন। কিছুটা সফলও।  

সর্বশেষ
জনপ্রিয়