শঠতার কালে : জর্জ অরওয়েল

নিউজ ডেস্ক

সবার আগে সব খবর

প্রকাশিত : ০৩:২৬ পিএম, ৩০ মে ২০২৩ মঙ্গলবার

শঠতার কালে : জর্জ অরওয়েল

শঠতার কালে : জর্জ অরওয়েল

“প্রতিটা যুদ্ধ আসার সময়ে,অথবা আসার আগে, সেটিকে যুদ্ধ হিসেবে অভিহিত করা হয় না। সেটিকে আমরা বলে থাকি ক্ষিপ্ত নরহত্যাকারীর বিরুদ্ধে আমাদের আত্মরক্ষার প্রতিরোধ।

আমাদের এই সময়ে রাজনৈতিক বক্তৃতা ও লেখাগুলো হলো মূলত দুর্বলদের জন্যে প্রতিরোধব্যবস্থা। কিন্তু চিন্তা যদি ভাষাকে দুর্নীতিগ্রস্ত করে ফেলে, তাহলে ভাষাও চিন্তাকে দুর্নীতিগ্রস্ত করতে সক্ষম। এ কারণেই  যুদ্ধের  সকল প্রোপাগাণ্ডা, উচ্চকিত স্বর, ঘৃণা, মিথ্যা প্রচারণা ইত্যাদির উৎস হলো সাধারণ মানুষ, যারা বাস্তবে কোনো যুদ্ধই  করে না।

একইভাবে রাজনৈতিক ভাষা ব্যবহার করা হয়ে থাকে মিথ্যাকে সত্যের মতো শোনানোর জন্যে, হত্যাকে যৌক্তিক কাজ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করার জন্যে এবং বিশুদ্ধ বাতাসকে সংহতির অবয়ব  প্রদান করার জন্যে। 

কোনো বিদেশি রাষ্ট্রের সাথে কেবলমাত্র তখনই যুদ্ধ লেগে থাকে, যখন দেশের ধনীক শ্রেণি মনে করে থাকে যে এটা হতে তারা লাভবান হবে। কাজেই  জাতীয়তাবাদের বুলি হলো মূলত নিজের  সাথে প্রতারণা করে  ক্ষমতার ক্ষুধা নিবৃত্ত করা।

একইভাবে  যুদ্ধ হলো শান্তি, স্বাধীনতা হলো দাসত্ব, এবং অজ্ঞতা হলো শক্তি। (এগুলোর মধ্যদিয়ে রাজনৈতিক উদ্দেশ্য হাসিল করার জন্যে আমরা ভাষাকে সুকৌশলে ব্যবহার করে থাকি।) 
মোটের ওপর আমরা এখন এমন গভীরতায় ডুবে আছি যে, এখনকার কোনো বুদ্ধিমান মানুষদের প্রথম দায়িত্ব হবে এগুলোকে পুনঃসঙ্গায়িত করা।

স্বাধীনতার যদি কোনো অর্থ থেকে থাকে, তা হওয়া উচিৎ হবে মানুষকে জানানো যে, তাদের আসলে আদৌ কোনোকিছু  শোনার দরকার নেই। এবং এই  চিরন্তন শঠতার সময়ে সত্য বলাই হবে  প্রতিটি মানুষের জন্যে একমাত্র বিপ্লবী কাজ।”