ঢাকা, মঙ্গলবার   ১৬ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৩ ১৪৩১

ছোট গল্প: হৃদয় আকাশে মেঘ

সৈয়দ আহসান হাবীব

প্রকাশিত: ১৩:১৫, ২৩ মার্চ ২০২৩  

প্রতীকী ছবি

প্রতীকী ছবি

সারাদিন পরিশ্রমে ক্লান্ত হয়ে বাড়ি ফিরেছি। তার ওপর মানসিক দুশ্চিন্তায় বিপর্যস্ত। কী করবো? কিছুই বুঝে উঠতে পারছি না। অনেক কষ্টে প্রিয়ন্তীকে বিয়ের জন্য রাজি করেছি। সে তো কিছুতেই রাজি নয় পালিয়ে বিয়ে করতে। তার কাজিনরা চায় মহা ধুমধাম করে বর এসে নববধূকে বরণ করবে।

এদিকে আমি এমন আর্থিক দুরবস্থায় পড়েছি, সংসার চালানোই মুশকিল হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রিয়ন্তীকে কিছুতেই বোঝাতে পারছি না, বিয়েটা আরও বছরখানেক পর করলে ভালো হয়। না, সে কিছুতেই মানছে না। আমার জন্য সে আর অপেক্ষা করতে চায় না।

তার ছোট ভাই-বোন সবার বিয়ে হয়ে গেছে। গতকাল তার মা তাকে এমন কিছু বলেছে, যা সহ্য করা সম্ভব নয়। তার ওপর সে একটা ভালো সরকারি চাকরি করে।

মেয়েটি শুধু আমাকে ভালোবেসে দশ বছর অপেক্ষা করে আছে। কখন আমার একটি সরকারি চাকরি হবে। এদিকে প্রতিদিন প্রিয়ন্তীর বিয়ের প্রস্তাব আসছে। ছেলেরা সব নামিদামি জব করে। বুয়েট পাস করা এক ভদ্রলোক তো প্রিয়ন্তীকে দেখে সেদিনই বিয়ে করে নিয়ে যাবে। প্রিয়ন্তীর সুখের জন্য তার মা বিয়েটা ভেঙে দেন। সে অনেক কষ্টে পরিবারের সবাইকে বোঝাতে পেরেছে, আমাকে ছাড়া কাউকে বিয়ে করতে পারবে না।

তার অস্তিত্বজুড়ে শুধুই আমি। তিলে তিলে গড়ে ওঠা ভালোবাসা আর ভরসায় আশ্রয় করে আমার হাত ধরেই সারাটা জীবন কাটাতে চায়। আসলেই মেয়েটা বড় মায়াবী। চোখ দুটোয় কেমন যেন একটা জাদু আছে। তার চোখে তাকালে যে কেউ মুগ্ধ হতে বাধ্য। এ যেন অদৃশ্য মায়ার টান। যা কখনো ছিঁড়ে ফেলা যায় না।

আজ আমার বুকের বাঁপাশে কেমন একটা তীব্র ব্যথা অনুভূত হলো। নিজের অজান্তেই দুচোখ বেয়ে গড়িয়ে পড়লো দুফোটা নোনাজল। নিজেকে ধিক্কার দিতে ইচ্ছে করছে। কী আর করা! নিয়তি যেন আমার সঙ্গে যুদ্ধ শুরু করেছে। যে যুদ্ধে হার ছাড়া জেতার সম্ভাবনা নেই। এমনই মানসিক যন্ত্রণায় পড়ে আছি।

প্রিয়ন্তী শেষপর্যন্ত সবাইকে রাজি করাতে পেরেছে। অবশেষে বিয়ের দিনক্ষণ ঠিক হলো, শ্রাবণ মাসের ৪ তারিখ। খুবই অনাড়ম্বরভাবে ঘরোয়া পরিবেশে আমাদের বিয়ে হয়ে গেল।

সর্বশেষ
জনপ্রিয়