ঝড়-বৃষ্টির শঙ্কায় আগেভাগেই বোরো ধান ঘরে তোলার চেষ্টা
নিউজ ডেস্ক
ধান মাড়াই করছেন কৃষক
বৈরী আবহাওয়ার শঙ্কায় আগেভাগেই বোরো ধান ঘরে তোলার উৎসবে মেতে উঠেছেন তিস্তা আর ধরলা নদী বেষ্টিত জেলা লালমনিরহাটের কৃষকরা।
জানা গেছে, তিস্তা ও ধরলা নদী বেষ্টিত জেলা লালমনিরহাটের অর্থনীতির প্রধান চাবিকাঠি কৃষি।
বছরে দুই থেকে তিনবার ধান উৎপাদন হলেও বোরো ধানের ফলন বেশি এ জেলায়। যদিও এ ধান উৎপাদনে খরচ বেশি। সেচ, সার ও কীটনাশকের দাম বেড়ে যাওয়ায় উৎপাদন খরচ বেড়েছে। বৈশাখ মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহ থেকে বোরো ধান মাড়াই শুরু করেন জেলার কৃষকরা। এ বছর বৈরী আবহাওয়ার কারণে অনেকটা শঙ্কা নিয়ে দ্রুত ধান মাড়াই করতে ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন চাষিরা।
বৈশাখ মাস আসার আগেই শিলাবৃষ্টি আর ঝড় শুরু হয়। কয়েক দফায় শিলাবৃষ্টি আর ঝড়ে উঠতি বোরো ধান নিয়ে বড় দুশ্চিন্তায় পড়েন কৃষকরা। পাকা ধান শিলাবৃষ্টির কবলে পড়লে গোলা ভড়ানো কষ্টসাধ্য হয়ে পড়বে। তাই বোরো ধান পূর্ণ পরিপক্ব হওয়ার আগেই কেউ কেউ ধান মাড়াই শুরু করেছেন। জেলার কিছু কিছু এলাকায় শিলাবৃষ্টি আর ঝড়ের কারণে ফলন কিছুটা কম হলেও বেশিভাগ অঞ্চলে বোরো ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। ফলনে এসব কৃষক পরিবার খুশি থাকলেও বৈরী আবহাওয়া ও দাম নিয়ে শঙ্কায় রয়েছেন তারা।
কৃষকরা জানান, বীজ, সার, সেচ ও কীটনাশকের দাম বেড়েছে। শ্রমিক মজুরিও বেড়েছে কয়েকগুন। তাই বোরো ধানে উৎপাদন খরচও বেড়েছে। অপরদিকে বৈরী আবহাওয়ায় প্রায় প্রতিদিনই আকাশ কালো মেঘে ছেয়ে যায়। পাকা ধান শিলাবৃষ্টি বা কালবৈশাখীর কবলে পড়লে সমূলে বিনষ্ট হবে। সেই শঙ্কায় কিছুটা আগাম ধান মাড়াই শুরু করেছেন তারা। ফলনে খুশি হলেও দাম নিয়ে শঙ্কায় রয়েছে। সরকারিভাবে প্রতি মণ (৪০ কেজি) ধানের মূল্য এক হাজার ৮০ টাকা নির্ধারণ করা হলেও স্থানীয় বাজারে ৮০০-৮৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
মহিষখোচার কৃষক তাহাজুল ইসলাম বলেন, আকাশের যে অবস্থা। প্রতিদিন আকাশ ডাকাডাকি করে। এবার শিলাবৃষ্টি হলে একটা ধানও ঘরে তোলা যাবে না। তাই ধান পাকা শুরু হতেই কাটা শুরু করেছি। বাকি দিনগুলো আবহাওয়া ভালো থাকলে সব ধান ঘরে তোলা যাবে। নয়তো লোকসান গুনতে হবে।
চলবলার কৃষক তমিজ উদ্দিন বলেন, সরকার সারের যে দাম বেধে দেয়। সেই দামে তো আর সার পাওয়া যায় না। বাড়তি দামে কিনে বোরো চাষ করেছি। ফলন যা হয়েছে এতেই খুশি। ধান ঘরে তোলা পর্যন্ত আকাশ ভালো থাকলেই হয়। আর দাম যদি ভাল পাই। তবে লোকসান হবে না। সরকারি গুদামে ক্রয় শুরু হয়নি। বর্তমানের বাজার মূল্যে ধান বিক্রি করলে লোকসান গুনতে হবে। ধান মাড়াই খরচ যোগাতে কম দামেই বিক্রি করতে হচ্ছে। সব জিনিসের দাম বাড়ে। কমে শুধু কৃষকের কষ্টের ফসলের দাম। কৃষকের ধান বিক্রি শেষ হলে ধানের দামও বাড়বে। তখন ব্যবসায়ীরা লাভবান হবে। আমাদের কষ্ট করাই বৃথা।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর জানায়, চলতি মৌসুমে জেলার ৫টি উপজেলায় ৪৭ হাজার ৩০৫ হেক্টর বোরো চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়। অর্জিত হয়েছে ৪৭ হাজার ৮১৫ হেক্টর। জেলায় চাল উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ২ লাখ ৭হাজার ৯৭৯ মেট্রিক টন। বোরো ধান ঘরে তোলা পর্যন্ত আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে চালের উৎপাদন কিছুটা বাড়বে।
লালমনিরহাট কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ পরিচালক শামীম আশরাফ বলেন, কিছুটা বৈরী আবহাওয়ার মাঝেও বোরোর ফলন মোটামুটি ভালই হয়েছে। ধান ঘরে তোলা পর্যন্ত আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে কৃষকরা লাভবান হবেন। মাড়াই করার উপযুক্ত ধান ক্ষেতে না রেখে দ্রুত ঘরে তোলার পরামর্শ দেন তিনি।
- শেরপুরে প্রথমবারের মতো ‘ব্ল্যাক রাইস’ চাষ করে সফলতা
- ময়মনসিংহ জেলার ভালুকায় জনপ্রিয় হয়ে উঠছে কেঁচো সার
- ৩৫৮ কোটি টাকায় হবে শেরপুর-ময়মনসিংহ সড়কের উন্নয়ন
- ঈদের আগেই উদ্বোধন হবে ঝালকাঠির কচুয়া-বেতাগী ফেরি
- বড়শিতে ধরা পড়ল ৩০ কেজির কাতল
- নেত্রকোণার পূর্বধলা উপজেলাকে “ক” শ্রেনীর ভূমিহীন ও গৃহহীন মুক্ত করার লক্ষ্যে যৌথ সভা অনুষ্ঠিত
- শেরপুরে ‘কালো ধান’ চাষ করে সফল উদ্যোক্তারা
- শেরপুরে একই পরিবারের ৭ জনই গ্রহণ করেছেন ইসলাম ধর্ম
- ময়মনসিংহ সেরা সাংবাদিক সম্মাননা পেলেন মোঃ রইছ উদ্দিন
- দেশের চাহিদা পূরণে সক্ষম ময়মনসিংহের ফুলবাড়িয়ার হাতে তৈরি লাল চিনি