ঢাকা, শুক্রবার   ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৬ ১৪৩১

চোখের সুস্থতা ও দৃষ্টি শক্তি ফিরে পাওয়ার আমল

ধর্ম ডেস্ক

প্রকাশিত: ১৬:২৪, ১২ মার্চ ২০২৩  

ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

মহান রাব্বুল আলামিন আল্লাহ তাআলা আমাদেরকে অনেক অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের সম্বন্বয়ে সৃষ্টি করেছেন। মানব দেহের প্রতিটি অঙ্গ প্রত্যঙ্গই গুরুত্বপূর্ণ। চোখ তার মধ্যে অন্যতম।

চোখ মহান আল্লাহর বিস্ময়কর সৃষ্টি। তবে নানা কারণে মানুষের চোখে সমস্যা হয়। যেমন চোখ ওঠা থেকে শুরু করে দৃষ্টি শক্তিও হ্রাস পায়। চোখের এ সব সমস্যা ও দৃষ্টি শক্তি ফিরে পেতে রয়েছে পবিত্র কোরআন হাদিসের আমল। তা থেকে কিছু তুলে ধরা হলো-

রাব্বুল আলামিন আল্লাহ তাআলা কোরআনুল কারিমে ইরশাদ করেন,

أَلَمْ نَجْعَل لَّهُ عَيْنَيْنِ 

উচ্চারণ: ‘আলাম নাজ’আল্লাহু’আইনাইন।’

অর্থ: ‘আমি (আল্লাহ) কি তার জন্য সৃষ্টি করিনি দুই চোখ?’ (সূরা: বালাদ, আয়াত: ৮)

হাদিসে এসেছে-

اَللَّهُمَّ اِنِّى اَعُوْذُبِكَ مِنْ شَرِّ سَمْعِىْ وَ شَرِّ بَصَرِىْ وَ شَرِّ لِسَانِىْ وَ شَرِّ قَلْبِىْ وَ شَرِّ مَنِيِّىْ

উচ্চারণ : ‘আল্লাহুম্মা ইন্নি আউজুবিকা মিন শাররি সাময়ি ওয়া শাররি বাসারি ওয়া সাররি লিসানি ওয়া সাররি ক্বালবি ওয়অ সাররি মানিয়্যি।’

অর্থ : ‘হে আল্লাহ! আমি তোমার কাছে আমার কানের অপকারিতা, চোখের অপকারিতা, জবানের অপকারিতা, অন্তরের অপকারিতা এবং বীর্জের অপকারিতা থেকে আশ্রয় চাই।’ (মিশকাত, আবু দাউদ)

সুতরাং যাদের চোখে সমস্যা বা অসুস্থতা রয়েছে তারা শুধু এভাবে বলবে-

اَللَّهُمَّ اِنِّى اَعُوْذُبِكَ مِنْ شَرِّ بَصَرِىْ

উচ্চারণ: ‘আল্লাহুম্মা ইন্নি আউজুবিকা মিন শাররি বাসারি।’

অর্থ : হে আল্লাহ! আমি তোমার কাছে আমার চোখের অপকারিতা থেকে আশ্রয় চাই।

এ ছাড়া চোখের যাবতীয় সমস্যা ও দৃষ্টি শক্তি সুন্দর ও নিরাপদ থাকতে এ আমলগুলোও করা যেতে পারে। যাদের দৃষ্টি শক্তি কম; এমনকি যাদের দৃষ্টি শক্তি পুরোপুরিই হারিয়ে গেছে তারা যদি এ আমলটি করে তবে আল্লাহ তাআলা তাদের দৃষ্টি শক্তি ফিরিয়ে দেবেন।

> প্রত্যেক ফরজ নামাজের পরে আয়াতুল কুরসি পাঠ করা। তা পাঠ করার নিয়ম হলো- আয়াতুল কুরসি পাঠ করার সময় যখন (وَ لَا يَئُوْدُهُ حِفْظُهُمَا) ‘ওয়ালা ইয়াউদুহু হিফজুহুমা’ এ আয়াতাংশটি পড়বে তখন ডান হাতের পাঁচটি আঙ্গুলের মাথা ডান চোখের ওপরে, বাম হাতের পাঁটটি আঙ্গুলের মাথা বাম চোখের ওপরে রেখে ১১ বার পড়তে হবে। (وَ لَا يَئُوْدُهُ حِفْظُهُمَا) ‘ওয়ালা ইয়াউদুহু হিফজুহুমা’ ১১ বার পড়া হলে আঙ্গুলগুলো চোখ থেকে সরিয়ে ফেলতে হবে।

অতঃপর (وَ هُوَ الْعَلِىُّ الْعَظِيْم) ‌‘ওয়া হুয়াল আলিয়ু্ল আজিম’ পড়ার মাধ্যমে আয়াতুল কুরসি পড়া শেষ হলে উল্লেখিত উভয় হাতের আঙ্গুলগুলোতে ফুঁ দিয়ে তা উভয় চোখের ওপর মাসেহ করে নেয়া।

আশা করা যায়, আল্লাহ তাআলা দৃষ্টি শক্তি ফিরিয়ে দেওয়াসহ যাবতীয় অসুস্থতা থেকে চোখকে মুক্ত রাখবেন।

> আল্লাহর গুণ বাচক নাম (يَا شَكُوْرُ) ইয়া শাকুরু ৪১ বার পাঠ করে পানিতে ফুঁ দিয়ে; সেই পানি চোখে দিলে ইনশা আল্লাহ চোখকে রোগমুক্ত করবেন।

> প্রত্যেক নামাজের পর আল্লাহর গুণ বাচক নাম (يا نُوْرُ) ইয়া নুরু ১১ বার পাঠ করা। তবে তা পড়ার আগে ও পরে দরূদ শরিফ পাঠ করে নেয়া। দরূদ শরিফ পড়ে ১১ বার পড়ার পর ১০ আঙ্গুলে ফুঁ দিয়ে আগের ন্যায় উভয় চোখের ওপর মাসেহ করে নেয়া। আল্লাহর মেহেরবানী এ আমলেও দৃষ্টি শক্তি ভালো হবে।

> চোখের দৃষ্টি শক্তি ভালো রাখার জন্য ইমাম শাফেয়ী রহমাতুল্লাহি আলাইহি নিয়মিত ৪টি কাজ করতে বলেছেন। আর তাহলো-

(১) সব সময় কেবলামুখী হয়ে বসার চেষ্টা করা;

(২) নিয়মিত ঘুমাতে যাওয়ার সময় উভয় চোখে সুরমা লাগানো;

(৩) সবুজ গাছ-গাছালি তথা সবুজ জিনিসের দিকে বেশি বেশি দৃষ্টি দেয়া;

(৪) পোশাক-পরিচ্ছদ পরিচ্ছন্ন রাখা।

> যদি কোনো ব্যক্তি চোখের ব্যাথা কিংবা চোখের সমস্যা নিপতিত হয়, তবে এ আয়াতটি ৩ বার পড়ে উভয় হাতের বৃদ্ধাঙ্গৃলের নখে ফুঁ দিয়ে উভয় চোখের ওপর মাসেহ করে নেয়।

فَكَشَفْنَا عَنكَ غِطَاءَكَ فَبَصَرُكَ الْيَوْمَ حَدِيدٌ

উচ্চারণ : (ফাকাশাফনা আংকা গিত্বাআকা ফাবাসারুকাল ইয়াওমা হাদিদ।’ (সূরা: ক্বাফ, আয়াত: ২২)

অর্থ : ‘তোমার সামনে থেকে পর্দা উন্মোচন করেছি; অতএব আজ তোমার দৃষ্টি প্রখর।’

ইয়া আল্লাহ! আমাদের চোখের যাবতীয় সমস্যা সমাধানে উল্লেখিত আমলগুলো যথাযথভাবে আদায় করার তাওফিক দান করুন। আমিন।

সর্বশেষ
জনপ্রিয়