ঢাকা, শনিবার   ২০ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৬ ১৪৩১

তিস্তার চরে মিষ্টি কুমড়া দেখে খুশি সমবায় প্রতিমন্ত্রী

নিউজ ডেস্ক

প্রকাশিত: ১৪:৩৫, ১৩ মার্চ ২০২৩  

তিস্তার চরে মিষ্টি কুমড়া দেখে খুশি সমবায় প্রতিমন্ত্রী

তিস্তার চরে মিষ্টি কুমড়া দেখে খুশি সমবায় প্রতিমন্ত্রী

রংপুরের গঙ্গাচড়ায় তিস্তা নদী বেষ্টিত চরাঞ্চল পরিদর্শন করেছেন করেছেন স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় প্রতিমন্ত্রী স্বপন ভট্টাচার্য্য। এ সময় চরের বুকজুড়ে মিষ্টি কুমড়ার ব্যাপক উৎপাদন ও মালয়েশিয়া-সিঙ্গাপুরে রপ্তানির কার্যক্রম দেখে খুশি হন তিনি। এজন্য প্রতিমন্ত্রী চরাঞ্চলে ফসল উৎপাদনে নিবেদিত চাষিসহ কৃষি বিভাগ ও সংশ্লিষ্টদের ধন্যবাদও জানান।

উপজেলার গজঘণ্টা ইউনিয়নের জয়দেব সরকারপাড়ায় (চর ছালাপাক) পোর্টেবল সোলার ইরিগেশন পাম্প পদ্ধতিতে মিষ্টি কুমড়া উৎপাদন কার্যক্রম পরিদর্শন করেন প্রতিমন্ত্রী স্বপন ভট্টাচার্য্য। পল্লী উন্নয়ন একাডেমি ও সুইস কন্ট্রাক্ট বাংলাদেশের সহযোগিতায় মেকিং মার্কেটস ওয়ার্ক ফর দি চরস (এমফোরসি) মিষ্টি কুমড়া চাষ প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে।

পরে এমফোরসির দ্বিতীয় পর্যায় শীর্ষক প্রকল্প মাঠ দিবসের অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন প্রতিমন্ত্রী স্বপন ভট্টাচার্য্য। এ সময় তিনি কৃষি, কৃষক ও নদীপাড়ের মানুষের উন্নয়নে বর্তমান সরকারের গৃহীত বিভিন্ন পদক্ষেপ এবং সফল কার্যক্রম তুলে ধরেন। দেশের মানুষের জন্য সরকার কাজ করছে, এজন্য জনগণকে দেশবিরোধী সকল ষড়যন্ত্র রুখে দিয়ে সোনার বাংলা গড়তে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানান প্রতিমন্ত্রী।

অনুষ্ঠানে পল্লী উন্নয়ন একাডেমি বগুড়ার মহাপরিচালক (অতিরিক্ত সচিব) খলিল আহমদের সভাপতিত্বে আরও বক্তব্য দেন এমফোরসি প্রকল্পের পরিচালক ড. আব্দুল মজিদ প্রামানিক, গঙ্গাচড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নাহিদ তামান্না, জেলা সমবায় কর্মকর্তা আব্দুস সবুর, উপজেলা মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান রাবিয়া বেগম, অতিরিক্ত কৃষি কর্মকর্তা শারমিন সুলতানা, গঙ্গাচড়া মডেল থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) দুলাল হোসেন, সমবায় কর্মকর্তা আফতাবুজ্জান চয়ন, গঙ্গাচড়া পল্লী উন্নয়ন কর্মকর্তা আনিচুর রহমান, গজঘণ্টা ইউপি চেয়ারম্যান লিয়াকত আলী, বড়বিল ইউপি চেয়ারম্যান শহীদ চৌধুরী দীপ প্রমুখ।

অনুষ্ঠানের সরকারি বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তারা ছাড়াও স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থার প্রতিনিধি, কৃষক ও সংগঠকরা উপস্থিত ছিলেন।  

জানা গেছে, গঙ্গাচড়া উপজেলার তিস্তা নদীর দুর্গম চরাঞ্চলে উৎপাদিত হাইব্রিড জাতের মিষ্টি কুমড়া মালয়েশিয়া ও সিঙ্গাপুরে রপ্তানি হচ্ছে। এর আগে ২০১৬ সালে বেসরকারি উন্নয়নমূলক সংস্থা প্র্যাকটিক্যাল অ্যাকশন বাংলাদেশের উদ্যোগে চরে চাষ করা মিষ্টি কুমড়া পৌঁছেছিল বিদেশের ভোক্তাদের পাতে। আর এবার কৃষি বিভাগের দিক-নির্দেশনা ও এমফোরসি প্রকল্পের সহায়তায় কৃষকদের ক্ষেত থেকে সরাসরি মিষ্টি কুমড়া কিনে মালয়েশিয়া ও সিঙ্গাপুরে পাঠাচ্ছে দুটি রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠান।

ইতোমধ্যে ২০ কোটি টাকার মিষ্টি কুমড়া রপ্তানির অর্ডার পেয়েছে প্রতিষ্ঠান দুটি। এ কারণে চাষিদের কাছ থেকে তারা সরাসরি মিষ্টি কুমড়া কিনে প্যাকেটজাত করছে। তবে শুধু বিদেশেই নয়, স্থানীয় চাহিদা পূরণ করে চরে আবাদ করা মিষ্টি কুমড়া দেশের ১৭টি জেলাতেও পাঠানো হচ্ছে বলে চাষিরা জানিয়েছেন।

চরাঞ্চলের ভূমিহীন ও কৃষিনির্ভর পরিবারের স্বপ্ন পূরণে এগিয়ে এসেছে বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা এমজেএসকেএস, পাম্পকিং প্লাস, এমফোরসি ও বগুড়ার পল্লী উন্নয়ন একাডেমি। বিশেষ করে এমফোরসি তিস্তার চরে মিষ্টি কুমড়া চাষে উন্নত প্রযুক্তি ছড়িয়ে দেওয়ার পাশাপাশি কৃষকদের প্রয়োজনীয় কারিগরি পরামর্শ ও উপকরণ সরবরাহ করে যাচ্ছে। একই সঙ্গে স্থানীয় ব্যবসায়ীদের মাধ্যমে কৃষকদের ফসল সংগ্রহ, পরিচর্যা, ফসলের মান নির্ধারণ, সংরক্ষণ, বাজার সংযোগ বিষয়ে প্রশিক্ষণ দিচ্ছেন তারা। এতে করে উৎপাদিত পণ্যের ন্যায্য দাম নিশ্চিত হওয়ার পাশাপাশি রপ্তানিকারকদের সঙ্গে কৃষকদের যোগসূত্রও তৈরি হচ্ছে।

সারাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত
সর্বশেষ
জনপ্রিয়