শূন্য থেকে লাখপতি নেত্রকোণার তরুণ আসাদুজ্জামান বাপ্পী

নিউজ ডেস্ক

সবার আগে সব খবর

প্রকাশিত : ০৬:৩৯ পিএম, ২৯ জানুয়ারি ২০২৩ রোববার

শূন্য থেকে লাখপতি নেত্রকোণার তরুণ আসাদুজ্জামান বাপ্পী

শূন্য থেকে লাখপতি নেত্রকোণার তরুণ আসাদুজ্জামান বাপ্পী

একজন সফল উদ্যোক্তা হওয়ার স্বপ্নে বিভোর ছিলো নেত্রকোণার তরুণ আসাদুজ্জামান বাপ্পী। পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার স্বপ্নটাও পিছু ছাড়ছিল না তাকে। নিজের মেধার প্রমাণ দিয়ে ২০১৯ সালে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সুযোগ পায় স্বপ্নবাজ বাপ্পী। 

আর ভর্তিও হন নিজের পছন্দের বিষয় মানব সম্পদ ব্যবস্থাপনা বিভাগে। পাশাপাশি ধীরে ধীরে গড়ে তুললেন অনলাইনভিত্তিক প্রতিষ্ঠান অ্যাঙ্কর ক্লোথিং (Anchor Clothing)। একদম শূন্য হাতে শুরু করে বর্তমানে তার ব্যবসায় বিনিয়োগ সাড়ে পাঁচ লাখ টাকা।

একদিকে বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা চলছিল পুরোদমে। অন্যদিকে উদ্যোক্তা হওয়ার স্বপ্ন তাকে পেয়ে বসে। প্রথম বর্ষ শেষ হতেই শুরু হলো বৈশ্বিক মহামারি করোনা। পুরো বিশ্ব তখন স্থবির। বাপ্পী চিন্তায় পড়ে গেলেন।  

তখন ইচ্ছা ছিল বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনার পাশাপাশি স্বপ্নের পিছে ছুটবেন। তা আর হয়ে উঠলো না। ঘরে বন্দি হয়ে গেলেন। কী নিয়ে কাজ শুরু করা যায়, কীভাবে উদ্যোক্তা হওয়া যায়, স্বাবলম্বী হওয়া যায়- ইত্যাদি বিষয়ে অনেকের কাছেই পরামর্শ নেয়া শুরু করলেন বাপ্পী। 

সে সময়ের অভিজ্ঞতা জানাতে গিয়ে বাপ্পী বলেন, তখন অনেকেই পাশে এসে দাঁড়িয়েছেন। তবে পেছন থেকে টেনে ধরার মানুষও নেহাত কম ছিলো না। 

তবে সব প্রতিকূলতা পেছনে ফেলে বাপ্পী এগিয়ে যান। পরামর্শ নিতেই থাকলেন। পাশে পেলেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের এক বড় ভাইকে। তার পরামর্শে বিনিয়োগ ছাড়াই শুরু করলেন অনলাইনে পোশাকের ব্যবসা।

বিনিয়োগ ছাড়াই কীভাবে ব্যবসা শুরু করলেন- সেই গল্প শুনতে চাইলে বাপ্পী বলেন, প্রথমে কিছু দিন প্রি-অর্ডার নিয়েছি। এরপর সেই টাকা দিয়ে যাত্রা শুরু করেছি। গ্রাহক যারা ছিল তাদের প্রোডাক্ট তাদের বুঝিয়ে দিয়ে, কিছু লাভের টাকা আমার ছিল। সেই টাকা দিয়ে আবার নতুন করে পণ্যের অর্ডার করে আবার প্রি-অর্ডার নেয়া শুরু করি। এভাবে ধীরে ধীরে ব্যবসাকে বড় করে বর্তমানে বাপ্পীর ব্যবসার মূলধন ৫ লাখ ৫০ হাজার টাকায়। 

অ্যাঙ্কর ক্লথিং (Anchor Clothing) নামে বাপ্পির ব্র্যান্ডে পাওয়া যায় জার্সি, টি-শার্ট, পলো-শার্ট, হুডি, টাউজার, ট্রাকস্যুট ইত্যাদি। নিজ জেলা ও ক্যাম্পাসের বাইরে থেকেও এখন অর্ডার আসে। ডেলিভারি সময় মতো দেওয়ার জন্য মাসিক ৯০০০ টাকা সম্মানি দিয়ে কাজ করান আরো দুজনকে। তাকে দেখে অনুপ্রাণিত হয়ে উদ্যোক্তা হয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া অনেক শিক্ষার্থী। স্বপ্নবাজ বাপ্পি এখন অনেকের অনুপ্রেরণা। 

বাপ্পীর স্বপ্নের কথা জানতে চাইলে তিনি বলেন, একবার অগ্রীম কিছু কাপড় কিনে লোকসান হয়েছিল। তখন বাবা-মা সহ অনেকেই মানসিক এবং আর্থিকভাবে পাশে ছিল। বাবা-মা ও বন্ধুদের সাহায্য-সহযোগিতা পাই সব সময়। সবার সহযোগিতায় নিজের স্বপ্নকে অনেক বড় পর্যায়ে নিয়ে যেতে চাই। 

বাপ্পী বলেন, আমি বাংলাদেশের পোশাক খাতে নতুনত্ব চাই। দেশে এবং দেশের বাইরে আমার নিজস্ব ভবনে আমার ব্র্যান্ডের, আমার ডিজাইনের তৈরি পোশাক থাকবে, সেই স্বপ্নই দেখি আমি।