দেশের প্রথম পাতাল রেল নির্মাণ শুরু জানুয়ারিতে

অনলাইন ডেস্ক

সবার আগে সব খবর

প্রকাশিত : ১১:৩৬ এএম, ২৪ নভেম্বর ২০২২ বৃহস্পতিবার

ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

দেশের দ্বিতীয় মেট্রোরেল নির্মিত হবে মাটির নিচ দিয়ে। ২০২৩ সালের জানুয়ারিতে প্রথম পাতাল রেলের নির্মাণ শুরু হবে। ম্যাস র‌্যাপিড ট্রানজিট (্এমআরটি-১) প্রকল্পের আওতায় এটি বাস্তবায়ন করবে ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেড (ডিএমটিসিএল)। এই প্রকল্পের আওতায় নারায়ণগঞ্জের পিতলগঞ্জে মেট্রোরেলের ডিপো নির্মাণে গতকাল বুধবার ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে চুক্তি স্বাক্ষর করেছে ডিএমটিসিএল।

এ বিষয়ে ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানির এমডি এমএএন ছিদ্দিক বলেন, ‘এমআরটি-১ প্রকল্পের আওতায় পিতলগঞ্জে মেট্রোরেলের ডিপো নির্মাণ করা হবে। এর মধ্য দিয়ে পাতাল রেলের নির্মাণ কাজ শুরু হবে। আগামী বছর জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারি মাসে এর কাজ শুরু হবে। এমআরটি-১ প্রকল্প দুটি অংশে বাস্তবায়িত হবে। একটি অংশ হবে পাতাল ও অপরটি হবে উড়াল। দুটি অংশের মূল ডিপো নির্মাণের কাজের ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে গতকাল বুধবার চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে।

প্রকল্প সূত্র জানায়, দ্বিতীয় মেট্রোরেল হবে উড়াল ও পাতাল পথের সমন্বয়ে। দুটি রুটে ৩১ দশমিক ২৪ কিলোমিটার দীর্ঘ এমআরটি লাইন-১ নির্মাণ করা হবে। এর মধ্যে বিমানবন্দর রুটে উত্তরা বিমান বন্দর থেকে কমলাপুর পর্যন্ত ১৯ দশমিক ৮৭ কিলোমিটার হবে মাটির নিচ দিয়ে (পাতাল)। এই রুটে স্টেশন হবে ১২টি। এগুলো হলো-বিমানবন্দর, বিমানবন্দর টার্মিনাল-৩, খিলক্ষেত, যমুনা ফিউচারপার্ক, নতুন বাজার, উত্তর বাড্ডা, বাড্ডা, হাতিরঝিল, রামপুরা, মালিবাগ, রাজারবাগ ও কমলাপুর।

আর পূর্বাচল রুটে নতুন বাজার স্টেশনটি হবে পাতালে। এরপর নতুনবাজার থেকে পূর্বাচলের পিতলগঞ্জ পর্যন্ত ১১ দশমিক ৩৬ কিলোমিটার হবে উড়াল (এলিভেটেড) পথে। এ রুটের স্টেশন হবে ৯টি। এগুলো হলো-নতুন বাজার, যমুনা ফিউচার পার্ক, বসুন্ধরা, পুলিশ অফিসার্স হাউজিং সোসাইটি, মাস্তুল, পূর্বাচল পশ্চিম, পূর্বাচল সেন্টার, পূর্বাচল পূর্ব, পূর্বাচল টার্মিনাল ও পিতলগঞ্জ ডিপো।
এর আগে ২৩ অক্টোবর এ প্রকল্পের দেশের প্রথম ভূগর্ভস্থ মেট্রোরেল নির্মাণের তদারকির জন্য আট কোম্পানির একটি কনসোর্টিয়ামের সঙ্গে চুক্তি স্বাক্ষর করেছে ঢাকা ম্যাস র‌্যাপিড ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেড। চুক্তি অনুসারে, জাপানি নিপ্পন কোই কোম্পানি লিমিটেডের নেতৃত্বে কনসোর্টিয়ামটি রাজধানীতে ৩১ দশমিক ২৪ কিলোমিটার ভূগর্ভস্থ রেল প্রকল্প বা এমআরটি লাইন-১ নির্মাণের তত্ত্বাবধান করবে।

ডিএমটিসিএল সূত্র জানায়, এমআরটি লাইন-১- প্রকল্পের বাস্তবায়নকাল ধরা হয়েছে ২০২৮ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত। এতে ব্যয় ধরা হয়েছে ৫২ হাজার ৫৬১ কোটি টাকা। এই লাইনে প্রতিদিন ৮ কোচবিশিষ্ট ২৫টি ট্রেন চলাচল করবে। একটি ট্রেনের ধারণক্ষমতা হবে সর্বোচ্চ ৩ হাজার ৮৮ জন। ঢাকা বিমানবন্দর থেকে কমলাপুর যেতে সময় লাগবে মাত্র ২৪ মিনিট ৩০ সেকেন্ড।

এ ছাড়া নতুনবাজার থেকে পূর্বাচল যেতে ২০ মিনিট ৩৫ সেকেন্ড এবং কমলাপুর থেকে পূর্বাচল যেতে লাগবে ৪০ মিনিট। বিমানবন্দর থেকে কমলাপুর রুটে প্রতি আড়াই মিনিটে একজন যাত্রী ট্রেন ধরতে পারবেন। আর নতুনবাজার থেকে পূর্বাচল রুটে ট্রেনের জন্য অপেক্ষা করতে হবে ৪ মিনিট ৩৫ সেকেন্ড।

উত্তরা বিমানবন্দরের থার্ড টার্মিনাল ভবনের সঙ্গে ভূগর্ভস্থ সুড়ঙ্গপথ ও উড়াল সেতু নির্মাণ করা হবে, যা মেট্রোরেল লাইন-১ ও ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের সঙ্গে সংযোগ স্থাপন করবে। এতে থাকবে আন্তর্জাতিক মানের অত্যাধুনিক অগ্নিনির্বাপক ব্যবস্থা। থার্ড টার্মিনাল প্রকল্পের প্রথম ধাপের সঙ্গে বর্তমান টার্মিনাল ভবনগুলোর আন্তঃযোগাযোগ ব্যবস্থা থাকবে না।

তবে প্রকল্পের দ্বিতীয় ধাপে কানেক্টিং করিডরের মাধ্যমে পুরনো টার্মিনাল ভবনগুলোর সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপন করা হবে। এমআরটি লাইন-১ প্রকল্পের কাজ হচ্ছে মোট ১২টি প্যাকেজের মাধ্যমে। এর মধ্যে ডিপোর সিপি-১-এর সর্বনিম্ন দরদাতাকে কাজের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। আর ডিপোর মূল কাজ নির্মাণের জন্য সিপি-১-এর ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে গতকাল বুধবার চুক্তি স্বাক্ষর করা হয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান।