আজ হিরোশিমা দিবস

ফিচার ডেস্ক

সবার আগে সব খবর

প্রকাশিত : ১০:৫৪ এএম, ৬ আগস্ট ২০২২ শনিবার

আজ হিরোশিমা দিবস

আজ হিরোশিমা দিবস

প্রতিবছর প্রতিমাসের নির্দিষ্ট কিছু দিনে কিছু দিবস পালিত হয়। নির্দিষ্ট দিনে অতীতের কোনো গুরুত্বপূর্ণ ঘটনাকে স্মরণ করা বা গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে জনসচেতনতা তৈরি করতেই এই সব দিবস পালিত হয়। বিশ্বে পালনীয় সেই সব দিবসগুলো মধ্যে একটি হলো হিরোশিমা দিবস। 

৬ আগস্ট ১৯৪৫। স্থানীয় সময় তখন সকাল ৮টা ১৫ মিনিট। ৭৬ বছর আগে এ রকম একটা দিনে পরমাণু বোমায় কেঁপে উঠেছিল জাপানের হিরোশিমা ও নাগাসাকি। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের দামামা তখন জোরেশোরে বাজছে। হিরোশিমার মানুষ তখনো জেগে ওঠেনি। হঠাৎ দানবের মতো হিরোশিমার আকাশে উদয় হলো মার্কিন বি-টুয়েন্টিনাইন বোমারু বিমান।

আগুন জ্বলা ড্রাগনের মতো হিরোশিমার আকাশে বিস্ফারিত হলো প্রথম আণবিক বোমা 'লিটল বয়'। বোমাটি প্রায় ৫০০ মিটার উঁচুতে বিস্ফোরিত হয়। কেউ কিছু বুঝে ওঠার আগেই আণবিক বোমার বিষাক্ত ছোবলে ছটফট করে মারা গেল ৮০ হাজার জাপানি। ঘুমের মধ্যে মারা গেল অগণিত শিশু, নারী, বৃদ্ধ বৃদ্ধা, যুবক যুবতী। আহত হলো ৫০ হাজারের উপর মানুষ। 

আগুনের লেলিহান শিখা দেখে শিউরে উঠলো বিশ্ব। মনে হলো পৃথিবীর শেষ দিন উপস্থিত। মাটির সঙ্গে মিশে গেল-বড় বড় অট্টালিকা, কলকারখানা, হাসপাতাল, স্কুল - কলেজ, উপাসনাগৃহ। ধ্বংসযজ্ঞে পরিণত হয় একটি নগরী। চারদিকে শুধু হাহাকার আর্তনাদ, চিৎকার, হাসপাতালের ডাক্তার নার্স সেবিকার দল ও যে নিশ্চিহ্ন হয়েছে, মৃত্যু গ্রাস করেছে সুন্দর শহর হিরোশিমা কে। 

আর কয়েক বছরের মধ্যে ভয়াবহ তেজস্ক্রিয়তায় পঙ্গু বিকলাঙ্গ শিশুর জন্ম হলো, ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে মারা গেল অগণিত মানুষ। পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ায় বছর শেষে আরো ৬০ হাজার মানুষের মৃত্যু হয়। কেন এ নারকীয় হত্যা লীলা? ৭৬ বছর আগে এ রকম একটা দিনে পরমাণু বোমায় কেঁপে উঠেছিল জাপানের হিরোশিমা ও নাগাসাকি। 
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের শেষ দিক, তৎকালীন মার্কিন প্রেসিডেন্ট হ্যারি ট্র–ম্যান এর আত্মসমর্পণ এর আহ্বানে জাপান সাড়া না দেওয়ায়, তার নির্দেশে চালানো হলো এ হত্যা লীলা। উদ্দেশ্য জাপান কে জব্দ করা, আর দ্রুত যুদ্ধ শেষ করা। আজও সেই ভয়াবহ স্মৃতি বহে বেড়াচ্ছে শুধু জাপান নয়, পুরো বিশ্ব। কয়েক দশক ধরে ৬ আগস্ট হিরোশিমা এবং নাগাসাকির ট্র্যাজেডিকে ‘হিরোশিমা দিবস’ হিসাবে স্মরণ করে চলেছেন। 

হিরোশিমা আর নাগাসাকি দিবস এলেই পৃথিবীর শান্তিকামী মানুষ প্রার্থনা করেন, প্রত্যাশা করেন আর যুদ্ধ নয়, শান্তি নেমে আসুক পৃথিবীর বুকে। মারণাস্ত্রের ঝনঝনা নয়, শান্তির পারাবত উড়ুক বিশ্ব জুড়ে। সৌভ্রাত্রের  বন্ধনে বাঁধা পড়ুক মানব, চেতনা আসুক মনে, সে বিচ্ছিন্ন নয়, বিশ্ব মানবতার সহকর্মী, সহধর্মী।