ঢাকা, শনিবার   ২০ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৭ ১৪৩১

বান্ধবীকে বিয়ে করতে স্বামীকে তালাক দিল নববধূ

নিউজ ডেস্ক

প্রকাশিত: ১৩:২৫, ২৩ নভেম্বর ২০২২  

বান্ধবীকে বিয়ে করতে স্বামীকে তালাক দিল নববধূ

বান্ধবীকে বিয়ে করতে স্বামীকে তালাক দিল নববধূ

রুমা (১৭) ও ঝুমা (১৩) (ছদ্মনাম) দুই বান্ধবী। তাদের মধ্যে রয়েছে গভীর প্রেমের সম্পর্ক। তাদের সম্পর্ক ছিন্ন করতে উভয় বাসা বদলসহ বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করে পরিবার।  তারপরও তাদের মধ্যে নিয়মিত যোগাযোগ চলতে থাকে।

এক পর্যায়ে রুমাকে বিয়ে দেয় তার পরিবার। স্বামীর বাড়ি থেকে ঝুমার সঙ্গে দেখা করতো রুমা। সব সময় এক সঙ্গে থাকার জন্য গত সোমবার দুপুরে রুমার স্বামীর বাড়িতে এসে ওঠে ঝুমা। রুমার স্বামীর বাড়ি গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার ডোমবাড়িচালা গ্রামে। এ নিয়ে এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়।স্বজনদের জিজ্ঞাসাবাদে তরুণীরা জানায়, তাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক রয়েছে। একে অপরকে ছাড়া থাকতে পারবে না। প্রয়োজনে তারা জীবন দেবে। দিনভর চলে দেন-দরবার। রাতে দুই পরিবারের সদস্যদের উপস্থিতিতে রুমা তার স্বামীকে তালাক দেন।

রুমা ময়মনসিংহ জেলার গফরগাঁও উপজেলায়। আর ঝুমার বাড়ি একই জেলার হালুয়াঘাট উপজেলায়। তাদের পরিবার শ্রীপুর উপজেলার জৈনাবাজার এলাকায় ভাড়া থাকতো।

দুই কিশোরীর স্বজনরা জানান, তাদের সম্পর্কের বিষয়টি জানার পর নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করা হয়। ব্যর্থ হয়ে রুমাকে বিয়ে দেন বাব-মা। তাতে বিপত্তি বেড়ে যায়। দুই কিশোরী বেপরোয়া হয়ে ওঠে। স্বামীর বাড়ি থেকে পালিয়ে ঝুমার সঙ্গে দেখা করতো রুমা।

রুমা বলেন, ‘আমার সঙ্গে ঝুমার গভীর বন্ধুত্ব রয়েছে। আমাদের প্রতিজ্ঞা ছিল একসঙ্গে থাকব। আমার বাবা-মা আমদের সম্পর্ক মেনে নিতে পারেনি। আমাকে ইচ্ছের বিরুদ্ধে বিয়ে দেওয়া হয়েছে। বান্ধবীকে ছেড়ে থাকতে পারব না। তার জন্য স্বামীর সংসার ত্যাগ করেছি।’

রুমার শাশুড়ি জানান, ‘সাত মাস আগে ছেলের বিয়ে দিয়েছি। এরপর থেকে পুত্রবধূ এক একটা সমস্যা সৃষ্টি করে চলেছে। রুমার বান্ধবী গত সোমবার আমাদের বাড়িতে এসে আমার পুত্রবধূকে বিয়ে করার দাবি করে।’

রুমার স্বামী জানান, ‘বিয়ের পর থেকে ক্রমেই তার সমকামিতার বিষয়টি স্পষ্ট হয়ে উঠে। চারটি ডায়রি ভরা রয়েছে তাদের প্রেমের গল্প।গত সোমবার দুপুরে রুমার বান্ধবী আমার বাড়িতে অবস্থান করে। সেও আমাকে বিয়ে করতে চায়। ’

রুমার মা বলেন, ‘আমার মেয়ে এমন ছিল না। ঝুমার খপ্পরে পড়ে এমনটি করেছে। শত চেষ্টা করেও মেয়েকে ফেরাতে পারিনি। এ লজ্জা থেকে আমার মরণ ভালো।’ 

তেলিহাটি ইউনিয়ন ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য মো. তারেক হাসান বাচ্চু জানান, ‘খবর পেয়ে গত সোমবার সন্ধ্যায় ওই বাড়িতে আসি। সকলের সঙ্গে কথা বলে জানতে পারি ওই দুই কিশোরী একে অপরকে ছাড়া থাকতে পারবে না। পরে দুই পরিবারের সদস্যরা আলোচনা করে রুমা তার স্বামীকে তালাক দেয়।’  

শ্রীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান বলেন, এ বিষয়ে কেউ থানায় অভিযোগ করেনি। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

সারাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত
সর্বশেষ
জনপ্রিয়