টানা ৭০ বছর খাবার না খেয়েও বেঁচেছিলেন এই সন্ন্যাসী!
ফিচার ডেস্ক
প্রহ্লাদ জানী টানা ৭০ বছর না খেয়ে বেঁচেছিলেন
পরনে লাল শাড়ি, নাকে নথ, হাতে ও গলায় গয়না। মা অম্বার সাধক তিনি। তাই দীর্ঘ ৭০ বছর ধরে এ রকম পরিধানেই অভ্যস্ত এই সন্ন্যাসী। এই ধরনের বেশভূষার জন্যেই তার ভক্তদের কাছে ‘মাতাজি’ বা ‘চুড়িওয়ালা মাতাজি’ নামে পরিচিত।
তবে, তিনি যে শুধু এই কারণের জন্য বিখ্যাত, তা নয়। তিনি দীর্ঘ ৭০ বছর ধরে পানি বা কোনো খাবার স্পর্শ করেননি। কোনো সাধারণ মানুষ পানি না খেয়ে ১০ থেকে ১৫ দিনের বেশি বেঁচে থাকতে পারেন না। তবে এই সন্ন্যাসী কী করে এত দিন সুস্থ হয়ে বেঁচে আছেন?
শুধু মাত্র ভারতেই নয়, আমেরিকা, অস্ট্রিয়া, জার্মানির বহু চিকিৎসক এবং গবেষক মাতাজির শারীরিক অবস্থা পর্যবেক্ষণ করেছেন। মানবদেহে লেনোমোরেলিন এবং লেপটিন হরমোন উপস্থিতির ফলে বার বার মানুযের খিদে পায়। তারা অনুমান করেছিলেন, সন্ন্যাসীর শরীরে এই হরমোনগুলোর উৎপাদন প্রায় শূন্য। তাই খিদে পাওয়ার প্রবণতাও কম। ২০০৩ সালে সুধীর শাহ আমদাবাদের স্টারলিং হাসপাতালে একটি বদ্ধ ঘরে রেখে বিভিন্ন রক্ত পরীক্ষা, স্ক্যান ইত্যাদি করেন।
মাঝে মাঝে রোদ পোহাতে সন্ন্যাসী বাইরে যেতেন ঠিকই, কিন্তু তাকে কখনই কোনো রকম খাবার দেওয়া হয়নি। প্রায় ১০ দিন এ ভাবে থাকার পর চিকিৎসকরা লক্ষ করলেন, মাতাজি বিগত ১০ দিন যাবৎ মল বা মূত্র ত্যাগ করেননি। শরীরের বর্জ্য পদার্থ বর্জন না করাও মানবদেহের পক্ষে ক্ষতিকর। এত কিছু সত্ত্বেও মাতাজি শারীরিক দিক দিয়ে একদম সুস্থ। পরে আবার ২০১০ সালে তার উপর গবেষণা করা হয়।
এমন অনেকেই রয়েছেন, পেশাগত কারণে যাদের বহু দিন না খেয়েও থাকতে হয়। ভারতীয় সেনাদের উদাহরণ তার মধ্যে অন্যতম। চিকিৎসকদের ধারণা, মাতাজি কীভাবে দিনযাপন করেন তার সমাধান খুঁজে পেলে সবার সামনে এক নতুন পথের দিশা সামনে আসবে। কিন্তু পর পর দু’বার গবেষণার পরেও কোনো সমাধান খুঁজে পাননি কেউই। বরং তার জিভের উপর অদ্ভুত আকারের একটি ছিদ্র লক্ষ করেছিলেন চিকিৎসকেরা।
মাতাজির মতে, মা অম্বাই এই ছিদ্রের মাধ্যমে তার মুখে খাবার এনে দেন, কোনোদিনই তাকে অভুক্ত রাখেননি তার মা। তাই আর আলাদা করে কিছু খাওয়ার দরকার পড়ে না মাতাজির। তার আসল নাম অবশ্য প্রহ্লাদ জানী। গুজরাতের চারাদা গ্রামে তার জন্ম। সাত বছর বয়সে তিনি বাবা-মাকে ছেড়ে জঙ্গলে গিয়ে থাকতে শুরু করেন। তখনই তিনি আধ্যাত্মিক শক্তির উপস্থিতি টের পান। কথিত, মা দুর্গার আর এক রূপ মাতা অম্বার দর্শন লাভ করেন তিনি।
১৯৭০ সাল পর্যন্ত তিনি চারাদা গ্রামের নিকটবর্তী জঙ্গলে একটি গুহায় থাকতেন। গব্বর হিল এলাকায় একটি তার একটি আশ্রমও রয়েছে। ২০২০ সালের ২৬ মে মাতাজি প্রয়াত হন। তার মৃত্যু নিয়ে এখনও রহস্য রয়েছে। দেশ-বিদেশের বহু নামকরা চ্যানেল থেকে ‘চুড়িওয়ালা মাতাজি’কে নিয়ে ডকুমেন্টরি বানানো হয়েছে। তাকে ঘিরে এখনও প্রচুর প্রশ্ন রয়েছে, যার উত্তর পাওয়া এখন অসম্ভব।
সূত্র: আনন্দবাজার
- ১৯ ইঞ্চি কান নিয়ে ছাগল ছানার গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ড
- এই গ্রামের কেউ পোশাক পরেন না, খুলে ফেলতে হয় পর্যটকদেরও কাপড়
- বাংলাদেশের কোন জেলা কিসের জন্য বিখ্যাত
- বাংলাদেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় ১০ আঞ্চলিক ভাষা
- তিনটি হৃৎপিণ্ড নিয়ে বেঁচে আছে এই প্রাণী
- প্রাইজবন্ড: কীভাবে কিনবেন, পুরস্কারের টাকা পায় কয়জন?
- এশিয়ার সেরা ‘স্ট্রিট ফুডের’ তালিকায় বাংলাদেশের ফুচকা
- ইতিহাসে বিশ্বের সবচেয়ে রহস্যময় প্রাসাদ
- উদ্যোক্তা হতে নারীর সংগ্রাম
- লাল বিবির কবর