ঢাকা, শনিবার   ২০ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৭ ১৪৩১

প্রকৃতি প্রেমীদের হাতছানি দিয়ে ডাকছে ডোমখালী সমুদ্র সৈকত

নাছির উদ্দিন

প্রকাশিত: ১২:৩৪, ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২২  

ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

চট্টগ্রামের মীরসরাই বঙ্গবন্ধু অর্থনৈতক অঞ্চলের কর্মযজ্ঞ শুরুর পর র্অথনৈতিক অঞ্চলের সঙ্গে চট্টামের সহজ যোগাযোগের জন্য মেরিনড্রাইভ সড়ক নির্মাণকাজ শুরু হয়। সমুদ্রের পাশ ঘেষে সড়ক সৃষ্টি হওয়ায় বিশাল এলাকাজুড়ে সৈকত সৃষ্টি হয়। চট্টগ্রামের মীরসরাই উপজেলার দক্ষিণে সীতাকুণ্ড সীমান্তে অবস্থিত এই স্থানের নাম ‘ডোমখালী সমুদ্র সৈকত’।

স্থানীয়ভাবে ‘ডোমখালী বিচ’ নামেও পরিচিত। উপভোগ করতে পারবেন- পাখিদের কলকাকলী, সাগরের সঙ্গে মিশে যাওয়া ছোট ছোট খালের অবিরাম বয়ে চলার দৃশ্য, বাঁধের পূর্বে গ্রামীণ সুন্দর জনপদ। মীরসরাই থেকে এই সৈকতের দুরত্ব প্রায় ৪ কিলোমিটার। উপজেলার শাহেরখালী ইউনিয়নে এই সৈকতের আবিষ্কার করছে স্থানীয় ভ্রমণ প্রেমীরা।

ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের বড়দারোহাট বাজার পেরিয়ে পশ্চিমে বেড়িবাঁধ সড়ক অতিক্রম করলেই দেখা মিলবে কাঙিক্ষত ডোমখালী সৈকতের। সরেজমিনে গিয়ে যায়, সড়কের পশ্চিম পাশেই সৈকতের অবস্থান। সমুদ্রের কিনারে গেলে কানে ভেসে আসবে সাগরের গর্জন। দখিনা মিষ্টি হাওয়ার পরশে শীতলতা অনুভব হবে গায়ে। উত্তরে সৈকত সংলগ্ন বেড়িবাঁধ, দক্ষিণে দেখা মিলবে সবুজ বেষ্টনীর কেওড়া বাগান। যেখানে রয়েছে মায়াবী হরিণসহ নানা প্রজাতির বন্য প্রাণী। পশ্চিমে শুধু সাগর আর সাগর। তবে সাগরে বড় কোন ঢেউ নেই। ফলে কিনারে সাগরের ঢেউয়ের আচড়ে পড়ার মনোরম দৃশের সঙ্গী হওয়া যাবে না। 

এদিকে সমুদ্র কিনারে সারি সারি ডিঙ্গি নৌকা বাধা রয়েছে। কিছু নৌকা নিয়ে জেলেরা সাগরের বুকে গেছে মাছ ধরতে। সন্ধায় জেলার নৌকাভর্তি মাছ নিয়ে তীরে ভিড়ছে। কিছু নৌকায় চড়ে দর্শনার্থীরা সাগরে ঘুরে বেড়ান। এছাড়াও দর্শনার্থী ও স্থানীয় সদ্যি ছেলেরা সাগরের স্বচ্ছ পানিতে লম্পজম্প করে আনন্দে আত্মহারা। এমন অনিন্দ্য সুন্দর সৈকতে প্রতিদিন ছুটে যাচ্ছেন অসংখ্য পর্যটক। শুধু দিনে নয়, এখানে দাঁড়িয়ে সন্ধায় সূর্য অস্তমিত হওয়ার দৃশ্যও অন্যরকম অনুভব করার মত। সূর্যডোবার দৃশ্যের সাথে নিজেকে ক্যামরার ক্লিকে ছবির ফ্রেমে বন্দি করছেন। এছাড়া সন্ধা রাতেও সাগর পাড়ে দেখা মিলে অসংখ্য প্রকৃতি প্রেমীদের। কোলাহল মুক্ত সাগরের খোঁজে ছুটে চলেন ভ্রমনপিপাসুরা।

এসময় সৈকতে কথা হয় পর্যটক জুয়েলের সাথে তিনি বলেন, ‘মীরসরাই অর্থনৈক অঞ্চলকে কেন্দ্র করে এমন একটি সৈকত গড়ে উঠছে তা ভাবতেই ভালো লাগছে। কোলাহল মুক্ত, দক্ষিণা বাতাস, পাখির কলকাকলী, সমুদ্রের তাজা মাছ, কেওড়া বাগান আর নৌকা ভ্রমণ সত্যিই অসাধারণ।’ তবে যাতায়াত ব্যবস্থা আরো উন্নত হলে ভালো হতো।’

সরেজমিনে আরো দেখা যায়, ডোমখালীর পুরোনো স্লুইচগেট থেকে ৩ কিলোমিটার পশ্চিমে সাগরের মোহনায় নির্মাণ করা হয়েছে আরো একটি নতুন স্লুইচ গেট। যা দিয়ে নিয়ন্ত্রণ করা হবে সাগরের পানি। স্লুইচগেট ঘেঁষে জেলেদের ব্যস্ততা, সাগর থেকে মাছ নিয়ে ফেরে। কেউ জাল বুনে অবসরে, কেউ সাগরে নৌকা ভাসায়। এসব প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে মুগ্ধ হবেন যে কেউ।  

স্থানীয় ১৬ নং সাহেরখালী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান কামরুল হায়দার চৌধুরী বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু অর্থনৈতিক অঞ্চলের সঙ্গে নির্মিতব্য মেরিন ড্রাইভ সড়কের বাঁধের কারণে বিশাল এলাকাজুড়ে একটি সমুদ্র সৈকতের সৃষ্টি হয়েছে। ইতিমধ্যে পর্যটকরা আসছেন এখানে। মেরিন ড্রাইভ এখনো পুর্নাঙ্গ নির্মাণ হয়নি। এটি পুর্নাঙ্গ হলে সৈকতের সৈৗন্দর্য আরো কয়েকগুণ বেড়ে যাবে।’ এটি পর্যটন হিসেবে সীকৃত হলে সরকার এখান থেকে রাজস্ব পাবে।

যেভাবে যাবেন: দেশের যে কোনো স্থান থেকে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের বড়দারোগাহাট থেকে সিএনজি অটোরিক্সায় সাগরপাড়ে যাওয়া যাবে। ভাড়া নিবে জনপ্রতি ৪০ টাকা। মোটরসাইকেলেও যাওয়া যাবে।

থাকবেন কোথায়-খাবেন কী?
সৈকত এলাকায় থাকা ও খাওয়ার জন্য কোনো রেস্টুরেন্ট বা আবাসিক হোটের গড়ে ওঠেনি। ফলে পর্যাপ্ত খাবার ও বিশুদ্ধ খাবার পানি সঙ্গে নিয়ে আসতে হবে এবং সন্ধ্যার আগেই ঐ স্থান ত্যাগ করতে হবে। 

সর্বশেষ
জনপ্রিয়