ঢাকা, শুক্রবার   ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৬ ১৪৩১

কিশোরগঞ্জে নিরাপদ অভিবাসন বিষয়ক সচেতনতামূলক সভা অনুষ্ঠিত

নিউজ ডেস্ক

প্রকাশিত: ১৪:৩৫, ১ জুলাই ২০২২  

ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

কিশোরগঞ্জে নিরাপদ, সুশৃংখল, নিয়মিত ও দায়িত্বশীল অভিবাসনের লক্ষ্যে জনগণকে সচেতন করার মানসে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের আয়োজনে জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে অভিবাসন বিষয়ক সচেতনতামূলক সভা হয়েছে। জেলা কালেক্টরেট সম্মেলন কক্ষে অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট ফারজানা খানমের সভাপতিত্বে আয়োজিত সভায় প্রধান অতিথি জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ শামীম আলম ও বিশেষ অতিথি সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সহকারী সচিব মো. সারওয়ার আলম ছাড়াও বক্তব্য রাখেন সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. আল আমিন, সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ আলী সিদ্দিকী, টেকনিক্যাল ট্রেনিং সেন্টারের অধ্যক্ষ হারুন-আল মামুন, জেলা কর্মসংস্থান ও জনশক্তি কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক মো. আলী আকবর, একটি রিক্রুটিং এজেন্সির মালিক নজরুল ইসলাম, বেসরকারী সংস্থা পপি’র জেলা সমন্বয়ক মুহাম্মদ ফরিদুল আলম, মটরযান শ্রমিক উইউনিয়নের সভাপতি আব্দুল কাইয়ুম প্রমুখ।
প্রবাসী কল্যাণ শাখার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সহকারী কমিশনার সুশান্ত সিংহের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত সভায় প্রধান অতিথি বলেন, দক্ষ শ্রমশক্তি দেশের সম্পদ। প্রশিক্ষণ নিয়ে বহির্বিশ্বে কাজ করতে গেলে ভাল মানের চাকরিও যেমন পাওয়া যায়, আবার বেতনও ভাল হয়। যেসব অদক্ষ শ্রমিক বিদেশে যায়, তারা অনেক নিম্নমানের এবং কষ্টকর কাজ করেন। বেতনও অনেক কম। সরকার প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করেছে। প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক থেকে ঋণের ব্যবস্থা করেছে। কম খরচে বিদেশ যাওয়ার সুযোগ হয়েছে। অনেকে বৈধ পথ বাদ দিয়ে দালাল ধরে অবৈধভাবে বিদেশে পাড়ি দিতে গিয়ে মৃত্যুর মুখে পড়েন অথবা ওইসব দেশের কারাগারে তাদের স্থান হয়। অনেকে জমি বিক্রি করে দালাল ধরে বিদেশ গিয়ে প্রতারিত হন। আবার অনেক রোহিঙ্গা পরিচয় গোপন করে বাংলাদেশী পাসপোর্ট নিয়ে বিদেশ গিয়ে অপকর্ম করে। এর দায় পড়ে বাংলাদেশের ওপর। এসব বিষয়ে সচেতন থাকা এবং মানুষকে সচেতন করার জন্য তিনি সবাইকে আহবান জানিয়েছেন।

বিশেষ অতিথি বলেছেন, কৃষি, গার্মেন্ট শিল্প ও প্রবাসীদের কাছ থেকেই দেশের সর্বাধিক আয় হয়। প্রবাসীদের মাধ্যমে এক বছরে ২৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলার রেমিটেন্স আসার রেকর্ড আছে। মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে দেশের ২১টি জেলায় এই সচেতনতামূলক সভা করা হচ্ছে। এসব জেলা থেকেই বেশি মানুষ বিদেশে আছে। এর মধ্যে কিশোরগঞ্জ একটি। এখন মানুষ আগের তুলনায় অনেক সচেতন হয়েছে। তার পরও অনেকে প্রতারিত হন। অনেকে দালাল ধরে জমি বিক্রি করে অদক্ষতা নিয়ে বিদেশ গিয়ে নিম্ন বেতনে কাজ করেন। তারা চাকরি শেষে দেশে ফিরে দেখেন বিক্রি করা জমির দাম অনেক বেড়ে গেছে। যে বেতনে কাজ করেছেন, দেশে এসে আর সেই জমিটি কিনতে পারেন না। সরকার টেকনিক্যাল ট্রেনিং সেন্টার করে বিভিন্ন ট্রেডে প্রশিক্ষণ দিচ্ছে। প্রশিক্ষণার্থীদের প্রশিক্ষণকালীন ভাতাও দেয়া হচ্ছে। আর প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক থেকে সহজ শর্তে ঋণও দেয়া হচ্ছে। বছরে দেশে ৭ লাখ মানুষকে প্রশিক্ষণ দেয়া হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী ঘোষণা দিয়েছিলেন, দেশের প্রতিটি উপজেলা থেকে গড়ে এক হাজার মানুষ বিদেশে পাঠানো হবে। বিদেশে কর্মরতদের জন্য বীমা করা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। কেউ বিদেশে মারা গেলে তার পরিবারকে প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয় দেয় ৩ লাখ টাকা, আর বীমা থেকে পায় ৪ লাখ টাকা।
কিশোরগঞ্জ টেকনিক্যাল ট্রেনিং সেন্টারে ন্যুনতম ৮ম শ্রেণীর যোগ্যতা সম্পন্নদের ৮টি বিষয়ে প্রশিক্ষণ দেয়া হচ্ছে। এর মধ্যে গার্মেন্টস, কম্পিউটার এপ্লিকেশন, আইটি সাপোর্ট, অটোমেকানিকস, মেশিন শপ প্র্যাকটিস, ইলেক্ট্রিক্যাল ইনস্টলেশন এন্ড মেইটেন্যান্স ও সিভিল কনস্ট্রাকশনে ২৫ জন করে মোট ১৭৫ জনকে ৩ মাসের প্রশিক্ষণ দেয়া হচ্ছে। আর ড্রাইভিংয়ে প্রশিক্ষণ দেয়া হয় ১৮০ জনকে। প্রশিক্ষণার্থীদের কাছ থেকে কোন টাকা নেয়া হয় না। বরং যাতায়াত ভাড়ার টাকা প্রদান করা হয়।

সারাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত
সর্বশেষ
জনপ্রিয়