ঢাকা, বৃহস্পতিবার   ১৮ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৫ ১৪৩১

প্রোগ্রামিংয়ের ‘বিশ্বকাপ’ এমআইটির

তথ্যপ্রযুক্তি ডেস্ক

প্রকাশিত: ২০:৩৫, ১১ নভেম্বর ২০২২  

ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

প্রোগ্রামিংয়ের ‘বিশ্বকাপ’ আন্তর্জাতিক কলেজিয়েট প্রোগ্রামিং প্রতিযোগিতা—আইসিপিসির চূড়ান্ত পর্বে এবার শ্রেষ্ঠত্ব দেখিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের ম্যাসাচুসেটস ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজি (এমআইটি)। পাঁচ ঘণ্টায় ১২টি প্রোগ্রামিং সমস্যার মধ্যে ১১টি সমাধান করে ৪৫তম আইসিপিসির চূড়ান্ত পর্বে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে এই বিশ্ববিদ্যালয়।

গতকাল বৃহস্পতিবার বেলা ১১টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত রাজধানীর আন্তর্জাতিক কনভেনশন সেন্টার, বসুন্ধরার (আইসিসিবি) ৪ নম্বর হলে আইসিপিসির চূড়ান্ত পর্ব (ওয়ার্ল্ড ফাইনালস) অনুষ্ঠিত হয়। সমাপনী অনুষ্ঠান শেষে রাত পৌনে ৯টায় ঘোষণা করা হয় ফলাফল। এবার দ্বিতীয় স্থানে আছে চীনের পিকিং বিশ্ববিদ্যালয় (১০টি সমাধান) এবং তৃতীয় স্থান অর্জন করেছে জাপানের টোকিও বিশ্ববিদ্যালয় (৯টি)। ৬৯টি দেশের বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ের ১৩৭টি দল আইসিপিসিতে অংশ নেয়।

সমাপনী অনুষ্ঠানে পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান বলেন, ‘এক হাজার অতিথি এ আয়োজনে অংশ নিয়েছেন, যা বড় ব্যাপার। আইসিপিসির ওয়ার্ল্ড ফাইনালস দক্ষিণ এশিয়ায় বাংলাদেশেই প্রথমবারের মতো হলো।’

তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি (আইসিটি) বিভাগের প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহ্‌মেদ বলেন, ‘ডিজিটাল বাংলাদেশের লক্ষ্য পূরণ করে আমরা এখন স্মার্ট বাংলাদেশের পথে এগিয়ে চলেছি। চূড়ান্ত পর্ব বাংলাদেশে আয়োজন করার জন্য আইসিপিসি ফাউন্ডেশনকে ধন্যবাদ।’

আইসিপিসি ফাউন্ডেশনের প্রেসিডেন্ট উইলিয়াম বি পাউচার চূড়ান্ত প্রতিযোগিতার সফল আয়োজনের জন্য বাংলাদেশকে ধন্যবাদ জানান। অনুষ্ঠানে সরকারের আইসিটি বিভাগের জ্যেষ্ঠ সচিব এন এম জিয়াউল আলম, ইউনিভার্সিটি অব এশিয়া প্যাসিফিক (ইউএপি) এবং আইসিপিসি ঢাকার পরিচালক কামরুল আহসান, বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিলের নির্বাহী পরিচালক রণজিৎ কুমারসহ অনেকে বক্তৃতা করেন।

দিনে প্রতিযোগিতার সময় দেখা যায় কোনো কোনো দলের পাশে বাড়ছে বেলুনের সংখ্যা। মানে কম্পিউটার প্রোগ্রামিং সমস্যার সমাধান করছে। প্রতিটি দলে একটি কম্পিউটার, নীল টি-শার্ট পরা তিনজন করে প্রোগ্রামার। একটা করে সমাধান হয় আর একটা করে বেলুন বাড়ে। ফলাফল ঘোষণার সময়ও নাটকীয় মুহূর্তের অবতারণা করেন আইসিপিসির কর্মকর্তা ও বিচারকেরা।

আইসিপিসির নিয়ম অনুযায়ী, অনুষ্ঠানে শীর্ষ চারটি দল সোনার পদক পায়। এরপর পঞ্চম থেকে অষ্টম রুপা এবং নবম থেকে দ্বাদশ স্থান অর্জনকারী দল ব্রোঞ্জপদক পায়।

শীর্ষ তিন দলের পর সোনা জয় করেছে দক্ষিণ কোরিয়ার সিউল ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি (৯টি সমাধান)। গতকাল দলটি ১১ মিনিটে সবার আগে একটি সমস্যার সমাধান করে।
রৌপ্যপদক বিজয়ী হয়েছে সুইজারল্যান্ডের ইটিএইচ জুরিখ, ফ্রান্সের ইকোল নরমাল সুপিরিয়র ডি প্যারিস, যুক্তরাষ্ট্রের কার্নিগিও মিলন ইউনিভার্সিটি ও পোল্যান্ডের ওয়ারশ বিশ্ববিদ্যালয়।

ব্রোঞ্জ পেয়েছে রাশিয়ার ন্যাশনাল রিসার্চ ইউনিভার্সিটি হায়ার স্কুল অব ইকোনমিকস, সেন্ট পিটার্সবার্গ স্টেট ইউনিভার্সিটি, যুক্তরাজ্যের অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় ও ভিয়েতনামের ইউনিভার্সিটি অব ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড টেকনোলজি (ভিএনইউ)।

স্বাগতিক বাংলাদেশের আট বিশ্ববিদ্যায়ের আটটি দল চূড়ান্ত পর্বে অংশ নিয়েছিল। এর মধ্যে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট) ৫১তম এবং শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় ৫৬তম স্থান অর্জন করে। দুটি দলই চারটি করে সমস্যার সমাধান করে। এ ছাড়া বাকি ছয়টি দল বিশেষ সম্মাননা (অনারেবল মেনশন) পেয়েছে। এ দলগুলো হলো আমেরিকান ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়, নর্থসাউথ ইউনিভার্সিটি, রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, ইউনিভার্সিটি অব এশিয়া প্যাসিফিক (ইউএপি) ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়।

এশিয়া মহাদেশে চতুর্থ দেশ হিসেবে বাংলাদেশে আইসিপিসি ওয়ার্ল্ড ফাইনালস অনুষ্ঠিত হলো। আয়োজন শুরু হয়েছিল ৬ নভেম্বর। বাংলাদেশে আয়োজক হিসেবে ছিল সরকারের আইসিটি বিভাগ ও বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিল (বিসিসি)। স্বাগতিক বিশ্ববিদ্যালয় ছিল ইউএপি।

সর্বশেষ
জনপ্রিয়