ঢাকা, শুক্রবার   ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৫ ১৪৩১

কোটি টাকার পদবাণিজ্যে বিএনপির ৪ নেতা

নিউজ ডেস্ক

প্রকাশিত: ১৬:৩৭, ২৪ মার্চ ২০২৩  

কোটি টাকার পদবাণিজ্যে বিএনপির ৪ নেতা

কোটি টাকার পদবাণিজ্যে বিএনপির ৪ নেতা

বরগুনা জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির চার নেতার বিরুদ্ধে কোটি টাকার পদবাণিজ্যের অভিযোগ উঠেছে। একটি বেসরকারি ব্যাংকের মাধ্যমে পদ দেওয়ার বিনিময়ে টাকা নিয়েছেন কমিটির আহ্বায়ক ও সদস্য সচিবসহ চার নেতা। এখানেই শেষ নয়। বিকাশের মাধ্যমেও নেয়া হয় টাকা।

এমনকি দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে নিয়েও বিরূপ মন্তব্য করেছেন জেলার শীর্ষ নেতারা। এ নিয়ে বিএনপিতে তোলপাড় চলছে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এ বিষয়ে তথ্যপ্রমাণ সংবলিত ১১৩ পৃষ্ঠার অভিযোগ দলটির মহাসচিবসহ দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতাদের কাছে দাখিল করেন জেলার তৃণমূল নেতারা। এর ভিত্তিতে তিন সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। ওই কমিটির প্রাথমিক তদন্তেও এ অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেছে বলে জানা গেছে। পরে বিষয়টি ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানকেও অবহিত করেছেন দায়িত্বপ্রাপ্তরা। এর ভিত্তিতে যে কোনো সময়ে কমিটি ভেঙে দেওয়ার ঘোষণা আসতে পারে বলে বিএনপি সূত্র নিশ্চিত করেছে।

এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে বরিশাল বিভাগের সাংগঠনিক দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতা ও বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুল আউয়াল মিন্টু বলেন, বরগুনা জেলা কমিটি নিয়ে অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি তদন্ত করা হচ্ছে। প্রমাণ পেলে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়া হবে। 

বরিশাল বিভাগীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আকন কুদ্দুসুর রহমান বলেন, বরগুনার বিষয়টি নিয়ে আমরা সবাই বিব্রত। বিষয়টি আমরা দেখছি।

বিএনপির কেন্দ্রের কাছে জমা দেওয়া তথ্য-প্রমাণ সূত্রে জানা গেছে, জেলার পূর্ণাঙ্গ কমিটি এবং পৌর ও উপজেলা ইউনিটে গুরুত্বপূর্ণ পদ দেওয়ার কথা বলে এ টাকা নেয়া হয়। এরমধ্যে এক ব্যবসায়ীর কাছ থেকে তার অনুসারীদের জেলার পূর্ণাঙ্গ কমিটি ও ইউনিট শাখায় গুরুত্বপূর্ণ পদ দেওয়ার কথা বলে দশ লাখ টাকা নেয়া হয়। অনুসন্ধানে দেখা যায়, প্রিমিয়ার ব্যাংক লিমিটেডের ঢাকার দক্ষিণখানের আশকোনা ব্রাঞ্চ থেকে ২০২২ সালের ৩ জুলাই চার নেতার নামে টাকা দেওয়া হয়। যা একই বছরের ৪ জুলাই ২৯১৬৫৯৩ নম্বর চেকের মাধ্যমে পাঁচ লাখ টাকা তুলে নেন জেলা বিএনপির আহ্বায়ক মাহবুব আলম ফারুক মোল্লা। ২৯১৬৫৯৫ নম্বর চেকের মাধ্যমে দুই লাখ টাকা তোলেন সদস্য সচিব তারিকুজ্জামান টিটু। ২৯১৬৫৯৬ নম্বর চেকের মাধ্যমে ৫০ হাজার টাকা নেন সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক সালেহ ফারুক এবং ২৯১৬৫৯৪ নম্বর চেকের মাধ্যমে ৫০ হাজার টাকা নেন যুগ্ম আহ্বায়ক তালিমুল ইসলাম পলাশ।

এছাড়াও এসব নেতাদের অন্তত ২৪টি ফোনালাপের অডিও কেন্দ্রে দেওয়া হয়। যেখানে বিকাশের মাধ্যমে লাখ লাখ টাকা নেয়ার তথ্য উঠে এসেছে। এক ফোনালাপে শোনা যায়, তারেক রহমানের চাকরি আমি করি না, দায়িত্ব দিয়েছে তা পালন করি। আমাকে ফোন না দিয়ে ফারুক মোল্লার সঙ্গে যোগাযোগ রাখলে হবে। তখন অপর পাশ থেকে শোনা যায়, কমিটিতে তার লোকজনকে রাখতে টাকা তো দিয়েছে, মোবাইল সেটও দিয়েছি।

এ বিষয়ে বরগুনা জেলা আহ্বায়ক কমিটির সদস্য মো. শাজাহান কবির বলেন, টাকা নিয়েই জেলার ইউনিট কমিটিগুলো করা হয়েছে। যাদের স্বাক্ষরে কমিটি হয়েছে তারা নিয়েছেন, এর সঙ্গে আরও কয়েকজন ছিলেন। এটা এখন ওপেন সিক্রেট। কোটি টাকার ওপরে হবে। উপজেলার কমিটি থেকে এক কোটির ওপরে টাকা নিয়েছে। কেন্দ্রকে তথ্যপ্রমাণসহ জানানো হয়েছে।

একই কথা বলেছেন আহ্বায়ক কমিটির আরও দুই সদস্য। তারা বলেন, কমিটি গঠনের পর থেকে জেলায় পদবাণিজ্য ছাড়া দলের কোনো সাংগঠনিক কর্মকাণ্ড দেখা যায়নি। সুনির্দিষ্ট কিছু তথ্যপ্রমাণ কেন্দ্রে দেওয়া হয়েছে। এর বাইরেও অনেক টাকার লেনদেন হয়েছে যা অভিযোগে দেওয়া যায়নি। 

রাজনীতি বিভাগের সর্বাধিক পঠিত
সর্বশেষ
জনপ্রিয়