ঢাকা, বুধবার   ২৪ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১০ ১৪৩১

পদ্মা সেতু চালু হলে মোংলায় বিদেশি বিনিয়োগ বাড়বে

নিউজ ডেস্ক

প্রকাশিত: ১৩:০০, ২০ জুন ২০২২  

সংগৃহীত

সংগৃহীত

স্বপ্নের পদ্মা সেতু চালু হলে বাগেরহাটের মোংলা ইপিজেডে বাড়বে বিদেশি বিনিয়োগ। এর ফলে সেখানে কর্মসংস্থান বৃদ্ধিসহ নতুন নতুন কারখানাও তৈরি হবে। এ ছাড়া সেতুর কারণে নিরবচ্ছিন্ন যোগাযোগ ব্যবস্থা কারণে এই ইপিজেড থেকে রফতানিও বাড়বে বহুগুণে। ইপিজেড কর্তৃপক্ষ বলছে, আগামী অর্থবছরে (২০২২-২৩) বিনিয়োগ বেড়ে হবে ২৫ মিলিয়ন বা ২২৫ কোটি টাকা। পণ্য রফতানি হবে ১৮০ মিলিয়ন ইউএস ডলার বা এক হাজার ৬২০ কোটি টাকার।

জানা গেছে, শুরুতে ১৯৯৮ সালে চারটি কারখানার মাধ্যমে রফতানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চল মোংলা ইপিজেডের যাত্রা। তবে শুরুর দিকে বিনিয়োগ টানতে না পারলেও এখন বেশ কর্মচাঞ্চল্য দেখা দিয়েছে দক্ষিণাঞ্চলের একমাত্র এই মুক্ত বাণিজ্য ক্ষেত্রে। ৩০৩ একর জায়গার ওপর প্রতিষ্ঠিত দেশের পঞ্চম বৃহত্তম এই ইপিজেডে গার্মেন্টস, মার্বেল টাইলস, পাটজাত দ্রব্য, ক্রোকারিজ, রিফাইন পাম অয়েল, ব্যাটেল নাট (সুপারি) এবং গার্মেন্টস এক্সেসরিজসহ দেশি-বিদেশি মোট ৩১টি কারখানা চালু রয়েছে। এসব কারখানার আটটি বাংলাদেশি বিনিয়োগকারীদের এবং বাকিগুলো চীন, কোরিয়া, জাপান, যুক্তরাষ্ট্র ও ভারতের।

এ ছাড়া কোরিয়ান তিনটি ও চীনের একটি মিলে আরও চারটি বিদেশি বিনিয়োগকারীর কারখানা চালুর অপেক্ষায় রয়েছে। আরও ৬২টি প্লট নতুন করে প্রস্তুত করা হচ্ছে। পদ্মা সেতু চালু হওয়ার পর বিনিয়োগকারীদের চাপ সামলাতেই এই প্লটের প্রস্তুতি বলে জানান মোংলা ইপিজেডের নির্বাহী পরিচালক মাহবুব আহমেদ সিদ্দিক। তিনি জানান, স্বপ্নের পদ্মা সেতু চালু হয়ে যাওয়ায় যোগাযোগ ব্যবস্থার দূরত্ব কমিয়ে আনবে। এতে করে ব্যবসায়ীদের জন্য দারুণ এক সুযোগ তৈরি হবে। এ সময় বিনিয়োগ যেমন বাড়বে, তেমনি পণ্য রফতানিও বাড়বে বহুগুণে।

মোংলা ইপিজেডে দেশি-বিদেশি ৩১টি কারখানা চালু রয়েছে। 

মাহবুব আহমেদ সিদ্দিক বলেন, ‘মোংলা ইপিজেডে চলতি অর্থবছরের ১১ মাসে এখানে বিনিয়োগ হয়েছে ১৬ মিলিয়ন ইউএস ডলার বা ১৪৪ কোটি টাকা। আর পণ্য রফতানি হয়েছে ১৪৩ মিলিয়ন ইউএস ডলার বা এক হাজার ২৮৭ কোটি টাকার। সেতু চালু হওয়ার পর এই ইপিজেডে আগামী অর্থবছরে বিনিয়োগ হবে ২৫ মিলিয়ন ইউএস ডলার বা ২২৫ কোটি টাকা। রফতানি হবে ১৮০ মিলিয়ন ইউএস ডলার বা এক হাজার ৬২০ কোটি টাকার পণ্য।’ এ ছাড়া কর্মসংস্থানও বৃদ্ধি পাবে বলেও জানান তিনি।

মোংলা ইপিজেডে কোরিয়ান বিনিয়োগকারী প্রতিষ্ঠান ডং ইয়ং কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক জং কুন পার্ক বলেন, ‘পদ্মা সেতু চালু হলে লাভজনক হবে আমাদের কোম্পানি। কারণ যোগাযোগ ব্যবস্থা আগের চেয়ে অনেক ভালো হবে।’ এর ফলে তাদের ব্যবসায়ী বন্ধুরা এখানে বিনিয়োগ করবেন মনে করেন তিনি।

এ ছাড়া মোংলা ইপিজেড ব্যবসায়ীদের জন্য একটা আকর্ষণীয় ক্ষেত্র হবে বলেও জানান তিনি। চীনা প্রতিষ্ঠান জিন লাইট বাংলাদেশের জেনারেল ম্যানেজার ইয়ং জহং জানান, পদ্মা সেতু চালু হলে তাদের জন্য অনেক ভালো হবে। ঢাকায় গিয়ে মিটিং করে আবার ফিরে আসা যাবে। এ ছাড়া সেতুর কারণে তাদের সময় এবং খরচ কমাবে। ইতোমধ্যে এই ইপিজেডে বিনিয়োগ করতে তাদের দেশের (চীন) ব্যবসায়ীরা আগ্রহী হয়েছেন।

সেতুটি দ্রুত খুলে দেওয়ার তাগিদ দিয়ে এস জি অয়েল রিফাইনার্স লিমিটেডের পরিচালক প্রফুল্ল কুলকার্নি ও শিকাগো ইন্ডাস্ট্রিজ বি এ লিমিটেডের কান্ট্রি হেড ফেরদৌস জাহান সাজি জানান, সঠিক সময়ে পদ্মা সেতু নির্মাণ সম্পন্ন করায় বিশ্ববাসীর কাছে বাংলাদেশ সরকার প্রশংসা কুড়াচ্ছে। সেতুটি চালুর পর তাদের ব্যবসাতে অনেক উন্নতি হবে। এ ছাড়া এই ইপিজেডে যত বিনিয়োগকারী আছেন সেতুর কারণে তারাও অনেক উপকৃত হবেন।

আরও পড়ুন
সারাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত
সর্বশেষ
জনপ্রিয়