জনগণকে সুন্দর জীবন দিতে ক্ষমতায় এসেছি : প্রধানমন্ত্রী
নিউজ ডেস্ক

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা
জনগণকে একটি সুন্দর জীবন দেওয়ার লক্ষ্য নিয়েই তিনি রাষ্ট্র ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হয়েছেন উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, তার লক্ষ্য ২০৪১ সাল নাগাদ জনগণের মাথাপিছু আয় ১২ হাজার মার্কিন ডলারে উন্নীত করা। তবে, দেশের এই অগ্রযাত্রায় তিনি যেকোনো ষড়যন্ত্র মোকাবিলাতেও সবাইকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানান।
গতকাল মঙ্গলবার (২৪ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে (বিআইসিসি) বাংলাদেশ অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনের (বিএএসএ) বার্ষিক সম্মেলন ২০২৩-এ প্রধান অতিথির ভাষণে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এসব কথা বলেন।তিনি বলেন, আমরা মাথাপিছু আয় দুই হাজার ৮২৪ মার্কিন ডলারে উন্নীত করতে পেরেছি। কিন্তু আমাদের এখানেই থেমে থাকলে চলবে না, ধাপে ধাপে এগিয়ে যেতে হবে। ২০৪১ সালের মধ্যে আমাদের মাথাপিছু আয় যেন ১২ হাজার মার্কিন ডলার হয় আমাদের সেই লক্ষ্য স্থির করতে হবে এবং সেভাবেই পরিকল্পনা নিয়ে এগোতে হবে।
তবে, এই করোনার কারণে অনেক দেশ পিছিয়ে গেছে, আমরাও একটা ধাক্কা খেয়েছিলাম। কিন্তু মানুষকে বুঝতে দেইনি, যোগ করেন প্রধানমন্ত্রী।
শেখ হাসিনা বলেন, এই দুর্যোগের মধ্যেও অর্থনীতির হিসেবে বাংলাদেশ এগিয়েছে, অনেক সংস্থাই এ কথাটা বলছে বাংলাদেশ এখন ৩৫তম বৃহৎ অর্থনীতির দেশ। এর মাঝেও আমরা প্রায় ৫ ধাপ এগিয়েছি। এটাও কিন্তু কম কথা নয়। কিন্তু এ কথাটাও মনে রাখবেন যে যত বেশি সামনের দিকে দ্রুত এগোবেন তত বেশি চক্রান্ত, ষড়যন্ত্র থাকতে পারে। কারণ অনেকেইতো আছে- যারা আমাদের স্বাধীনতা আসুক সেটাই চায়নি।
তিনি বলেন, কাজেই আমাদের অগ্রযাত্রাটা অনেকের পছন্দ হবে না, যারা স্বাধীনতার সময় আমাদের সমর্থন দেয়নি। কারণ তারা মনে করতে পারে তাদের সঙ্গে টেক্কা দিয়ে আমরা এগিয়ে যাচ্ছি, কিন্তু আমরা তা পারি। নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মাসেতু নির্মাণ করে বাংলাদেশের মানুষ যে পারে সেটা আমরা প্রমাণ করেছি।
এই করোনাকালে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে মাঠ প্রশাসনের দায়িত্ব পালনে এবং উদ্ভূত চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করেও উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা অর্জনের জন্য কর্মকর্তাদের কৃতিত্ব দেন প্রধানমন্ত্রী।
প্রশাসনের নবীন বিসিএস কর্মকর্তাদের ২০৪১ সালের সৈনিক হিসেবে আখ্যায়িত করে তিনি বলেন, ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে একটি উন্নত, সমৃদ্ধশালী ও স্মার্ট বাংলাদেশে রূপান্তরিত করা এবং জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের পরিকল্পনা অনুযায়ী জনগণকে উন্নত জীবন দেওয়ার দায়িত্ব তাদের রয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে তিনি সরকারি কর্মকর্তাদের পেশাগত দায়িত্ব পালনে আন্তরিকতা দেখেছেন। ৪র্থ শিল্প বিপ্লব মোকাবিলায় উচ্চ প্রযুক্তিগত জ্ঞানসম্পন্ন দক্ষ কর্মী বাহিনী গড়ে তোলার ওপরও গুরুত্বারোপ করেন প্রধানমন্ত্রী।
‘৪১ সালের স্মার্ট বাংলাদেশ কেমন হবে- সে সম্পর্কে শেখ হাসিনা বলেন, আমরা ডিজিটাল বাংলাদেশ করেছি; এবার ঘোষণা দিয়েছি ২০৪১-এর বাংলাদেশ উন্নত-সমৃদ্ধ স্মার্ট বাংলাদেশ হবে। স্মার্ট বাংলাদেশে তথ্যপ্রযুক্তি জ্ঞান সম্পন্ন স্মার্ট জনগোষ্ঠী, স্মার্ট ইকোনমি, স্মার্ট গভর্নেন্স অর্থাৎ ই-গভর্নেন্স সেই সাথে সাথে জনগণও যেন স্মার্ট হয়।
দেশের কেউ পিছিয়ে থাকবে না জানিয়ে সরকার প্রধান বলেন, কোনো ক্ষেত্রেই কেউ পেছনে পড়ে থাকবে না। যারা আছে পিছে আমরা আছি তাদের সঙ্গে। আমরা তাদের সাথে আছি, তাদের সামনে নিয়ে আসতে হবে। তাদের জীবন সুন্দর করতে হবে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, সরকার গঠন করার সময় বলেছি- আমি জনগণের সেবক, যেটা আমার বাবাও বলেছেন। তারই কণ্ঠে কণ্ঠ মিলিয়ে আমিও তাই বলেছি এখানে ক্ষমতা উপভোগ করতে আসিনি, এসেছি দিতে, মানুষের জন্য কিছু করতে। আমরা মাত্র ৫ বছরের জন্য নির্বাচিত হয়ে আসি, সময় কম তাই কাজ বেশি করতে হবে।
তিনি বলেন, কাজেই আমি যে কাজের দায়িত্বটা নেবো সেটা করার দায়িত্ব এই মাঠ প্রশাসনের সবারই। ৯৬ থেকে ২০০১ বা ২০০৯ থেকে এখন পর্যন্ত যারা আমার সঙ্গে কাজ করেছেন তারা ওই আমলাতান্ত্রিক ভাব নিয়ে না থেকে জনগণের জন্য কাজ করে তাদের (জনগণ) সঙ্গে মিশে যেতে পেরেছেন, যেটা আমাদের আকাঙ্ক্ষা। এজন্য সবাইকে ধন্যবাদ জানান তিনি।
নানা প্রাকৃতিক দুর্যোগ, মনুষ্য সৃষ্ট দুর্যোগ, অগ্নি সন্ত্রাস, মাসের পর মাস অবরোধ, হরতালসহ এতকিছু মোকাবিলা করে আমরা যে বাংলাদেশকে উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদায় আনতে পেরেছি এটার জন্য সবটুকু কৃতিত্ব আপনাদেরই, যারা মাঠ প্রশাসনে কর্মরত ছিলেন, বলেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রী তার ভাষণে ১৯৬৯-এর ২৪ জানুয়ারি গণ-অভ্যুত্থান দিবসের প্রেক্ষাপট উল্লেখ করে শহীদ মতিউরকে স্মরণ করেন। ৮৮ সালের এই দিনে চট্টগ্রামের লালদীঘি ময়দানে সমাবেশ করতে গেলে তাকে লক্ষ্য করে ছোঁড়া গুলিতে ৩০ নেতা-কর্মী নিহত হওয়ার কথাও ভাষণে শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করেন প্রধানমন্ত্রী।
জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী মো. ফরহাদ হোসেন, মন্ত্রিপরিষদ সচিব মো. মাহবুব হোসেন ও প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব মো. তোফাজ্জল হোসেন মিয়া অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন।
স্বাগত বক্তব্য দেন বাংলাদেশ অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ও নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. মোস্তফা কামাল এবং ধন্যবাদ জানান সংগঠনের মহাসচিব ও শিল্প মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব এসএম আলম।
- পদ্মা সেতুতে স্বয়ংক্রিয়ভাবে টোল আদায় হবে মাত্র তিন সেকেন্ডে
- পদ্মা সেতুর তেলেসমাতি: শরীয়তপুরের জমি এখন স্বর্ণ
- স্বপ্ন পূরণের দ্বারপ্রান্তে বঙ্গবন্ধু টানেল
- কালনা সেতু: দেশের প্রথম ৬ লেনের সেতু
- পদ্মাসেতুর কারণে কমছে দুরত্ব, ভোগান্তি ও ভাড়া
- মাত্র ৭ থেকে ৮ মিনিটেই পদ্মার এপার ওপার
- পদ্মাসেতুর টোলসহ ১৩ রুটের বাস ভাড়া নির্ধারণ করেছে বিআরটিএ
- দেশি রড, বালু ও সিমেন্টে নির্মাণ হয়েছে পদ্মা সেতু
- ১৫ জুনের মধ্যেই পুরো প্রস্তুত হবে পদ্মা সেতু
- টানেলের নিরাপত্তায় পদ্মা সেতুর মতো দুই প্রান্তে হচ্ছে দুটি নতুন থানা