ঢাকা, শুক্রবার   ২৯ মার্চ ২০২৪ ||  চৈত্র ১৫ ১৪৩০

গ্যাস-বিদ্যুৎ ব্যবহারে মিতব্যয়ী হতে হবে: নসরুল হামিদ

নিউজ ডেস্ক

প্রকাশিত: ২১:৪১, ৬ জুলাই ২০২২  

বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ

বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ

বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বলেছেন, গ্যাস-বিদ্যুৎ ব্যবহারে মিতব্যয়ী হতে হবে। বিদ্যুৎ ও জ্বালানির বর্তমান পরিস্থিতি ব্যাখ্যা করে এক বার্তায় এ কথা বলেন তিনি।

মন্ত্রণালয়ের এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়। 

প্রতিমন্ত্রী বলেন, গত দুই বছরের বেশি সময় ধরে বৈশ্বিক মহামারি কোভিড-১৯ এর প্রভাব সব জায়গায় পড়েছে। করোনার ধাক্কা যখন সবাই কাটিয়ে উঠছিল তখনই রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ পুরো বিশ্বকে গভীর সংকটে ফেলেছে। এই সংকট শুধু উন্নয়নশীল দেশেই নয়, অনেক উন্নত দেশেও পড়েছে। যুদ্ধের প্রভাবে জ্বালানি মার্কেট চরম অস্থিতিশীল হয়েছে। আন্তর্জাতিক খাদ্য পণ্যের বাজারও বেসামাল। বৈশ্বিক এ সংকট আমাদেরও বিপদে ফেলেছে।

তিনি বলেন, আপনারা জানেন সম্প্রতি বাংলাদেশ ৫২ বিলিয়ন ডলারের রফতানির অনন্য মাইলফলক অর্জন করেছে। অর্থাৎ গত একযুগে নিরবচ্ছিন্ন গ্যাস ও বিদ্যুৎ সরবরাহের কারণে আমাদের শিল্পায়ন অতীতের সব রেকর্ড ছাড়িয়েছে।

উন্নত দেশ জাপান ও অস্ট্রেলিয়ার বিদ্যুৎ সংকটের বিষয়টিও তুলে ধরেন নসরুল হামিদ। ভারত-পাকিস্তানের বিদ্যুৎ সংকেটর বিষয়টিও সামনে আনেন তিনি।

বাংলাদেশে বর্তমানে বিদ্যুৎ সংকেটর বিষয়টি তুলে ধরে প্রতিমন্ত্রী বলেন, আমাদের বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য ১৬০০-১৭০০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাসের প্রয়োজন। সেখানে আমরা দিতে পারছি মাত্র ৯০০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস। এর বেশি গ্যাস আমরা দিতে পারছি না, কারণ অগ্রাধিকার দিতে হচ্ছে কৃষি ও শিল্পখাতকে। কৃষির জন্য সার অপরিহার্য। সার উৎপাদনেও অনেক গ্যাস দিতে হচ্ছে।

তিনি বলেন, আমাদের বর্তমানে দৈনিক গ্যাসের উৎপাদন ২৩০০ মিলিয়ন ঘনফুট। চাহিদার বাকি বৃহৎ অংশ এলএনজি আমদানি করে জাতীয় গ্রিডে সরবরাহ করা হচ্ছে। ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার সময়ও গ্যাসের উৎপাদন ছিল দৈনিক মাত্র ১৭৪৪ মিলিয়ন ঘনফুট। সেখান থেকে উৎপাদন সক্ষমতা বাড়িয়েছিলাম দৈনিক ২৭৫০ মিলিয়ন ঘনফুট পর্যন্ত। ২০১৮ সাল পর্যন্ত আমরা গ্যাস উৎপাদন করেছি। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য, আমাদের খনিগুলোর রির্জাভ কমে যাওয়ায় নিজস্ব গ্যাস উৎপাদন কমতে শুরু করেছে।

নসরুল হামিদ বলেন, এলএনজি আমদানির জন্য কাতার এবং ওমানের সঙ্গে দীর্ঘমেয়াদি চুক্তির আওতায় আমরা এলএনজি পাচ্ছি। পাশাপাশি আন্তর্জাতিক স্পট মার্কেট থেকেও এলএনজি আমদানি হতো। কোভিড-১৯ এর আগে ১ ইউনিট এলএনজি ৪ ডলারেও আমদানি করেছি। বর্তমানে ৪১ ডলার ছাড়িয়েছে। উচ্চমূল্যে আমদানি করলে আমাদের অর্থনীতির উপর বিশাল চাপ তৈরি হবে। শুধু গ্যাসের দামই না, বেড়েছে সব ধরনের জ্বালানি তেলের দাম।

তিনি আরো বলেন, ২০২১ সালের জুলাইয়ে ডিজেল ব্যারেল প্রতি ৭৭ ডলার ছিল, এ বছরের জুনে ১৭১ ডলারে দাঁড়িয়েছে। সরকার নিজস্ব জ্বালানির অনুসন্ধান, উৎপাদন বৃদ্ধি এবং বিদ্যমান কূপগুলোয় আরো গভীরে খনন করে গ্যাসের অনুসন্ধান চালাচ্ছে। এরই মধ্যে আগামী ৩ বছরের আপগ্রেডেশন, ওয়ার্কওভারের স্বল্পমেয়াদি পরিকল্পনা নিয়েছি। যেন ৪৬টি কূপ থেকে দৈনিক ৬১৮ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস নতুন করে জাতীয় গ্রিডে যুক্ত হতে পারে।

এ পরিস্থিতি খুব বেশিদিন থাকবে না উল্লেখ করে প্রতিমন্ত্রী জানান, চলতি বছরেই পায়রা তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের দ্বিতীয় ইউনিট, রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র এবং ভারত থেকে ১৬০০ মেগাওয়াট আমদানিকৃত বিদ্যুৎ জাতীয় গ্রিডে যুক্ত হবে।

নসরুল হামিদ বলেন, চলমান সংকটে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপর প্রতি বিশ্বাস রাখুন। সবার কাছে একটাই অনুরোধ আসুন আমরা সবাই গ্যাস-বিদ্যুৎ ব্যবহারে মিতব্যয়ী হই।

সর্বশেষ
জনপ্রিয়