ঢাকা, শনিবার   ২০ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৭ ১৪৩১

চট্টগ্রামে নও মুসলিমসহ জামাতুল শারক্বীয়ার ৪ জঙ্গি গ্রেপ্তার

নিউজ ডেস্ক

প্রকাশিত: ১০:০৭, ২ মার্চ ২০২৩  

চট্টগ্রামে নও মুসলিমসহ জামাতুল শারক্বীয়ার ৪ জঙ্গি গ্রেপ্তার

চট্টগ্রামে নও মুসলিমসহ জামাতুল শারক্বীয়ার ৪ জঙ্গি গ্রেপ্তার

নতুন জঙ্গি সংগঠন জামাতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্বীয়ার চার সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে র‍্যাব। তাদের মধ্যে একজন নও মুসলিমও রয়েছে। তাদের কাছ থেকে প্রশিক্ষণসহ জঙ্গি তৎপরতার একটি ভিডিও কনটেন্ট উদ্ধার করা হয়েছে। র‌্যাবের দাবি, নতুন এই জঙ্গি সদস্যদের দেশের অভ্যন্তরে সশস্ত্র হামলা চালানোর পরিকল্পনা ছিল। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, আইনপ্রণেতা ও বিচারকাজে জড়িতরা ছিল তাদের টার্গেট।

গত মঙ্গলবার রাতে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কের পটিয়া বাইপাস এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয় পটুয়াখালীর দশমিনার হোসাইন আহমদ (২২), কুমিল্লা সদর এলাকার নিহাল আব্দুল্লাহ (১৯), একই এলাকার আল আমিন (২২) ও খুলনার ডুমুরিয়ার আল আমিন ওরফে পার্থ কুমার দাসকে (২১)। এই নিয়ে এখন পর্যন্ত এই সংগঠনের ৫৯ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এ ছাড়া তাদের প্রশিক্ষণে জড়িত পাবর্ত্য চট্টগ্রামের বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্টের (কেএনএফ) ১৭ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

র‍্যাব জানায়, হরকাতুল জিহাদ (হুজি), আনসার আল ইসলাম ও জেএমবির সাবেক সদস্যদের সমন্বয়ে গড়ে উঠেছে জামাতুল শারক্কীয়া। অর্থের বিনিময়ে তাদের প্রশিক্ষণ ও অস্ত্র জোগান দিত কেএনএফ।

বুধবার র‍্যাব-৭-এর বহদ্দারহাট ক্যাম্পে সংবাদ সম্মেলনে বাহিনীর লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন জানান, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অব্যাহত অভিযানের ফলে নতুন এই জঙ্গি সংগঠনের সদস্যরা পাহাড়ে অনিরাপদ বোধ করছিল। তারা সংগঠনের আমিরের নির্দেশে কয়েকটি গ্রুপে বিভক্ত হয়ে সাইজাম পাড়া, মুন্নুয়াম পাড়া, রোয়াংছড়ি, পাইক্ষ্যং পাড়া, তেলাং পাড়াসহ পার্বত্য অঞ্চলের বিভিন্ন স্থানে আত্মগোপন করে। তাদের বেশ কয়েকজন সদস্য পার্বত্য চট্টগ্রামের পাহাড় থেকে বের হয়ে সমতলে আত্মগোপনে যাওয়ার চেষ্টা করছে। তাদের একটি দল চার দিন আগে পাহাড়ের গহিন থেকে হেঁটে বান্দরবানের টঙ্কাবতী এলাকায় আসে।

এ তথ্যের ভিত্তিতে র‍্যাব সদর দপ্তরের গোয়েন্দা শাখা ও র‍্যাব-৭ চেকপোস্টসহ টহল বাড়িয়ে দেয়। চেকপোস্ট চলাকালে গত মঙ্গলবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে পটিয়া বাইপাস এলাকায় একটি সিএনজিচালিত অটোরিকশা থেকে চারজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাদের পেছনে আরও চার-পাঁচজন ছিল। বিপদ বুঝতে পেরে তারা পালিয়ে যায়।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, গ্রেপ্তার নিহাল জঙ্গি সংগঠনটিতে যুক্ত হওয়ার পর আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কোনো স্থাপনা ওপর হামলার পরিকল্পনা করে। এ জন্য সহযোগীদের নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে একটি ক্লোজ গ্রুপ খোলে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর তৎপরতার কারণে এ হামলা চালাতে পারেনি সে।

গ্রেপ্তার হোসাইন আহমদ ২০২১ সালে জঙ্গি সংগঠনটির অর্থ শাখার প্রধান রাকিবের মাধ্যমে সশস্ত্র প্রশিক্ষণের জন্য পার্বত্য চট্টগ্রামে যায় বলে জানায় র‌্যাব। গ্রেপ্তার আল আমিন কুমিল্লার একটি মাদ্রাসায় অধ্যয়নরত ছিল। ২০২১ সালে একজন সহপাঠীর মাধ্যমে জঙ্গিবাদে উদ্বুদ্ধ হয় সে। সেও একই সময় প্রশিক্ষণের জন্য পার্বত্য চট্টগ্রামে আসে। গ্রেপ্তার আল আমিন ওরফে পার্থ কুমার দাস ২০১৮ সালে ইসলাম গ্রহণ করে। পরে ঢাকায় গিয়ে সিকিউরিটি গার্ডের চাকরি নেয়। সেখানে তার সঙ্গে সিরাজ নামের এক জঙ্গির পরিচয় হয়।

এ ছাড়া কুমিল্লা থেকে স্বেচ্ছায় নিরুদ্দেশ হওয়া আটজনের একজন গ্রেপ্তার নিহাল আব্দুল্লাহ। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে সে জানিয়েছে, ২০২০ সালের শেষ দিকে স্থানীয় কুবা মসজিদের ইমাম হাবিবুল্লাহর মাধ্যমে জঙ্গিবাদে উদ্বুদ্ধ হয় সে। বিভিন্ন সময় ঢাকা, ভোলা, পটুয়াখালীসহ বিভিন্ন স্থানে প্রাথমিক প্রশিক্ষণ শেষে পার্বত্য চট্টগ্রামে প্রশিক্ষণের জন্য আসে সে। ২০২২ সালের আগস্টে কথিত হিজরতের নামে বাড়ি থেকে নিরুদ্দেশ হয়। পরে পাবর্ত্য চট্টগ্রামে আসে। তারা সবাই সব ধরনের অস্ত্র চালানোর প্রশিক্ষণ নিয়েছেন বলে দাবি র‍্যাবের।

আরও পড়ুন
সারাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত
সর্বশেষ
জনপ্রিয়