ঢাকা, বৃহস্পতিবার   ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১২ ১৪৩১

ফল, গাড়ি, ইলেকট্রনিক্স, আসবাবসহ বিলাস পণ্য আমদানিতে ঋণ নয়

বাণিজ্য ডেস্ক

প্রকাশিত: ১১:৫৮, ৫ জুলাই ২০২২  

সংগৃহীত

সংগৃহীত

ইতিহাসের সর্বোচ্চ বাণিজ্য ঘাটতির মধ্যে ডলার সাশ্রয়ে আমদানি নিয়ন্ত্রণে ফল, গাড়ি, ইলেকট্রনিক্স, আসবাবসহ বিলাস পণ্য বিদেশ থেকে আনতে এখন থেকে আর ব্যাংক ঋণ মিলবে না।

পাশাপাশি অত্যাবশীয় পণ্য ছাড়া অন্যসব পণ্য আমদানির মার্জিন ঋণ ৫০ থেকে বাড়িয়ে ৭৫ শতাংশ করা হয়েছে। এ দুই নির্দেশনা সোমবার রাত থেকেই কার্যকর করা হয়েছে।

গতকাল সোমবার রাতে এ বিষয়ে সাকুর্লার দিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক জানিয়েছে, প্রয়োজন একেবারেই কম এমন নির্দিষ্ট কিছু পণ্যে শতভাগ নগদ মার্জিন আরোপ করতে হবে। একই সঙ্গে এসব পণ্যর বিপরীতে কোনো ধরনের ব্যাংক ঋণ দিতে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে। অথ্যাৎ আমদানিকারকদের নগদ মার্জিনের টাকার যোগান দিতে হবে।

এ তালিকায় রয়েছে গাড়ি, পানীয়, আসবাবপত্র, সাজসজ্জার কাজে ব্যবহৃত কসমেটিকস, গৃহসামগ্রীসহ বিলাসী পণ্য।

মুদ্রা ও ঋণ ব্যবস্থাপনায় অধিকতর সুসংহত রাখার কথা বলে এ সংক্রান্ত সার্কুলার সোমবার রাতে সব ব্যাংকের প্রধান নির্বাহীদের কাছে পাঠানো হয়েছে।
বাণিজ্য ঘাটতি কমিয়ে আনার উদ্যোগ হিসেবে এমন পদক্ষেপ নেওয়ার বিষয়ে আভাস দিয়েছিলেন বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র ও নির্বাহী পরিচালক মো. সিরাজুল ইসলাম।

এদিন সন্ধ্যায় বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে তিনি বলেন, ‘‘বাণিজ্য ঘাটতি কমিয়ে আনতে সম্ভ্যাব্য নতুন পদক্ষেপ হিসেবে আরও কিছু পণ্য শতভাগ মার্জিন আরোপ করা লাগতে পারার বিষয়ে ভাবছে বাংলাদেশ ব্যাংক।’’

সাধারণত গ্রাহক-ব্যাংকের সম্পর্কের উপর ভিত্তি করে কিছু পণ্যে শূন্য শতাংশ মার্জিন রাখার সুযোগ দেওয়া হয়। ন্যূনতম মার্জিন নিতে ব্যাংকগুলো গ্রাহকের বিপরীতে ঋণ সৃষ্টি করে অর্থ সরবরাহ করে থাকে।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ব্যাংকিং প্রবিধি ও নীতি বিভাগের পরিচালক মাকসুদা বেগম স্বাক্ষরিত সার্কুলারে শতভাগ নগদ মার্জিনের তালিকায় রাখা পণ্যগুলো হল-

মোটরকার (সেডানকার, এসইউভি,এমপিভি ইত্যাদি), ইলেকট্রিক্যাল এবং ইলেকট্রনিক্স হোম অ্যাপ্লায়েন্স, স্বর্ণ ও স্বর্ণালঙ্কার, মূল্যবান ধাতু ও মুক্তা, তৈরি পোশাক,  চামড়াজাত পণ্য, পাটজাত পণ্য, প্রসাধনী, আসবাবপত্র ও সাজসজ্জা সামগ্রী, ফল ও ফুল, নন সিরিয়াল ফুড যেমন অ-শস্য খাদ্যপণ্য, প্রক্রিয়াজাত খাদ্যদ্রব্য ও পানীয়; যেমন টিনজাত খাদ্য, চকোলেট, বিস্কিট, জুস, সফট ড্রিংকস ইত্যাদি, অ্যালকোহল জাতীয় পানীয়, তামাক, তামাকজাত বা এর বিকল্প পণ্যসহ অন্যান্য বিলাসজাতীয় পণ্য।

ডলার বাঁচাতে আমদানি আরও কঠিন করল বাংলাদেশ ব্যাংক  

এর আগে গত ১০ মে এসব পণ্যের উপর ৫০ থেকে ৭৫ শতাংশ পর্যন্ত মার্জিন রাখার বাধ্যবাধকতা দিয়েছিল বাংলাদেশ ব্যাংক। এবার নতুন করে ঋণ দেওয়াও বন্ধ করা হল।

নতুন এ সিদ্ধান্তের ব্যাখ্যায় বাংলাদেশ ব্যাংক বলছে, ‘‘কোভিড-১৯ এর দীর্ঘমেয়াদী নেতিবাচক প্রভাব এবং বহিঃবিশ্বে সাম্প্রতিক যুদ্ধাবস্থা প্রলম্বিত হওয়ার কারণে চলমান বৈশ্বিক অর্থনৈতিক অস্থিতিশীল পরিস্থিতির প্রেক্ষাপটে দেশের মুদ্রা ও ঋণ ব্যবস্থাপনা অধিকতর সুসংহত রাখার লক্ষ্যে আমদানি ঋণপত্র স্থাপনের ক্ষেত্রে নগদ মার্জিন হার পুনঃনির্ধারণ করা হলো।’’

অপরদিকে অত্যাবশ্যকীয় ছাড়া বাকি সব পণ্য আমদানির ঋণপত্র খুলতে ন্যূনতম ৭৫ শতাংশ নগদ মার্জিন সংরক্ষণ করতে বলা হয়েছে।

ছাড় দেওয়া পণ্যের তালিকায় রয়েছে-

শিশুখাদ্যসহ অত্যাবশ্যকীয় খাদ্যপণ্য, জ্বালানি, স্বাস্থ্য অধিদপ্তর স্বীকৃত জীবন রক্ষাকারী ওষুধ ও সরঞ্জামসহ চিকিৎসা সংক্রান্ত কাজে ব্যবহৃত দ্রব্যাদি, উৎপাদনমুখী স্থানীয় শিল্প ও রপ্তানিমুখী শিল্পের জন্য সরাসরি আমদানি করা মূলধনী যন্ত্রপাতি ও কাঁচামাল, কৃষি খাত সংশ্লিষ্ট পণ্য এবং সরকারি অগ্রাধিকারপ্রাপ্ত প্রকল্পে ব্যবহারের জন্য অত্যাবশ্যকীয় পণ্য।

সাকুর্লারে বলা হয়েছে, ১০০ শতাংশ ও ৭৫ শতাংশ নগদ মার্জিনে আমদানিতব্য পণ্যের আমদানি ঋণপত্র স্থাপনের বিপরীতে প্রয়োজনীয় মার্জিন গ্রাহকের নিজস্ব উৎস হতে গ্রহণ করতে হবে।

অর্থাৎ এসব পণ্য আমদানিতে সংশ্লিষ্ট ব্যাংকে আমদানিকারকের অনুকূলে বিদ্যমান কোনো ঋণ হিসাব হতে অথবা নতুন কোন ঋণ হিসাব সৃষ্টির মাধ্যমে আমদানি ঋণপত্র স্থাপনের বিপরীতে কোন ধরনের মার্জিন প্রদান করা যাবে না।

ব্যবসা বাণিজ্য বিভাগের সর্বাধিক পঠিত
সর্বশেষ
জনপ্রিয়