জাতিসংঘেও যৌন হয়রানি!
আন্তর্জাতিক ডেস্ক

ফাইল ছবি
গত ৭০ বছরের বেশি সময় ধরে বিশ্ব জুড়ে মানবাধিকার এবং শান্তির পক্ষে সামনের কাতারে থেকে নেতৃত্ব দিয়ে যাচ্ছে জাতিসংঘ। কিন্তু বিশ্বের সব সমস্যার সমাধানের দায়িত্ব যাদের, সেই জাতিসংঘের বিরুদ্ধেই যখন অন্যায় বা দুর্নীতির অভিযোগ উঠে, তখন কী হয়? জাতিসংঘের কর্মীরাই যখন তাদের কর্তা ব্যক্তি বা সহকর্মীর অন্যায় ফাঁস করে দেন, তখন কী ঘটে?
বিশ্বের এই শীর্ষ কূটনৈতিক প্রতিষ্ঠানে কয়েক দশক ধরে কাজ করেছেন এমন কিছু ব্যক্তি কথা বলেছেন ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির এক দীর্ঘ অনুসন্ধানী প্রামাণ্য চিত্রে। সেখানে তারা তুলে ধরেছেন কিভাবে জাতিসংঘের ভেতরেই একেবারে সর্বোচ্চ পর্যায় পর্যন্ত এমন এক কাজের সংস্কৃতি তৈরি হয়েছে, যেখানে অন্যায় বা দুর্নীতি ফাঁস করার পরও কেউ কেউ ধরা-ছোঁয়ার বাইরে থেকে যাচ্ছেন।
বিবিসির অনুসন্ধানী ডকুমেন্টারিতে যারা কথা বলেছেন, তারা জাতিসংঘের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের ভেতরে নানা ধরনের ব্যাপক যৌন হয়রানি এবং দুর্নীতির অভিযোগ করেছেন। এসব প্রতিষ্ঠানের মধ্যে হিউম্যান রাইটস কাউন্সিল, ইউনাইটেড নেশন্স ডেভেলপমেন্ট ফান্ড (ইউএনডিপি), ওয়ার্ল্ড ফুড প্রোগ্রাম (ডাব্লিউএফপি) এবং ইউএনএইডস এর মতো সংস্থাও আছে।
নিজেদের বিরাট ব্যক্তিগত ক্ষতির ঝুঁকি নিয়েও বিবিসির এই ডকুমেন্টারিতে যারা কথা বলেছেন, তারা জানিয়েছেন যে যখন জাতিসংঘের একেবারে শীর্ষ স্তরের বিরুদ্ধে তারা মুখ খুলেছেন বা এই সংস্থার ভেতরে যে নীরবতার সংস্কৃতি, সেটাকে চ্যালেঞ্জ করেছেন, তখন কী ঘটেছিল।
জাতিসংঘের প্রতিষ্ঠান ইউএনএইডসে দশ বছর ধরে কাজ করেছেন মার্টিনা। তিনি তার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগ এনেছিলেন।
"এই অভিযোগ করার পর, এর বিরুদ্ধে মুখ খোলার পর, যা ঘটেছে, তা হলো, ইউএন-এইডস খুবই নীচতার সঙ্গে এবং বাজে-ভাবে আমার বিরুদ্ধে এমন পাল্টা ব্যবস্থা নিয়েছিল, যা আমাকে প্রায় শেষ করে দিয়েছিল," বলছেন তিনি।
জন ইউএনডিপিতে তিন বছর কাজ করার পর সেখানে দুর্নীতির বিষয়ে তার উদ্বেগ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের জানান। এসব বিষয় উত্থাপনের জন্য জাতিসংঘ তাকে ধন্যবাদ জানালো, কিন্তু পরবর্তীকালে তার বিরুদ্ধেই তদন্ত শুরু করলো।
"ইউএনডিপিতে আমার ব্যবহৃত ল্যাপটপটি এখনো তাদের কাছে- অনেক বছর ধরে। কাজেই আমি জানি না তারা ঠিক কি তদন্ত করছে, কিন্তু ওরা এটা বছরের পর বছর ধরে রেখে দিয়েছে। দুর্নীতির তদন্তে তাদের যত চেষ্টা, সময় বা সম্পদ খরচ করার কথা, তার চাইতে অনেক বেশি করে তারা তদন্ত করছে দুর্নীতির তথ্য ফাঁসকারীকে," বলছেন জন।
বিবিসির কাছে জাতিসংঘের ভেতরে দুর্নীতি এবং যৌন হয়রানির অভিযোগ যারা করেছেন, তারা সবাই বহু বছর এই সংস্থায় কাজ করেছেন। তারা ভেবেছিলেন পুরো কর্মজীবন তাদের হয়তো জাতিসংঘেই কাটবে এবং তারা মানুষের জীবনে সত্যিকারের পরিবর্তন আনতে পারবেন।
জাতিসংঘের হিউম্যান রাইটস কাউন্সিলে দশ বছর কাজ করেছেন এমএমএ। তিনি বলছেন, "জাতিসংঘের ভেতরে অন্যায় বা দুর্নীতি যারা ফাঁস করেন, তাদেরকে এমনভাবে চিত্রিত করা হয়, যেন এরা জাতিসংঘকে ঘৃণা করে, যারা এটা বিলুপ্ত করে দিতে চায়। কিন্তু সত্যের এরচেয়ে বড় অপলাপ আর হতে পারে না। আমরা বরং চাই এই সংস্থাটি যেন আরো ভালোভাবে কাজ করে।"
যৌন হয়রানি
পূর্ণা সেন ছিলেন যৌন হয়রানির বিষয়ে জাতিসংঘের সাবেক এক মুখপাত্র। ২০১৮ সালে তিনি এই পদে যোগ দিয়েছিলেন। বিবিসির এই ডকুমেন্টারিতে পূর্ণা সেন বলেন, জাতিসংঘে কাজ করেছেন এমন অনেক নারীকে যৌন হয়রানি, পীড়াপীড়ি এমনকি ধর্ষণ করা হয়েছে। তিনি বলেন, "পুরুষরা এই কাজ করে যত বেশি পার পেয়ে যাবে, তারা এই কাজ তত বেশি করতে থাকবে।"
তিনি বিবিসির নিউজনাইট অনুষ্ঠানে বলেন, এই ডকুমেন্টারিতে যেসব মানুষের সাক্ষ্য তিনি শুনেছেন, "তা গভীরভাবে বিচলিত হওয়ার মতো।" "এ থেকে যে মনে হয়, প্রত্যেকটি সংস্থায় উচ্চপদের কর্মকর্তাদের রক্ষা করা যেন ক্ষমতাহীনদের সুরক্ষার চাইতে বেশি গুরুত্বপূর্ণ।"
এর মানে হচ্ছে, যে সংস্থাটি মানবাধিকারকে রক্ষা করার জন্য সোচ্চার, যেখান থেকেই কীনা বেশিরভাগ মানবাধিকারের ধারণার জন্ম হয়েছে, সেখানে এক ধরনের সত্যিকারের টানাপোড়ন আছে। নিজেদের সংস্থার ভেতরেই তো তারা এই মানবাধিকারের বিষয়গুলো নিয়ে আসতে পারেনি," বলছেন পূর্ণা সেন।
পূর্ণা সেন বলেন, জাতিসংঘের ভেতর থেকে দুর্নীতি বা অন্যায়ের তথ্য ফাঁস করার পর তাদের সঙ্গে যে ধরনের আচরণের অভিযোগ করা হচ্ছে, তিনি চান, জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তনিও গুতেরেস যেন সংস্থার বাইরের লোকজনকে দিয়ে এসব অভিযোগের তদন্ত করেন।
তিনি বলেন, জাতিসংঘের উচিৎ এ ব্যাপারে ব্যবস্থা জোরালো করা এবং বাইরের প্যানেল থেকে দেয়া পরামর্শ গ্রহণ করা।
এক বিবৃতিতে গুতেরেসের দফতর বলেছে, "যে কোন ধরনের অসদাচরণের ঘটনা মোকাবেলায়" জাতিসংঘের প্রচেষ্টা সংস্থার বাইরে থেকে তদন্ত করে দেখার প্রস্তাবকে তারা স্বাগত জানান।
জাতিসংঘ আরও বলেছে, "যারা সত্যিকারের হুইসেলব্লোয়ার", অর্থাৎ অন্যায়-দুর্নীতির ঘটনা ফাঁসকারী, তাদের সুরক্ষা দিতে সংস্থা অঙ্গীকারবদ্ধ।
কূটনৈতিক সুরক্ষা
জাতিসংঘের বার্ষিক বাজেট ৫০ বিলিয়ন ডলার বা ৫,০০০ কোটি ডলার। সংস্থার কর্মকর্তা-কর্মচারীর সংখ্যা ৩৫ হাজারের বেশি। এদের বেশিরভাগই সব দেশের জাতীয় আইন থেকে একধরনের কূটনৈতিক সুরক্ষা পান, যার ফলে স্থানীয় আইনে তাদের বিচারের মুখোমুখি করা যায় না। এটি করা হয়েছিল যাতে জাতিসংঘ কাজ করতে গিয়ে কোন ধরনের স্থানীয় হস্তক্ষেপের মুখে না পড়ে।
এর মানে হচ্ছে, জাতিসংঘের কোন কর্মীর বিরুদ্ধে অভিযোগ আসলে সেটি সংস্থার নিয়ম অনুযায়ী অভ্যন্তরীণ-ভাবেই তদন্ত করা হয়।
তবে জাতিসংঘ বলছে, এই কূটনৈতিক সুরক্ষা কর্মীদের ব্যক্তিগত সুবিধার জন্য দেয়া হয়নি। কাজেই কেউ যদি যৌন হামলার মতো কোন অপরাধ করে, সেক্ষেত্রে তারা কোন কূটনৈতিক সুরক্ষা পাবেন না।
জাতিসংঘের কোন কর্মীর বিরুদ্ধে যখন কোন গুরুতর অভিযোগ উঠে, তখন সেটি দেখার দায়িত্ব দেয়া হয় অফিস অব দ্য ইন্টারন্যাল ওভারসাইট সার্ভিসেস (ওআইওএস) বলে একটি বিভাগকে। ফৌজদারি অভিযোগও এরা তদন্ত করে, তবে এই বিভাগের কোন আইনি কর্তৃত্ব নেই।
বিবিসির হাতে একটি গোপন রেকর্ডিং এসেছে, যা থেকে মনে হয় ওআইওএস সবসময় খুব ভালোভাবে কাজ করতে পারে না। এই রেকর্ডিং এ ওআইওএসের তদন্ত বিভাগের ডিরেক্টর বেন সোয়ানসনকে সংস্থার কর্মকর্তাদের এক সভায় কথা বলতে শোনা যাচ্ছে।
তিনি বলছেন, জাতিসংঘের এক নারী কর্মকর্তা কাঁদতে কাঁদতে তার কাছে এসেছিলেন। এই নারী কর্মকর্তা জানিয়েছেন, সংস্থার একজন অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি জেনারেল তার প্যান্টের ভেতর হাত ঢুকিয়ে দিয়েছিলেন।
জাতিসংঘে বেশ কয়েকজন অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি জেনারেল আছেন।
এই রেকর্ডিং-এ মিস্টার সোয়ানসনকে বলতে শোনা যায়, এই যৌন নির্যাতনের ঘটনা তিনি জাতিসংঘের সেক্রেটারি জেনারেল এবং অন্যান্য ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের জানিয়েছিলেন। কিন্তু সাথে সাথে তাকে চুপ করিয়ে দেয়া হয়। "আমি এই কাহিনীটা বলার চেষ্টা করেছিলাম, তখন আমাকে...থামিয়ে দেয়া হলো", বলছিলেন তিনি।
তিনি আরও বলেন, এই নারীকে এরপর তার অভিযোগ দাখিলে নিরুৎসাহিত করা হয় এবং বলা হয়, যার বিরুদ্ধে অভিযোগ করা হচ্ছে, তিনি যেহেতু একজন "আর্শীর্বাদপুষ্ট ব্যক্তি", কাজেই এরকম অভিযোগের ফল ভালো হবে না।
বিবিসির কাছে এই গোপন অডিও রেকর্ডটি দিয়েছেন জাতিসংঘের একজন হুইসেলব্লোয়ার পিটার গ্যালো। তিনি বিবিসির ডকুমেন্টারিতে বলেন, "নিউইয়র্কে জাতিসংঘের সদর দফতরে আমি চার বছর তদন্তকারী হিসেবে সময় কাটিয়েছি। সেই অভিজ্ঞতা থেকে আমি বলতে পারি, আমার বিশ্বাস এই সংস্থাটি নীচতলা থেকে একদম উপরে পর্যন্ত দুর্নীতিতে ভরা।"
পিটার গ্যালোর কথা শুনে পূর্ণা সেন বলেন, "জাতিসংঘের সেক্রেটারি জেনারেল কেন বলছেন না, 'এটা সাংঘাতিক আপত্তিকর, আমরা এখন কী করতে পারি? আমাদের জিরো-টলারেন্সের নীতির মানে হচ্ছে, আমাদের কিছু করতেই হবে।' কিন্তু এরপর পরিবর্তে আমরা শুনলাম, "না, আমরা এখানে কিছু করছি না।"
তবে জাতিসংঘ মহাসচিবের দফতর বলছে, "সংস্থার যে কোন কর্মী, জুনিয়র হোক বা সিনিয়র, যৌন হয়রানির ঘটনায় লিপ্ত বলে প্রমাণ পাওয়া গেলে, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে তারা অঙ্গীকারবদ্ধ।"
অভিযোগ করে পাল্টা শাস্তি
মার্টিনা বোসট্রম ইউএনএইডসের সাবেক সিনিয়র উপদেষ্টা। তিনি বিবিসিকে জানান, জাতিসংঘে কাজ করতে গিয়ে তিনিও যৌন হয়রানির শিকার হয়েছেন।
"যৌন নির্যাতন, হয়রানি, বা শোষণের ঘটনা জাতিসংঘের সদর দফতরেই ঘটে, এটা সোমবার হতে শুক্রবার, সবদিন চলে। এটা নিয়মিত কাজের সময়ে ঘটে, সর্বত্রই ঘটে", বলছেন তিনি।
তিনি বলেন, ইউএনএইডসের ডেপুটি এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর লুইজ লুরেজ এবং একজন অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি জেনারেলের টার্গেট হয়েছিলেন তিনি। মার্টিনা বোসট্রম এই অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি জেনারেলকে একজন নোংরা চরিত্রের লোক বলে বর্ণনা করেন, এবং তার বাজে আচরণের কথা সবাই জানে। তিনি বলেন, ২০১৫ সালে ব্যাংককে অফিসের এক অনুষ্ঠান থেকে বেরিয়ে লিফটে উঠার পর, সেখানে এই ব্যক্তি তাকে জোর করে চুমু খায়, এবং গায়ে হাত দেয়। এরপর লোকটি এমনকি তাকে অফিস কক্ষের দিকে জোর করে টেনে নেয়ার চেষ্টা করে।
"আমি তাকে থামার জন্য অনুনয় করছিলাম, আমাকে ছেড়ে দিতে বলছিলাম। ভেতর থেকে লিফটের দরোজা বন্ধ করে আমি নিজেকে আটকাই, কারণ আমি সেই লম্বা করিডোরটা দেখতে পাচ্ছিলাম", বলছিলেন তিনি। "আমার মাথা খুব দ্রুত কাজ করছিল, এবং কী ঘটতে পারে, তা ভেবে আমি ভয় পাচ্ছিলাম।"
মার্টিনা এরপর আনুষ্ঠানিকভাবে অভিযোগ দায়ের করেন এবং জাতিসংঘের তদন্তকারীদের সঙ্গে কথা বলেন। কিন্তু তিনি বলছেন, এরপর জাতিসংঘ এবং ইউএনএইডস খুব নিচতার সঙ্গে তার বিরুদ্ধেই ব্যবস্থা নিয়েছে।
"এটা ছিল খুবই যন্ত্রণাদায়ক। কারণ মনে হচ্ছিল, কেউ আবার আমার লাঞ্ছনা করেছে। ব্যাপারটা এমন, যেন ওরা আপনাকে নিঃশ্বাস নেয়ারও সুযোগ দিতে চায় না।"
লুইজ লোরেজ ২০১৮ সালে জাতিসংঘ থেকে অবসরে গেছেন। জাতিসংঘ তাকে তার "২২ বছরের নিবেদিতপ্রাণ সেবার" জন্য ধন্যবাদ দিয়েছিল। লুইজ লোরেজ বিবিসিকে বলেছেন, তিনি কখনো কাউকে হয়রানি করেননি, কারও ওপর যৌন হামলাও চালাননি। যেসব অভিযোগ করা হচ্ছে, সেগুলো ভিত্তিহীন।
জাতিসংঘ বলেছে, "ডঃ লোরেজের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ তদন্ত করা হয়েছিল। তবে এসব অভিযোগের সত্যতা নিয়ে কথা বলার সময় এখন নয়।"
২০২১ সালের অগাস্ট মাসে মার্টিনা জাতিসংঘ থেকে একটি চিঠি পান যেটাতে স্বীকার করা হয় যে মার্টিনা "একটা প্র।লম্বিত সময় ধরে যৌন হয়রানির শিকার হয়েছেন।" তবে ২০১৫ সালে যে যৌন হামলার অভিযোগ তিনি করেছিলেন, সে বিষয়ে এই চিঠিতে বলা হয়, "পরিস্থিতির যে বিবরণ আপনি দিয়েছেন, তার সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ বেদনাদায়ক কিছু ঘটনা ঘটেছিল, তবে তদন্তে সেরকম কোন প্রমাণ পাওয়া যায়নি।"
জিরো টলারেন্স
পূর্ণা সেন বলছেন, মার্টিনার ঘটনাটি আসলে জাতিসংঘে আরও যে ব্যাপক সমস্যা রয়েছে, তারই লক্ষণ।
বিবিসির ডকুমেন্টারিতে তিনি বলেন, জাতিসংঘের প্রায় এক তৃতীয়াংশ কর্মী বলেছে, কাজের সময় তারা যৌন হয়রানির শিকার হয়েছেন, তবে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই এসব ঘটনার ব্যাপারে কোন অভিযোগ করা হয়নি।
"আমরা যতগুলো ঘটনার কথা জানি, সেগুলো আসলে মোট ঘটনার অতি সামান্য অংশ মাত্র, এবং সবচেয়ে বড় কথা হলো, লোকে মনে করে অভিযোগ করলে বরং খারাপ ফল হবে, তাদের বিরুদ্ধে পাল্টা ব্যবস্থা নেয়া হবে।"
"আমার ওপর যদি হামলা হয়, যদি আমাকে যৌন লাঞ্ছনা করা হয়, আমি হয়তো এটা নিয়ে অভিযোগ করবো না। আমি নিজেকে সেই প্রক্রিয়ার মধ্যে ফেলবো না।"
এক বিবৃতিতে জাতিসংঘের সেক্রেটারি জেনারেলের অফিস বলেছে, যৌন হয়রানির ঘটনা থেকে জাতিসংঘও একেবারে সুরক্ষিত নয়, এবং এর বিরুদ্ধে লড়াইয়ে বড় অগ্রগতি হয়েছে। বিবৃতিতে বলা হয়, এর বিরুদ্ধে যেসব ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে, তার মধ্যে আছে অভিযোগ তদন্তের জন্য নারী তদন্ত কর্মকর্তা নিয়োগ, অসদাচরণ নিয়ে কর্মীরা যাতে অভিযোগ করতে পারেন, সেজন্য হটলাইন স্থাপন, এবং সিনিয়র কর্মকর্তাদের জন্য আরও ভালো প্রশিক্ষণ।
তবে বিবিসির নিউজনাইট অনুষ্ঠানকে পূর্ণা সেন বলেন, ডকুমেন্টারিতে যাদের বিবরণ পাওয়া গেছে, তাতে মনে হয় জাতিসংঘ তাদের 'জিরো টলারেন্সের' অঙ্গীকার রক্ষা করেনি এবং 'তাদের আরও অনেক বেশি কিছু করার আছে।'
"এটা দুর্নীতি, প্রতারণা, যৌন হয়রানি- যেটাই হোক, জাতিসংঘের কর্মীরা মনে করে তারা অভিযোগ পর্যন্ত করতে পারে না, তাদের অভিযোগ অনেক আগে-ভাগেই নাকচ করে দেয়া হয়। তাদের বিকল্প কোন প্রক্রিয়ার সুযোগ দেয়া হয় না, আপিলের সুযোগ দেয়া হয় না," বলছেন তিনি।
"জাতিসংঘ নিশ্চিতভাবেই তাদের আগের অনেক ব্যর্থতার ব্যাপারে পদক্ষেপ নিয়েছে, তবে সেটা যথেষ্ট হয়নি। আমি এমন অনেক বিষয় দেখেছি, যা আসলে অনেক বেশি পীড়াদায়ক- এগুলোর ব্যাপারে জরুরি ভিত্তিতে ব্যবস্থা নেয়া যায়, এবং নেয়া উচিৎ, শুধু কথায় নয়, কাজে।"
- আমিরাতে লটারিতে ৪৮ কোটি টাকা জিতলেন বাংলাদেশি আরিফ
- করোনার তাণ্ডবে প্রাণ গেল ২ লাখ ১১ হাজার মানুষের
- সারাবিশ্বে গত ২৪ ঘণ্টায় করোনায় মৃত্যু ১১ হাজার
- সোনিয়া গান্ধীর হাতেই থাকছে কংগ্রেসের নেতৃত্ব
- দক্ষিণ কোরিয়ার সাফল্যের রহস্য কী
- শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড় আম্ফানের তাণ্ডব শুরু আজ থেকেই
- মার্কিন-ইসরায়েলি ষড়যন্ত্র রুখতেই হামাসের সঙ্গে সমঝোতা: ফাতাহ
- যুক্তরাজ্যে ঈদ: মহামারি পরিস্থিতিতে বিশ্ববাসীর নিরাপত্তা চেয়ে দোয়া
- ভারতে ৩ কিলোমিটার দীর্ঘ পঙ্গপালের ঝাঁক, সতর্কতা জারি
- করোনার কারণে আত্মগোপনে কিম